অবৈধ সরকারের দুর্বল চিত্রনাট্যে লেখা গল্পের সাজানো রায় প্রত্যাখান করেছে জনগণ – জনতার আওয়াজ
  • আজ রাত ৩:১৪, শুক্রবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • jonotarawaz24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

অবৈধ সরকারের দুর্বল চিত্রনাট্যে লেখা গল্পের সাজানো রায় প্রত্যাখান করেছে জনগণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ: বুধবার, আগস্ট ২, ২০২৩ ৭:২৩ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: বুধবার, আগস্ট ২, ২০২৩ ৭:২৩ অপরাহ্ণ

 

নিউজ ডেস্ক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান ও তাঁর সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে তথাকথিত দুর্নীতি মামলার ফরমায়েশি রকেট গতির বিচার আর সাজানো রায়ের মাধ্যমে তাঁদেরকে অপরাধী প্রমাণের আওয়ামী চেষ্টা সফল হবে না। বরং এই রায়ের মধ্য দিয়ে লজ্জাহীন অবৈধ সরকার জনমানুষের কাছে আরও বাড়তি অশ্রাব্য গালিগালাজের শিকার হলো। বলা যায়, এই বিবস্ত্র সরকার অনেক আগেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে তথাকথিত পাতানো টেলিফোন সংলাপের দিনেই লজ্জা নিবারণের শেষ বস্তু খণ্ডটুকুও বিসর্জন দিয়েছে। ফলে তাদের নিজেদের বস্ত্রহরণের মতো আর কোনো উপাদান এখন জনগণের সামনে অবশিষ্ট রইলো না।
বাংলাদেশ সরকারের সাবেক নৌবাহিনী প্রধানের কন্যাই নয় দেশের ঐতিহ্যবাহী তালিকার বংশ লতিকায় অসামান্য উজ্জ্বলতায় ভাস্কর যে কয়টি পরিবারের নাম প্রশ্নহীনভাবে উচ্চারিত হতে পারে ডা. জুবাইদা রহমানের পরিবার তার শীর্ষে। তিনি নিজেও দেশের সর্বোচ্চ মেডিকেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেধাবী স্নাতক। পারিবারিক সূত্রে মাত্র পয়ত্রিশ লক্ষ টাকার স্থায়ী আমানতের জন্য তাকে অন্যের দারস্থ হতে হবে অথবা দুর্নীতির আশ্রয় নিতে হবে এমন দুর্বল চিত্রনাট্যে যারা গল্প সাজান, তাদের এই ফ্লপ চলচ্চিত্র প্রথম দৃশ্যায়নের সময়ই যে জনতার পাদুকা বৃষ্টির সম্মুখীন হয়েছে; সেটা উপলব্ধির জন্য আইনস্টাইন হবার প্রয়োজন নেই। এক এগারো সরকারের সময়কালে এই অবধৈ সরকারের পূর্বসূরিরা ডা. জুবাইদা রহমানের পৈতৃক বাড়ীটিও জনাব তারেক রহমানের অর্থে নির্মিত বলে আরেকটি দুর্নীতির মামলা সাজাবার ধনুর্ভঙ্গ পণ করেছিল! সেই দৈন্য রুচির মানহীন গুরুগৃহের দীক্ষায় দীক্ষিত নাট্যকাররা এর চাইতে ভালো কিছু উপহার দিতে পারেনি! এই অসম্ভবের প্রত্যাশীদের এই অখাদ্যেই উদরপূর্তি করতে হবে।
স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আমৃত্যু যুদ্ধ করা এক সৈনিকের গল্প দিয়ে শুরু করি। বেনিগনো সিমিয়ন এ্যাকুইনো যাকে ফিলিপিনোরা নিনোয় এ্যাকুনো বলে জানে। তার পিতামহ সারভিলিনো এ্যাকুইনো ছিলেন ফিলিপাইনসের প্রথম স্বীকৃত প্রেসিডেন্ট, পিতা বেনিগনো এ্যাকুইনো সিনিয়র ছিলেন সিনেটর ও পার্লামেন্টে মেজরিটি দলের নেতা। পিতার মতো নিনোয় এ্যাকুইনোও ছিলেন সিনেটর ও ১৯৭৩ এর প্রসিডেন্ট নির্বাচনের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় প্রার্থী। কিন্তু ১৯৭২ সালে ফার্ডিনান্ড মার্কোস দেশের ক্ষমতা দখল করে ও সাজানো মিথ্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড দিয়ে তাকে ম্যাগসেসে কারাগারে অন্তরীণ করে। অন্তরীণ নিনোয় কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত হন, ম্যানিলার চিকিৎসকরা তাঁর বাইপাস অপারেশনে ইতস্তত করছিলেন। ফলে জনতার বিক্ষোভের মুখে মার্কোস তাকে চিকিৎসার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাতে বাধ্য হয়। নিনোয় যুক্তরাষ্ট্র থকেই তার দল UNIDO-United Nationalist Democratic Organisation-কে সংগঠিত ও পরিচালিত করেন। প্রবাসে থেকেই তিনি স্বৈরাচারী মার্কোসের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন। দেশের ক্রমাবনতিশীল পরিস্থিতিতে ১৯৮৩ সালের আগস্টে দেশে আসার সিদ্ধান্ত নেন; কিন্তু পতিত মার্কোসের শেষ বেলায় পরিকল্পনায় ম্যানিলা বিমান বন্দরে অবতরণের সাথে সাথেই নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এই ঘটনা দাবানলের মত পুরো ফিলিপাইনসকে অগ্নিগর্ভে পরিণত করে। মার্কোস উপয়ান্তর না দেখে স্ত্রী কুখ্যাত ইমেদলাকে সাথে নিয়ে কোনো রকমে দেশ ছেড়ে পালিয়ে প্রাণ বাঁচায়। জনতা প্রেসিডেন্ট প্রসাদে ঢুকে মার্কোস পরিবারের অকল্পনীয় বিত্তবৈভবের হিসাব পৃথিবীর সামনে তুলে ধরে। দূর্ভাগা মার্কোস মৃত্যুর পর নিজ মাতৃভূমিতে কবরস্থ হবারও সুযোগ পায়নি।
১৯৮৫ সালে নিনোয় এ্যাকুইনোর স্ত্রী কোরাজন এক্যুইনো ফিলিপিন্সের প্রসিডেন্ট নির্বাচিত হন। যুগে যুগে এভাবেই স্বৈরাচারের জীবন নাটকের শেষ দৃশ্য মঞ্চায়িত হয়েছে। আমাদের ইতিহাসেও আইয়ুব-এরশাদ এমন পরিণতির মধ্যেই ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। কিন্তু আফসোস এই পুনরাবৃত্তির ইতিহাস থেকেও স্বৈরাচারীরা শিক্ষা নেয় না! আর তাই ওসমানী মিলনায়তনে দালালীর পুরষ্কার হাতে স্বৈরাচারের সহযোগীদের মন মরা মলিন ভীত সন্ত্রস্ত মুখে অনাগত পতনের সুস্পষ্ট লেখার দিকে তাকাতেও ভয় পায় স্বৈরাচার। এরা চোরাবালিতে আকুন্ঠ ডুবে গেলেও অবশ্যম্ভাবী অন্তিম পরিণতি দেখতে পারে না। এরা ধ্বংসের রক্তবীজ, এরা যাবার আগেও হায়েনার অট্টহাসিতে চারিদিক ছারখার করে যায়। তারপরেও শেষ কথা, বিজয় জনতার, বিজয় সত্যের- ধ্বংসস্তুপেই তারা সম্ভাবনার বীজ বপন করে, নেতার স্বপ্ন রোপিত হয় তারুণ্যের উর্বর হৃদয়ে- রচিত হয় নতুন ইতিহাস বিজয়ের।
আরেক তারেকের ঘটনা দিয়ে শেষ করি। অষ্টম শতকে তারেক বিন জিয়াদ মাত্র সাত হাজার সৈন্য নিয়ে জিব্রালটার প্রণালী অতিক্রম করে স্পেনের দক্ষিণ উপকূলে পৌঁছেছিলেন স্পেনের স্বৈরাচারী রাজা রডেরিককে পরাস্ত করতে। সাথে অতি ক্ষুদ্র সৈন্যদল, পেছনে পাথরে আছড়ে পরা ভূমধ্যসাগরের বিশাল ঢেউ আর সামনে আকাশ ছোঁয়া দেয়াল হয়ে রক অব জিব্রালটার। এরই মাঝে তারেক আফ্রিকার উত্তর উপকূল থেকে তাদের বহন করা জাহাজগুলো একটা একটা করে ধ্বংস করে ডুবিয়ে দিলেন ভূমধ্যসাগরে। সৈনিকদের বিস্মিত জিজ্ঞাসা, “আমরা ফিরবো কিভাবে?” তারেকের নিষ্কম্প প্রত্যয়ী উত্তর, “আমরা ফিরছি না।”
আজ আরেকবার ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে, আমাদের সামনে স্বৈরাচারের খাড়া দেয়াল- স্বৈর বাহিনীর মারণাস্ত্র- নাগিনীর বিষাক্ত নিঃশ্বাস- বর্বরের মৃত্যুবান আর পেছনে বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলরাশি। আজ ষোলশ বছর পর আরেক তারেক, দেশনায়ক তারেক রহমান, আমাদের সামনে সেনাপতি। আমরাও বঙোপসাগরে আমাদের ফেরার শেষ জাহাজটিও ডুবিয়ে এসেছি। গণতন্ত্রকে মুক্ত না করে আমরাও ফিরছি না।

Print Friendly, PDF & Email
 
 
জনতার আওয়াজ/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ