আমরা নিজস্ব শক্তি দিয়ে লড়াই করে যাচ্ছি : হাবিব-উন-নবী খান সোহেল – জনতার আওয়াজ
  • আজ ভোর ৫:১৮, শুক্রবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • jonotarawaz24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

আমরা নিজস্ব শক্তি দিয়ে লড়াই করে যাচ্ছি : হাবিব-উন-নবী খান সোহেল

নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ: রবিবার, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩ ১২:২৯ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: রবিবার, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩ ১২:২৯ পূর্বাহ্ণ

 

নিউজ ডেস্ক

বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন বিদেশিরা করে দেবেন না, দেশের জনগণই করবেন। এজন্য আমরা নিজস্ব শক্তি দিয়ে লড়াই করে যাচ্ছি। বিদেশিরা আমাদের আন্দোলনকে সমর্থন দিচ্ছেন। আমরা চাই, আগামীতেও তারা যেন বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের পক্ষে থাকেন। সম্প্রতি মানবজমিনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক এ সভাপতি সরকার পতনে দলটির একদফা আন্দোলন, সরকারবিরোধী বৃহত্তর ঐক্য এবং বিদেশিদের মধ্যস্থতায় নির্বাচনসহ নানা বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন।

হাবিব-উন-নবী খান সোহেল বলেন, এখন যে সরকার আছে, এটাকে সরকার বলা যায় না। এ দেশের জনগণ এ থেকে মুক্তি চায়। এই মুক্তির পক্ষে যদি কেউ সহযোগিতা করতে চায় তাতে কোনো সমস্যা নেই। নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে যদি কেউ ভূমিকা রাখতে চায় আমরা তাতে স্বাগত জানাতে পারি। তবে আমরা বিশ্বাস করি যে, আমরা নিজেরাই দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে সক্ষম। সেই লক্ষ্যে বিএনপি আন্দোলন করে যাচ্ছে।

যদিও আমরা আশা করছি, খুব শিগগিরই আমরা সফল হবো।
তিনি বলেন, বিএনপি’র রাজনীতি দেশের জনগণকে নিয়ে। জনগণের সমস্যার সমাধান করা এবং জনগণের জীবন মান এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা রাজনীতি করি। আমাদের টার্গেট হচ্ছে, দেশ উন্নত করা, যাতে দেশটা বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। আর বিশ্ব তো অনেক কাছাকাছি চলে এসেছে। সুতরাং অন্য দেশের কাছে যাতে আমাদের ভাবমূর্তি ঠিক থাকে এবং ভালো থাকে, সেজন্য আমরা লড়াই করছি। আমরা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের সম্পৃক্ত করছি, এমন না। আমাদের দেশে বিদেশিদের বিনিয়োগ আছে, তাদের স্বার্থও আছে। তাদের স্বার্থ নিয়ে তারা চিন্তিত। আর বাংলাদেশে যদি গণতন্ত্র না থাকে, দেশে যদি সুষ্ঠু রাজনৈতিক প্রক্রিয়া না থাকে তাহলে তো তাদের যে বিনিয়োগ, সেগুলো অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যাবে। এ ছাড়া অনেক দেশ চায় বাংলাদেশে একটা সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া হোক। সেটা এখন দেশে নেই। সুতরাং তারা তাদের নিজস্ব অবস্থান থেকে বাংলাদেশে যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে তাদের সমর্থন দিচ্ছে। তবে, সরাসরি সমর্থন করছে না। আমরা তাদের স্বাগত জানাই এবং ধন্যবাদ জানাই। এর অর্থ এই নয় যে, আমাদের আন্দোলন তাদের ওপর নির্ভর করছে। আমরা আমাদের নিজস্ব শক্তি দিয়ে লড়াই করে যাচ্ছি এদেশের জনগণকে মুক্ত করবার জন্য।

সরকার পতনে এক দফা আন্দোলন নিয়ে বিএনপি’র এই নেতা বলেন, কৌশল নির্ধারণ হয় পার্টির হাই ফোরামে। সেখানে সবাই মিলে কৌশল নির্ধারণ করেন। আর আমরা আমাদের মতামত দেই। তবে আমরা যখন কোনো কর্মসূচি দিচ্ছি, সেই কর্মসূচিতে যখন পুলিশের হামলা হচ্ছে তখন মানুষ তার সবকিছু নিয়ে আমাদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন। আমাদের খেতে দিচ্ছে, আমাদের পানি দিচ্ছে, টিয়ারশেল হলে আমাদের কাগজ এগিয়ে দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, কর্মসূচি ছাড়াও আমরা যখন রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি তখন মানুষ আমাদের ডেকে বলছেন যে, ভাই আপনাকে চিনি। যে করেই হোক এই সরকারকে সরান। আমরা দল করি না। কিন্তু আমরা মনে প্রাণে চাই, এই সরকার যাতে আর না থাকে। আমরা আপনাদের জন্য দোয়া করছি। এগুলোই তো সবচেয়ে বড় অর্জন।

হাবিব-উন-নবী খান সোহেল বলেন, আমরা যতগুলো দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছি, মূলত সেই দাবিগুলো এই একদফা দাবিকে কেন্দ্র করেই ঘুরছিল। এই সরকার না সরলে সেই দাবিগুলো আদায় সম্ভব নয়। কারণ এই সরকার জনগণের দাবিগুলো শুনছিল না। আমাদের দাবিগুলোও শুনছিল না। কারণ তারা সকল অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। সুতরাং যতক্ষণ পর্যন্ত না এই অবৈধ সরকার ক্ষমতা থেকে না সরছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবি আদায় হবে না। বিশেষ করে আমাদের ভোটাধিকার। সুতরাং তারা যদি না সরে আমাদের গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার কোনোটাই আদায় হবে না। ফলে একদফাকে কেন্দ্র করে আমাদের অন্য দাবিগুলো ঘুরছিল। সর্বশেষ এসে সবগুলো দাবি মিলে আমরা একদফাতেই ফিরেছি। আর আমাদের লক্ষ্য যেটা ছিল, সেটাই আছে।

এ সময় গত ১৫ বছরে তার বিরুদ্ধে হওয়া রাজনৈতিক মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ২০০৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আমার বিরুদ্ধে প্রায় ৪৫১টি মামলা হয়েছে। সবগুলো মামলাই সরকারবিরোধী, গাড়ি ভাঙচুর, পুলিশের কাজে বাধা দান, পাথর নিক্ষেপ, নির্দেশ দিয়ে গাড়ি পোড়ানোসহ গৎবাঁধা কিছু অভিযোগে। এসব মামলার কারণে প্রতিদিন সকালে কোর্টে যেতে হয়। ১০ থেকে ১২টা মামলার হাজিরা থাকে প্রতিদিন। আমার ৪টা উকিল। আগের রাতে ফোন দেন উকিলরা। বলেন, আমার কোর্টে এই কয়েক’টা মামলা আছে। আরেকজন বলেন আমার কোর্টে আছে এই কয়েক’টা। এরপর বের হয়ে সবাইকে ফোন দিয়ে মামলাগুলোতে হাজিরা দেয়ার পালা। দেখা গেল, একই সময় সব মামলাগুলো কোর্টে উঠলো। সে সময় চেহারা দেখাতে হয়।

উকিলরা বলেন, উনি আরেকটা কোর্টে আছেন, আমি চেহারা দেখিয়ে নেবো। একই সময় ১০ থেকে ১২টা মামলা শুনানি হয়, যদি আমার আরও কয়েকটি কপি করা যেতো তাহলে ভালো হতো। কিন্তু কপি তো করা যাচ্ছে না। মানে দৌড়াদৌড়ি। কখনো ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে আবার কখনো জজ কোর্টে। সুতরাং দিনের বেশির ভাগ সময় আমার কোর্টে চলে যায়। তবে হাবিব-উন-নবী খান সোহেল বিশ্বাস করেন আগামীতে জনগণের সরকার ক্ষমতায় আসলে তিনি মামলাগুলো প্রত্যাহার চেয়ে মুক্তি পাবেন। তিনি বলেন, যেকোনো জনগণের সরকার, বৈধ সরকার, যে সরকার ন্যায় বিচারে বিশ্বাস করে, বিচারবিভাগের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে এবং আইনের শাসনে বিশ্বাস করে- সেই সরকারের কাছে যদি আমি এই মামলাগুলো থেকে মুক্তি চেয়ে আবেদন করি, সে সরকার আমাকে এই মামলাগুলো থেকে নিষ্কৃতি দিতে বাধ্য।

Print Friendly, PDF & Email
 
 
জনতার আওয়াজ/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ