অপরিপক্ব আম-লিচুতে সয়লাব বাজার
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
বুধবার, মে ১৫, ২০২৪ ১২:৩৪ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
বুধবার, মে ১৫, ২০২৪ ১২:৩৫ অপরাহ্ণ

জনতার আওয়াজ ডেস্ক
আজ থেকেই শুরু মধুমাস জ্যৈষ্ঠ। নানান ফলের সমাহার নিয়ে এসেছে এই জ্যৈষ্ঠ মাস। হরেক রসালো ফলের মৌ মৌ ঘ্রাণে এখন প্রকৃতি উতলা। বিশেষ করে আম-লিচুর মতো সুস্বাদু ফলে ভরে ওঠেছে বাজার।
তবে এই রসালো ফলের মৌসুম এখনও পুরোপুরি শুরু হয়নি। সপ্তাহখানেক পরে বাজারে আসবে পরিপক্ব আম-লিচু। তবে এরই মধ্যে রাজধানীর বাজারগুলো ছেয়ে গেছে টক-মিষ্টি স্বাদের অপরিপক্ব আম-লিচুতে।
মঙ্গলবার (১৪ মে) রাজধানীর কারওয়ান, ফার্মগেট পুরাতন পল্টন ও মতিঝিলসহ আরও কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মৌসুমের শুরুতেই দখল করে নিয়েছে আম-লিচুর মতো সুস্বাদু ফলমূল। এতে দোকানে ভরে গেছে আম ও লিচুর মতো বিছিন্ন জাতের ফলে। ফলে, বিশেষ করে আমের মধ্যে দোকানিদের দোকানে অবস্থান পেয়েছে হিমসাগর, গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ, বারিফল, থাইল্যান্ডের জাম্বু আম এবং কাঠিমনসহ কয়েক প্রজাতির আম। পাশাপাশি উচ্চদামে বিক্রি হচ্ছে থাইল্যান্ডের জাম্বু আম ও কয়েক প্রজাতির লিচুও। তবে দেশীয় জাতের আমের দাম চড়া। প্রতিকেজি দেশীয় প্রজাতির আম ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে দেখা যাচ্ছে।
অন্যদিকে, বাজারে বেশ কয়েকটি দোকানে সবুজাভ ও হালকা লাল রঙের লিচু পাওয়া যাচ্ছে। তবে পুরোপুরি মৌসুমে পাওয়া লিচুর তুলনায় এগুলোর আকার কিছুটা ছোট। মান ও আকারভেদে প্রতি ১০০ লিচু ৫০০ থেকে ১হাজার টাকারও বেশি দরে ক্রেতারা কিনছে।
বিক্রেতাদের দাবি, এসব লিচু নাটোর, রাজশাহী, যশোর, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের মতো এলাকা থেকে আসে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে বাজারে পাওয়া বেশিরভাগ লিচুই আসছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও-গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে। এছাড়া মাদ্রাজি জাতের এসব লিচুর বেশিরভাগই এখনও পরিপক্ব হয়নি। এই কথা বিক্রেতারাও স্বীকার করেছেন। যে কারণে এসব লিচুর স্বাদও টক-মিষ্টি।
ক্রেতারা বলছেন, দাম কমলে মানুষ বেশি করে ফল কিনবে। দাম কমার ফলে সবার খাওয়ার চাহিদাও বাড়বে। অন্যসব বছরের তুলনায় লিচুর দাম অনেক বেশি। আমের দামও অনেক বেশি। বিক্রেতারা বলছেন- প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফলন কমেছে রসালো ফল আম ও লিচুর। ফলে সঙ্গত কারণে একদিকে যেমন বাজারে আম এবং লিচুর সংকট তৈরি হবে তেমনি বিক্রিও হবে চড়া দামে। তবে মৌসুম পুরোপুরি শুরু হওয়ার পর দাম অপেক্ষাকৃত কমবে বলেও দাবি বিক্রেতাদের।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ৬ থেকে ৭ প্রজাতির আম পাওয়া যাচ্ছে। আম জাতের মধ্যে হিমসাগর প্রতিকেজি ২০০ টাকা, বারিফল প্রতিকেজি ৩০০ টাকা, কাঠিমন প্রতিকেজি ২০০ টাকা, গোপালভোগ প্রতিকেজি ২০০ টাকা, গোবিন্দভোগ প্রতিকেজি ১৮০ টাকা, সাতক্ষীরার গোপালভোগ প্রতিকেজি ৩৫০ টাকা, থাইল্যান্ডের জাম্বু আম (সবুজ প্রজাতি) প্রতিকেজি ১ হাজার টাকা এবং থাইল্যান্ডের জাম্বু আম (লাল প্রজাতি) ১২শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বাজারে প্রতি একশ পিস বোম্বাই লিচু ৫০০ টাকা, প্রতি একশ পিস কদমি লিচু ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, চায়না লিচু প্রতি একশ পিস ১৪শ টাকা, বেলোয়ারি লিচু প্রতি একশ পিস ৮০০ টাকা এবং হাওয়াই মিঠাই প্রজাতির একশ পিস লিচু ১৬শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এক ব্যবসায়ী বলেন, এবছর লিচুর দাম বেশি। পাইকারি বাজারে অতিরিক্ত দামে লিচু কিনতে হচ্ছে বলেই বেশি দামে বিক্রি করা লাগছে। সাধারণ ৩০০ টাকায় একশ পিস লিচু বিক্রি যৌক্তিক থাকলেও তা দাম বেড়ে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা বিক্রি করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে বিক্রেতাদেরও।
ফল কিনতে আসা একব্যক্তি বলেন, বাজারে ফলের দাম প্রচুর। বিদেশি ফলের চেয়ে দেশি ফলের দাম আরও বেশি। আঙুর বা আপেল ৩শ টাকায় পাওয়া গেলেও লিচু বা আম এ দামে মিলছে না। ১০০ পিস লিচু কিনতে গেলে পকেটের ১ হাজার টাকা নেই। এভাবে তো আর খেয়ে পারা যায় না। দেশের অবস্থা এমন যে আমরা দেশীয় ফলও কিনে খাবার সামর্থ্য হারাচ্ছি।
জনতার আওয়াজ/আ আ
