ক্রেতা সংকটের বাজারেও মাছ-সবজির বাড়তি দাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
মঙ্গলবার, জুন ১৮, ২০২৪ ২:৪৪ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
মঙ্গলবার, জুন ১৮, ২০২৪ ২:৪৪ অপরাহ্ণ

জনতার আওয়াজ ডেস্ক
ঈদুল আজহার ছুটিতে ফাঁকা ঢাকায় অনেকটাই ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়েছে বাজারগুলো। তবে ক্রেতা সংকটের বাজারেও মাছ-সবজির বাড়তি দাম হাঁকছেন ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও হাতিরপুল কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে শাক-সবজির দাম।
বিক্রেতারা বলেন, ঈদের কারণে বন্ধ রয়েছে পণ্য সরবরাহ। আগে আসা পণ্যগুলোই এখন মূলত বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি বাজারে দেখা নেই ক্রেতার। ফলে কিছুটা লাভের আশায় দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।
বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৯০-১০০ টাকা, করলা ১০০-১২০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৩০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, শসা ১০০-১২০ টাকা ও লতি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি পেঁপে ৬০-৮০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, টমেটো ৮০-১০০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা ও পটোল বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। প্রতিকেজি আলু ৫৫-৬০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ টাকা, কহি ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি পিস লাউয়ের জন্য গুণতে হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা। আর বাজারে লালশাকের আঁটি ১৫ টাকা, পাটশাক ১৫ টাকা, পুঁইশাক ২০ টাকা, লাউশাক ৩০ টাকা, কলমি ১৫ টাকা ও পালংশাক ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা বলেন, ঈদের অজুহাত দেখিয়ে সবজির দাম এখন নাগালের বাইরে। দুই-একটি ছাড়া বেশিরভাগ সবজির দাম ৫০ টাকার ওপরে। মিন্টু মিত্র নামে এক ক্রেতা বলেন,
৫০ টাকার নিচে সবজি পাওয়াই মুশকিল। সব ধরনের সবজির দাম চড়া। আর কাঁচা মরিচ ও শসা তো নাগালের বাইরে।
এদিকে, বাজারে দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচেরও। পাইকারিতে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৬০-২০০ টাকায় ও খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকায়। তবে রাজধানীর হাতিরপুল কাঁচা বাজারে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ ৩২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে।
রাজধানীর শ্যামবাজারের সবজি বিক্রেতা সাজ্জাদ হোসেন জানান, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ট্রাক-পিকআপগুলো পশু পরিবহনে ব্যস্ত ছিল। ফলে মরিচসহ অন্যান্য সবজি কম এসেছে। এছাড়া ঈদের কারণে ভারত থেকে মরিচ আমদানি বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে ট্রাক ভাড়াও। এতে সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছে।
বাজারে আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে আদা, রসুন ও পেঁয়াজ। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়। আর প্রতিকেজি দেশি রসুন ২৩০-২৪০ টাকায় ও আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬০-২৮০ টাকায়। এছাড়া মানভেদে প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ২৬০-৩০০ টাকায়।
এদিকে, মুরগির বাজার কিছুটা নিম্নমুখী হলেও স্বস্তির খবর নেই ডিমের বাজারে। কেজিতে ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত কমে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০-২০০ টাকা, দেশি মুরগি ৭০০-৭৩০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৬০-২৮০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। আর প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে একদমই ক্রেতার দেখা নেই। এতে দাম কমিয়ে বিক্রি করা ছাড়া উপায় নেই।
বাজারে আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে ডিম। প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা। আর সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়। এছাড়া প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২১০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানান, পাইকারি পর্যায়ে ডিমের দাম বাড়ায় এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। কেরানীগঞ্জের জিনজিরা বাজারের ডিম বিক্রেতা
স্বস্তির খবর নেই মাছের বাজারেও। প্রায় সব ধরনের মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০-৫০ টাকার মতো। বিক্রেতাদের অজুহাত, ঈদের কারণে মাছ কম আসায় বেড়েছে দাম।
বাজারে প্রতি কেজি তেলাপিয়া ২০০-২৩০ টাকা, চাষের পাঙাশ ২০০-২৪০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৬৫০ টাকা ও চাষের কৈ বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকায়। এছাড়া আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা ও কাতলা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
ইলিশের দাম পড়ছে ১৮০০-২০০০ টাকা। যদিও ৮০০-৯০০ গ্রাম ইলিশ ১৬০০ টাকা ও ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৩০০-১৪০০ টাকায়।
ক্রেতাদের দাবি, মাছের দাম আকাশছোঁয়া। বাজারে কোনো পণ্যের দামেই স্বস্তি নেই। একেক সময় একেক অজুহাতে বাড়িয়ে দেয়া হয় পণ্যের দাম।
নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা ও বিক্রেতাদের। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পায়।
বিক্রেতারা বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।
জনতার আওয়াজ/আ আ
