খুলনা বিআরটিএ অফিসের আশপাশের এলাকায় দালালদের দৌরাত্ম্য - জনতার আওয়াজ
  • আজ বিকাল ৩:৫৮, বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
  • jonotarawaz24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

খুলনা বিআরটিএ অফিসের আশপাশের এলাকায় দালালদের দৌরাত্ম্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ: সোমবার, মার্চ ১৪, ২০২২ ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: সোমবার, মার্চ ১৪, ২০২২ ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ

 

ফকির শহিদুল ইসলাম, খুলনা
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) খুলনা কার্যালয় ও আশপাশের এলাকায় দালালদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স করাতে এসে অভিনব জালিয়াতির শিকার হচ্ছেন গ্রাহকরা। সম্প্রতি বিআরটিএ খুলনা কার্যালয়ে কম্পিউটারের ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে এসে শতাধিক গ্রাহকের প্রাপ্তি স্বীকার পত্রটি ভুয়া বলে ধরা পড়ে। চুক্তি অনুযায়ী টাকা জমা দেওয়ার পরও তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। বিআরটিএ-র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই জালিয়াতির জন্য দালালদের ভুয়া কাগজপত্র প্রদানকে দায়ী করেছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য লিখিত, মাঠ ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও লাইসেন্স না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা।

সূত্র জানায়, মহিউদ্দিন শেখ নামের এক যুবক সম্প্রতি ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য নগরীর শিরোমনিতে বিআরটিএ কার্যালয়ে যান। কম্পিউটার কক্ষে ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে গেলে তার কাছে থাকা প্রাপ্তি স্বীকার পত্রটি সঠিক নয় বলে কর্তৃপক্ষ তাকে ফিরিয়ে দেয়। এ ঘটনার পর মহিউদ্দিন বাদামতলা এলাকার মোড়ল মার্কেটে গিয়ে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র যে দিয়েছে তাকে খুঁজতে যান। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও লোকটিকে পাওয়া যায়নি। মোবাইলে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। মহিউদ্দিনের মতো একাধিক গ্রাহক ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে গিয়ে ফেরত আসার পর বিষয়টি নিয়ে গুঞ্জন সৃষ্টি হয়। প্রায় সব প্রাপ্তি স্বীকার পত্রেই স্বাক্ষর করা ছিল মোটরযান পরিদর্শন সাবরুজ্জামান দুলালের।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মোড়ল মার্কেটের শহীদুল নামে এক দালাল শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে চুক্তিতে ড্রাইভিং লাইসেন্স করার কথা বলে ৭-১০ হাজার টাকা করে নিয়েছে। এসব গ্রাহককে বিআরটিএতে লিখিত, মাঠ পরীক্ষা ও মৌখিক পরীক্ষা না দিয়েই সরাসরি ফিঙ্গার প্রিন্ট দিলেই ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার প্রলোভন দেওয়া হয়। এতে করে দালালের ফাঁদে পা দেয় গ্রাহকরা। অবশ্য প্রাপ্তি স্বীকারপত্রে একজন মোটরযান পরিদর্শকের স্বাক্ষর থাকায় বিষয়টি নিয়ে বেশ সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

সূত্র জানায়, বিআরটিএ ও এর আশপাশের এলাকায় প্রশাসনের কোনো অভিযান না থাকায় দালালদের দৌরাত্ম্য অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে বিআরটিএ-র পার্শ্ববর্তী মোড়ল মার্কেট ও হোটেলগুলোতে সকাল ৮টার পর থেকেই দালালদের উৎপাত শুরু হয়। বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দালালদের সখ্য আছে এমন প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা নেওয়া হয়। জানা যায়, মোড়ল মার্কেটে শহীদুল নানান বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে গ্রাহকদের সহজেই ড্রাইভিং লাইসেন্স করিয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তবে বর্তমানে শহীদুল নিখোঁজ। তার মতো আরও অনেক দালালের পাল্লায় পড়ে অনেকের টাকা খোয়া যাচ্ছে। এই দালালচক্র এতটাই দক্ষ যে, হুবহু বিআরটিএ-র কাগজপত্র, সিল ও স্বাক্ষর জাল করে গ্রাহকদের দিয়ে দিচ্ছে। ফলে গ্রাহকদের বোঝার উপায় নেই যে, এটা সঠিক না ভুয়া। গ্রাহকরা যখন বিআরটিএতে যাচ্ছে তখনই কম্পিউটারে গ্রাহক সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। ততক্ষণে অবশ্য দালালচক্র নিরুদ্দেশ হয়ে যাচ্ছে।

বিআরটিএর মোটরযান পরিদর্শন সাবরুজ্জামান দুলাল বলেন, আমার স্বাক্ষর ও কোড জাল করলে আমার করার কিছু নেই। তবে এ নিয়ে কোনো জিডি করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করবেন বলে জানান।

বিআরটিএ খুলনার সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ বলেন, গ্রাহকরা ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য কম্পিউটারের কক্ষে যেসব প্রাপ্তি স্বীকারপত্র এনেছে সেগুলো জাল অর্থাৎ ভুয়া। এগুলো বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের ইস্যু করা প্রাপ্তি স্বীকারপত্র নয়। বিষয়টি জানার পর আমরা মোড়ল মার্কেটে তল্লাশি চালিয়েছি। তবে দালাল পালিয়েছে। এ বিষয়ে বিআরটিএ-র সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সতর্ক করা হয়েছে। বিআরটিএ কার্যালয় চত্বরের বাইরে দালালদের প্রতারণার স্বীকার হচ্ছে সাধারণ গ্রাহকরা। এ বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচারণা বাড়ানো হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
 
 
জনতার আওয়াজ/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com