দিনকালসহ বন্ধ সব গণমাধ্যম খুলে দেওয়ার দাবি সাংবাদিক নেতাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
বুধবার, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩ ৫:০১ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
বুধবার, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩ ৫:০১ অপরাহ্ণ

দৈনিক দিনকাল পত্রিকার প্রকাশনা বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও বন্ধ সব গণমাধ্যম খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দৈনিক দিনকাল ইউনিটের ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তারা এই দাবি জানান।
বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, ‘দৈনিক দিনকাল পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার প্রমাণ করেছে, তারা ভিন্নমতকে সহ্য করতে পারে না। অথচ গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো পরম সহিষ্ণুতা। বর্তমান সরকার সেই সহিষ্ণুতাকে দূরে ঠেলে দিয়ে আজকে দিনকালের মতো পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছে। এতে ১ হাজার ৫০০ সাংবাদিক-কর্মচারি কর্মহীন হয়ে পড়েছে।’
দৈনিক দিনকালের প্রকাশনা বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘যতদিন পর্যন্ত দিনকাল খুলে দেওয়া না হবে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, মানুষের বলার অধিকার, গণতন্ত্রের অধিকার আদায় না হবে, ততদিন পর্যন্ত সাংবাদিক সমাজ আন্দোলন চালিয়ে যাবে।’
দৈনিক দিনকালের প্রকাশনা বাতিলের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়ে সভাপতির বক্তব্যে দৈনিক দিনকালের ইউনিট প্রধান আবদুল্লাহ জিহাদ বলেন, ‘দৈনিক দিনকালের সঙ্গে ১ হাজার ৫০০ সাংবাদিক কর্মচারি জড়িত। তাই অবিলম্বে পত্রিকাটির প্রকাশনা বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানাই। তা না হলে আগামীতে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
দৈনিক দিনকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রেজওয়ান সিদ্দিকী বলেন, ‘সংবাদপত্রের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্কের উন্নতি কখনো হয়নি। বাকশালের সময় চারটি পত্রিকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে বাকিগুলো বন্ধ করে যেমন সরকারের শেষ রক্ষা হয়নি, তেমনি এখন দৈনিক দিনকাল বন্ধ করেও শেষ রক্ষা হবে না। তাই সরকার অবিলম্বে দৈনিক দিনকাল পুনঃপ্রকাশের সুযোগ করে দিবে সেই আশা করি।’
বিএফইউজের মহাসচিব নূরুল আলম রোকন বলেন, ‘বর্তমান সরকার স্বাধীনতার পর থেকে যখনই ক্ষমতায় ছিল, তখনই গণমাধ্যম কর্মীদের উপর নেমে এসেছে নির্যাতন, হয়রানি, হামলা, মামলা। গত ১২ বছরে খুনের শিকার হয়েছে ৫৪ জন সংবাদকর্মী। বর্তমান সরকার মনে করে যদি গণমাধ্যমকে কব্জা করা যায়, গণমাধ্যমকর্মীদের ভীত-সন্ত্রস্ত করে রাখা যায়, গণমাধ্যমে যদি সরকারের গুম, খুন, নির্যাতন, হয়রানির খবর প্রকাশিত না হয়, তাহলে তারা যেনো তেনোভাবে আরেকটি নীলনকশার নির্বাচন করে ফেলতে পারবে।’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি মোরসালিন নোমানী বলেন, ‘পেশাদার সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে আমরা বলতে চাই, সকল বন্ধ সংবাদ মাধ্যম খুলে দিয়ে স্বাধীন মতপ্রকাশের চর্চা করা হোক। পাশাপাশি দৈনিক দিনকাল পত্রিকাটির সংবাদকর্মীদের রুটি-রুজির কথা চিন্তা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে পত্রিকাটির ডিক্লারেশন বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হোক।’
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী বলেন, ‘আজকে শুধু বিরোধী রাজনৈতিক দল নয়, ভিন্মমতের সংবাদমাধ্যমকেও বর্তমান সরকার সহ্য করতে পারছে না। তার প্রেক্ষিতে দৈনিক দিনকাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লিখলেই সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমরা আজকে দৈনিক দিনকালসহ বন্ধ সকল মিডিয়া খুলে দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। অবিলম্বে এই আহ্বানে সাড়া না দিলে বর্তমান সরকারের পতনের এক দফা আন্দোলন সাংবাদিকরাই শুরু করবে।’
বিক্ষোভ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন দৈনিক দিনকালের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ডিইউজের একাংশের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম , দৈনিক দিনকালের বিভিন্ন পর্যায়ের সংবাদকর্মী ও সাংবাদিক নেতারা।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে তারা বিক্ষোভ মিছিলও করেন।
জনতার আওয়াজ/আ আ
