আমদানির ঘোষণাতেই পেঁয়াজের দরপতন
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
রবিবার, মে ২১, ২০২৩ ১০:১৬ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
রবিবার, মে ২১, ২০২৩ ১০:১৬ পূর্বাহ্ণ

বাণিজ্যমন্ত্রী আমদানির ঘোষণা দেয়ায় পেঁয়াজের দরপতন শুরু হয়েছে। একদিনের ব্যবধানে উত্তরের জেলা পাবনায় প্রতি মণ পেঁয়াজের দাম কমেছে ৫০০ টাকা। গত শুক্রবার (১৯ মে) প্রতি মণ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে দুই হাজার ৯০০ টাকা দরে। পরদিন শনিবার (২০ মে) সেই পেঁয়াজ প্রতি মণ বিক্রি হয় দুই হাজার ৪০০ টাকা দরে।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহ ধরে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। দাম বেশি হওয়ায় অতি মুনাফার স্বপ্ন দেখছিলেন চাষিরা। কিন্তু তাদের সেই আশায় জল ঢেলেছে বাণিজ্যমন্ত্রীর পেঁয়াজ আমদানির ঘোষণা।
শনিবার (২০ মে) পাবনার বনগ্রাম হাটে চাষি ও পাইকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাটে প্রচুর পেঁয়াজ। তবে বাজারে সরবরাহের তুলনায় চাহিদা কম। ব্যাপারিরা বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। শুক্রবার পাবনার চিনাখড়া হাটে যে পেঁয়াজ ২ হাজার ৭০০ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে; সেই মানের পেঁয়াজ শনিবার বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ২০০ টাকায়। হাটে আসা অনেক চাষি বলছেন, এক রাতের ব্যবধানে দাম ৫০০ টাকা কমবে, তারা ভাবতে পারেননি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছর মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ভালো পেঁয়াজের দাম ছিল ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা মণ। দ্বিতীয় সপ্তাহে এসে দাম কমে হয় ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।
চাষিদের দেয়া তথ্য মতে, গত বছর মণপ্রতি তাদের খরচ ছিল এক হাজার টাকার বেশি। তার ওপর পেঁয়াজ ঘরে রাখলে ওজনে কমে যায়, পচে যায়। তাই তারা গত বছর লাভবান হতে পারেননি।
তারা বলছেন, এবছর দাম বেশি হলেও ফলন হয়েছে গত বছরের কম। সে হিসাবে তাদের উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। মৌসুমের কিছুদিন পর এসে দাম বাড়ায় তারা অধিক লাভের আশা করছিলেন। কিন্তু বাণিজ্যমন্ত্রীর আমদানির ঘোষণা তাদের আশা ভেস্তে গেছে।
সাঁথিয়া উপজেলার বামনডাঙ্গা গ্রামের চাষি সাগর হোসেন বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুশি শুক্রবার সকালে সাংবাদিকদের বলেন, পেঁয়াজের দাম দু-একদিনের মধ্যে না কমলে আমদানি করা হবে। তার এক ঘোষণাতেই পেঁয়াজের দামের বারোটা বেজে গেছে। চাষিরা দু-একটি ফসলে লাভবান না হলে টিকে থাকবে কীভাবে, মন্ত্রী তা ভাবেননি বলেও অভিযোগ করেন ওই কৃষক।
পাবনা সদর উপজেলার শুকচর গ্রামের শুকুর আলী বলেন, শুক্রবার পেঁয়াজের মণ ছিল ২ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৯০০ টাকা মণ। একদিনের মধ্যে পেঁয়াজের দাম কমে হয়েছে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা। বাজার কমে যাওয়ায় পেঁয়াজ ফেরত নিয়ে যাচ্ছি। এই দামে বেচলে আমাদের পোষাবে না। তিনি আরও বলেন, সরকার যদি পেঁয়াজ আমদানি করে তাহলে আমাদের বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়াই ভালো।
জনতার আওয়াজ/আ আ
