অনেক ক্ষেত্রে নারীও নারীর অগ্রযাত্রায় বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় : নিপুন রায় চৌধুরী
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
শনিবার, মার্চ ৯, ২০২৪ ৫:২৩ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
শনিবার, মার্চ ৯, ২০২৪ ৫:২৫ অপরাহ্ণ

জনতার আওয়াজ ডেস্ক
নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কেবল পুরুষই যে নারীর প্রতিবন্ধক বিষয়টি এমন নয়। অনেক ক্ষেত্রে নারীও নারীর অগ্রযাত্রায় বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। মূলত নারীকে সহযোদ্ধা মনে করে পাশে না থাকলে জয়ী হওয়া খুব কঠিন। তাই সংসার, সমাজ কিংবা রাষ্ট্রে নারীকে প্রতিপক্ষ না ভেবে তাকে সহযোদ্ধা বানিয়ে তাকে নিয়েই পথ চলার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।
নারী দিবসে বাংলা আউটলুককে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে কথাগুলো বলছিলেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরী।
তিনি বলেন, বহু বছর যাবত নারী ও পুরুষের সম অধিকার নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নারীরা সংগ্রাম করছে। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতেও নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চলমান। নারীরা যুদ্ধ করছে, সংগ্রাম করছে। আন্দোলনের একটি পটভূমি হিসেবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়। এই দিবসটি নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার একটি সোচ্চার আওয়াজ তোলা হয়। কিন্তু এখনো আমরা দেখি নারীরা অমানবিক জীবন যাপন করছে। তাদের স্বাধীনতা, সমমর্াদা কিংবা সম অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি।
নারীরা যখন বিভিন্ন সেক্টরে এগিয়ে যাচ্ছে তখনো তাকে ভিন্ন চোখে দেখা হয়। কোনো নারী যখন তার অবস্থান তৈরি করছে। তখনো কিন্তু দেখা যায় তার অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেওয়ার জন্য পুরুষ কিংবা নারীরাই প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়।
বাংলাদেশের সাবেক তিন বারের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, স্পিকারও নারী। সেই সাথে বাংলাদেশের অনেক নারী উদ্যোক্তা গড়ে উঠেছে। যাদের সবার পেছনের গল্পগুলো অনেক করুন। তাদের এই পর্ন্ত আসতে অনেক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে আসতে হয়েছে। সেখানে সহযোগিতার থেকে অসহযোগিতাই বেশি।
আমি একজন নারী রাজনীতিক হিসেবে কাজ করছি। আমাকে দমিয়ে দিতেও কিন্তু অনেক ধরণের প্রতিবন্ধকতা-অসহযোতগিতা কাজ করছে। মূলত পৃথিবীর সব দেশেই এমনটা হয়। নারীদেরকে যদি আপনি সহযোদ্ধা মনে না করেন তাহলে সেই যুদ্ধে জয়ী হওয়া কঠিন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্র গঠনে নারীদের ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, শিক্ষা-স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে রাজনীতি সবখানেই নারীদের বিরল ভূমিকা রয়েছে। একটা জীবন যেমন যুদ্ধময় সেই যুদ্ধে আপনার স্ত্রীকে সহযোদ্ধা হিসেবে পাশে রাখতে হবে। তাকে সিদ্ধান্ত গ্রহনের সুযোগ দিতে হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নারীর অংশগ্রহন বাড়ানো প্রয়োজন উল্লেখ করে নিপুন রায় চৌধুরি বলেন, নারীদের অবদানকে অস্বীকার করে নয় তাদের কাজের স্বীকৃতি দিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। প্রত্যেক রাজনৈতিক ও পেশাজীবী দলেই নারীকে মর্যাদার সঙ্গে অংশগ্রহণ ও ভূমিকা পালনের সুযোগ দিতে হবে। নারীকে কখনো বাঁকা চোখে দেখা যাবে না। প্রত্যেকটি নারীই একেক জন মা। নারীকে অসম্মানের অর্থই হলো পক্ষান্তরে তার মাকে অসম্মান করা। তাই সমাজকে বদলাতে হলে দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে বলে মনে করেন এ রাজনীতিক।
নারীর প্রতিবন্ধকতা যে কেবল পুরুষ শাসিত সমাজ ব্যবস্থায় পুরুষের দ্বারাই হয় সেটা নয় একজন নারীও নারীর প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এ কারণে নারীর পাশে নারীকেই আগে দাঁড়াতে হবে। একে অন্যের কাজের প্রশংসা করতে হবে। আমরা নিজেরাই যদি নিজেদের সম্মান করি, কর্মের প্রশংসা করি তাহলেই অন্যের প্রশংসা ও সম্মান পাব। এক্ষেত্রে পরিবারেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সরকার নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় যথাযথ কাজ করছে না উল্লেখ করে বিএনপি নেত্রী বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও জবাবদিহিতা না থাকার কারনে সরকার নারী অধিকারকেও মেনে নিতে পারছে না।
নারী দিবসে রাজধানীতে মহিলা দলের শোভাযাত্রাকেও ভয় পায় এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, জানি না সরকার কেন এই শোভাযাত্রাকেও ভয় পায়। আজকে যদি দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন থাকতো তাহলে এমনটি হতো না। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে ক্ষমতায় বসে সরকার এমন আচরণ করছে। তারা সামান্য নারী দিবসের একটি শোভাযাত্রাকেও ভয় পায়। এই বাঁধা কিন্ত নারীদের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেওয়ারই নামান্তর। এ বিষয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো ছাড়া আর আমার কিছু বলার নাই। সূত্রঃ বাংলা আউটলুক
জনতার আওয়াজ/আ আ
