অবশেষে কাদেরকে নিয়ে মুখ খুললেন সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরী
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
বৃহস্পতিবার, মার্চ ১০, ২০২২ ৯:০৭ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
বৃহস্পতিবার, মার্চ ১০, ২০২২ ৯:০৭ পূর্বাহ্ণ
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
দীর্ঘদিন পর মুখ খুললেন নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী। বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার ইস্যুতে ঝেরে কাশলেন তিনি। এসময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বললেন, ‘কাদের সাহেব (সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী) আপনি আওয়ামী লীগের ক্ষতি করছেন। আমি ঘৃণা জানাই, আপনি বিচার করতে জানেন না। আপনার ভাইকে একদিনের জন্য আমার হাতে দিন…।
বৃহস্পতিবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে নিজ আসনের রাজনৈতিক নানা বিষয়ে কথা বলেন সাংসদ একরামুল হক।
তিনি কাদের মির্জাকে থামানোর জন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের প্রতি আহ্বান জানান।
নানান ইস্যুতে সাংসদ একরামুল ও কাদের মির্জার মধ্যে বিরোধ রয়েছে।
সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতাল থেকে লাইভে এসে সাংসদ একরাম অভিযোগ জানান, কাদের মির্জাকে না থামালে আওয়ামী লীগের ক্ষতি হবে।
কাদের মির্জাকে না থামিয়ে ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের ক্ষতি করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
১৮ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের ওই লাইভে সাংসদ একরাম ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ করে আরও বলেন, তিনি তার ভাই কাদের মির্জাকে আমার বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য লেলিয়ে দিয়েছেন। কাদের মির্জাকে প্রশ্ন করে একরাম বলেন, আপনি যে আজ সাধু সাজেন আপনি আমার কাছ থেকে কত কোটি টাকা নিয়েছেন? কোম্পানিগন্জের মানুষ সারাজীবন আপনাকে ঘৃণা করবেন।
লাইভের শুরুতে লাইভে আসার কারণ জানান সাংসদ একরাম। তিনি বলেন, ‘প্রিয় নোয়াখালীবাসী আমাকে চিনতে পেরেছেন কি না জানি না। আমার নাম একরাম চৌধুরী। তিনবারের এমপি। সদর- সুবর্ণচরের আপনাদের আদরের চৌধুরী। আমার হার্টে ৫ বার রিং বসিয়েছি। অনেক চেষ্টা করেছি আপনাদেরকে ভালোবাসা দিতে। এর মধ্যে কিছু ঘটনা আমাকে ব্যথিত করেছে। আমার ছোটকালের বন্ধু নোয়াখালী শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর ওয়াদুদ পিন্টুকে টেলিফোনে অনেক আজেবাজে কথা বলেছি।’
এ কারণে আমার স্ত্রী আমাকে ভয়েস এসএমএস পাঠিয়ে বলেছেন, ‘তোমার চেহারা দেখার চেয়ে তোমার মৃত্যুর চেহারাটা দেখাই ভালো। এতে আমি খুবই ব্যথিত হয়েছি। আজ লাইভে আসার কারণ হলো নোয়াখালী বিএনপির ঘাঁটি ছিল। দীর্ঘ ২০ বছর পরিশ্রম করে এটাকে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বানিয়েছি।’
তিনি জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমকে ‘জালিমের চেয়েও খারাপ’ বলে আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘তিনি বিগত ২০ বছর ধরে চরবাটায় দুঃশাসন করেছেন।’
নোয়াখালীবাসীর উদ্দেশে একরাম বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সেলিম থেকে আপনারা সাবধান। বিগত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দলের নেতাদের কাছে মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন। বিভিন্ন খাত থেকে পারাসেন্টেজ নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন পারসেন্টেজ নিয়েছি এগুলোতে আপনারই আমাকে এনে দিয়েছেন এবং চাকরির জন্য তদবির করেছেন। আমি আমার ব্যবসায়িক টাকা দিয়ে রাজনীতি করি।’
তিনি বলেন, ‘আমি অনেক কষ্ট করে জেলা আওয়ামী লীগের অফিস করেছি। আজকে আওয়ামী লীগের অফিস থেকে আমার ছবি ফেলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমি ইচ্ছে করলেই আপনাদেরকে আওয়ামী লীগ অফিসে ঢুকতে নাও দিতে পারতাম। কিন্তু আমি সেটা করিনি। ছবি ফেলে দিয়ে কী হবে? মানুষের হৃদয় থেকে তো মুছতে পারবেন না।’
এদিকে সাংসদ একরামের এ লাইভের ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শিহাব উদ্দিন শাহীন বলেন, ‘একরাম চৌধুরী বর্তমানে সিঙ্গাপুর অবস্থান করছেন। বাংলাদেশের সময় সকাল ৮টায় সিঙ্গাপুরের কোনো এক হাসপাতালে এনজিওগ্রাম করাতে গিয়ে লাইভে এসে দলের সাধারণ সম্পাদক, জেলা আহ্বায়কসহ সবার বিরুদ্ধেই কথা বলেছেন। তার মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে মনে হয়। তার কথাবার্তা অসংলগ্ন। তাই এ নিয়ে কোনো কথা বলতে চাই না।