ছাত্ররা ডিসি-এসপিকে নির্দেশ করলে দেশে আইন প্রয়োগ হবে কী করে, প্রশ্ন রিজভীর
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
সোমবার, মার্চ ১০, ২০২৫ ২:৫৬ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
সোমবার, মার্চ ১০, ২০২৫ ২:৫৬ অপরাহ্ণ

জনতার আওয়াজ ডেস্ক
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আজ সোমবার বক্তব্য রাখছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। ছবি: ব্রেকিংনিউজ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা যদি ডিসিকে নির্দেশ করে, এসপিকে নির্দেশ করে তাহলে দেশে আইন প্রয়োগ হবে কী করে এমন প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা শুনি ডিসি অফিসে, এসপি অফিসে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে গিয়ে নাকি ছাত্ররা বসে থাকে। যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র তাদের প্রতি তো আমাদের কৃতজ্ঞতা রয়েছে তাদের অবদান তো আমরা ভুলি নাই কিন্তু তারা যদি ডিসিকে নির্দেশ করে, তারা যদি এসপিকে নির্দেশ করে, তারা যদি ডিসি এসপির ঘরে গিয়ে বসে থাকে তাহলে আইন প্রয়োগ হবে কি করে? ডিসি-এসপি অন্যায় করলে ক্যাম্পাসে আপনারা তার প্রতিবাদ করুন, আপনার জায়গা ক্যাম্পাস। আপনার হাতে বই থাকবে আপনি শিক্ষাব্যবস্থাকে আরো কিভাবে মজবুত করা যায়, কিভাবে শিক্ষার মেরুদণ্ডকে আরো মজবুত করা যায় সেগুলো নিয়ে কাজ করুন। আপনাদের কাজ তো ডিসি অফিসে গিয়ে তদারকি করা নয়, আপনাদের কাজ তো বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে গিয়ে তদারকি করা নয়। একটা কথা আছে না বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃকোলে। ছাত্রদের কাজ ক্যাম্পাসে, ছাত্রদের কাজ ক্লাসরুমে, ছাত্রদের কাজ লাইব্রেরিতে, মন্ত্রণালয়ে নয়।
সোমবার (১০ মার্চ) সকালে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে সারাদেশে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডক্টর ইউনুস সাহেবের সরকারকে সমস্ত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সমর্থন দিয়েছে জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সবাই সমর্থন দিয়েছে কিন্তু এখনো কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে? প্রশাসনে কারা? প্রশাসন ঠিক থাকলে এ সমস্ত ঘটনা ঘটতো? তৃণমূলে এখনো প্রশাসনের প্রয়োগ হচ্ছে না কেন এটা তো একটা বড় প্রশ্ন। আমরা যদি কোন অভিযোগ করি এটাকে উনারা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) ব্যক্তিগতভাবে নেয়। কোন কোন ক্ষেত্রে এখন আবার কৌশলে প্রতিশোধ গ্রহণ করার চেষ্টা করে কিন্তু প্রকান্তরে কি হচ্ছে প্রকারান্তরে আজকে ধর্ষণের পরিমাণ বেড়ে গেছে। আজকে নারীরা নিরাপদ নয় আজকে আপনার মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে তার প্রত্যাবর্তন কিভাবে হবে সে কি ক্ষতবিক্ষত হয়ে বাসায় ফিরবে নাকি স্বাভাবিকভাবে বাসায় ফিরবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই।
যদি আইনের প্রয়োগ ঠিকঠাক মতো হতো তাহলে এই পরিস্থিতি হত না বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘শিশু নির্যাতনের এক মহা উৎসব চলেছে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে। সবচাইতে বেশি নারী নির্যাতিত হয়েছে শেখ হাসিনার শাসনামলে। তিনি কোন কিছুই তোয়াক্কা করেনি। নৈতিকতা শিক্ষা হয় কোথা থেকে পরিবার থেকে স্কুল থেকে কলেজ থেকে কিন্তু শেখ হাসিনা সবাইকে শিখিয়ে গেছেন আমার বাপকে তোমরা জাতির বাপ বলবে।স্কুল কলেজের পাঠ্য বইগুলোতে শুধুমাত্র শেখ হাসিনার বাপ-মা-ভাই-বোন এদের কাহিনি লেখা থাকতো। তাদের কাহিনি যদি মহামানবের মতো পাঠ্যবইয়ে লেখা থাকে তাহলে মানুষ সেখান থেকে কি নৈতিকতার শিক্ষা পাবে? শেখ হাসিনার ভাইয়ের নামে ব্যাংক ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে সত্য কিনা জানিনা কিন্তু অভিযোগ তো রয়েছে মানুষ তো শুনেছে এখন তার কাহিনি একজন মহামানবের মতো যদি পাঠ্য বইয়ে লেখা থাকে আর সেই পাঠক বা শিক্ষার্থীরা যদি অন্য কারো কাছ থেকে যদি শোনে এই লোকের কাহিনি হচ্ছে ব্যাংক ডাকাতি তাহলে কি শিখবে সেখান থেকে?
রিজভী আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা গত ১৫ বছর বাংলাদেশকে করেছিলেন শেখ তন্ত্র। তার কথাই শুনতে হবে তাদের কথায় চলতে হবে, তাদেরকেই পূজা করতে হবে এমন একটি ভয়ংকর রাষ্ট্র গড়ে তুলেছিলেন। যেখানে নীতি-নৈতিকতা, বড়দের কোন শ্রদ্ধা ছোটদের প্রতি স্নেহ এবং সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলার কোন বালাই রাখেননি। তার সরকারের মন্ত্রী লোটাস কামালের ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট এর কাহিনি আমরা পড়ছি। চট্টগ্রামের সাইফুজ্জামান চৌধুরীর শত শত কোটি টাকার লুটের কাহিনি আমরা শুনছি। অবৈধ টাকার সাথে সমাজের অপরাধের সম্পর্ক রয়েছে। এমপি যখন টাকা আত্মসাৎকারী হবেন, টাকা পাচারকারী যখন সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তি হবেন তখন সন্ত্রাসী হিংস্রতা, রক্তপাত ও অন্যের ত্রাণ কেড়ে নেওয়ার এক মহাযজ্ঞ শুরু হবে সেটাই হয়েছে ১৫ বছর।
এসময় আরও বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।
জনতার আওয়াজ/আ আ
