দেশ রক্ষায় ভারতের সঙ্গে রেলপথ চুক্তি প্রতিহত করতে হবে - জনতার আওয়াজ
  • আজ রাত ৪:২৯, বুধবার, ২৩শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৫শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
  • jonotarawaz24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

দেশ রক্ষায় ভারতের সঙ্গে রেলপথ চুক্তি প্রতিহত করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ: শনিবার, জুন ২৯, ২০২৪ ৪:২৯ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: শনিবার, জুন ২৯, ২০২৪ ৪:২৯ অপরাহ্ণ

 

জনতার আওয়াজ ডেস্ক
বাংলাদেশের মধ্যে ভারত রেলপথ, স্থলপথে যে চলাচলের জন্য চুক্তি করেছে এইগুলো দেশের জনগণকে প্রতিহত করতে হবে তা না হলে এই দেশ আমরা রক্ষা করতে পারবো না বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট জনেরা।

শনিবার (২৯ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে গভর্নেন্স এন্ড পলিসি রিসার্চ (জিপিআর) এর উদ্যোগে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার অন্তরায় ও করণীয় শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, বিচারপতি মো. আব্দুর রউফ বলেন, মহান রাব্বুল আলামিন মানুষকে কর্তব্য দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন কিন্তু আমরা সেই কর্তব্য পালন করছি না। মানুষের বিবেক আজ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। বিগত ৫০ বছর ধরে এই দেশের বিরুদ্ধে ভারত ষড়যন্ত্র করে চলেছে। বাংলাদেশকে আজ খ্রিস্টান রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র চলছে। ভারত, চীন এবং আমেরিকাকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে চলেছে। আমরা যারা দেশ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলাম বা এখনো আছি আমরা আমাদের ব্যক্তির স্বার্থে দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়েছি। আমরা আমাদের শিক্ষা ধংস করেছি, ধর্মীয় মূল্যবোধকে জলাঞ্জলি দিয়েছি, দুর্নীতিকে আকড়ে ধরেছি যার ফলে সমাজে এতো বিশৃঙ্খলা।

তিনি বলেন, দেশের বেশীরভাগ মানুষ খুবই কষ্টে আছে কিন্তু বলতে পারছে না। একটি আদর্শ রাষ্ট্র গঠন করতে হলে আমাদের এই সমস্যা গুলো থেকে মুক্তির পথ খুজতে হবে। সৎ, সাহসিক ও যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে, তাদের হাতেই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিতে হবে এবং এ কাজে দেশের সকল মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে, তা না হলে আমরা সবাই তথা দেশটাই কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হতে বাধ্য।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মশিউল আলম বলেন, অসংখ্য প্রাণের বিনিময়ে আমরা প্রতিষ্ঠা করি লাল সবুজের বাংলাদেশ। অনেক স্বপ্ন ও আশা নিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র লিখা হয়েছিল। বাংলাদেশের জনগণ তাদের বীরত্ব, সাহসিকতা ও বিপ্লবী কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের উপর তাদের কার্যকর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিল। সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচিত প্রতিধিদের প্রতি তাদের মেন্ডেড দিবে কিন্তু জনগণের সেই অধিকারকে হরণ করা হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় হলো ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার’ প্রতিষ্ঠা তো দূরের কথা আমরা এখন আত্মঘাতি খেলায় মত্ত হয়ে দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছি শুধু ব্যক্তি স্বার্থের জন্য।

তিনি বলেন, যে দেশ জনগণের দেশ সেই জনগণকে আজ অধিকার বঞ্চিত করা হয়েছে। এই দেশকে বাঁচাতে হলে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে আন্দোলনের বিকল্প নেই তাই দেশের মানুষকে আহবান করব আপনারা রাস্তায় নামুন নিজেদের অধিকার নিজেরাই ফিরিয়ে আনুন।

সাবেক রেড ক্রিসেন্ট এর চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুর রব বলেন, আজ দেশের মানুষ কেও মুখ খুলে কথা বলতে পারে না। সাংবাদিকরা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারছে না। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছে পানি দেবে না অথচ আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী বলছে আমরা ভারতকে সব দিয়ে দিয়েছি। প্রতি বছর আমাদের দেশ থেকে দশ বিলিয়ন ডলার ভারতে যাচ্ছে আমরা যেমন বিদেশ থেকে রেমিটেন্স আনি ভারত বাংলাদেশ থেকে রেমিটেন্স নিচ্ছে। বাংলাদেশে আজকে যে গণতন্ত্রের কথা বলবে, মানুষের অধিকারের কথা বলবে তাকেই কণ্ঠরোধ করে দেওয়া হচ্ছে। একটা দেশের যদি সার্বভৌমত্বই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায় তাহলে সে দেশে আর কিছু থাকতে পারে না। দেশে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত না হলে সেই সরকার দেশের জনগণের কথা চিন্তা করেনা। বিগত কয়েকটা নির্বাচনে বর্তমান সরকার রাতের ভোট দিনে করেছে, জোর করে ক্ষমতায় গেছে আর ডামি নির্বাচন করে ক্ষমতায় এসেছে তাদের দ্বারা দেশের উন্নয়ন কোনক্রমেই সম্ভব নয়। বর্তমান সরকার রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহার করে দেশের প্রতিটি খাতকে আজ অন্যায় ভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। দেশের সম্মানিত ব্যক্তি আলেম সমাজকে ডান্ডা বেড়ি পরিয়ে তাদেরকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে অথচ কেউ প্রতিবাদ করতে পারছে না। দেশের অসংখ্য মানুষকে খুনগুম করা হচ্ছে অন্যায় ভাবে জেলে রাখা হয়েছে অথচ কেউ মুখ খুলতে পারছে না। আজ বিচার বিভাগকে বাধ্য করা হয় রায় দেওয়ার জন্য। মিথ্যা সাক্ষী সাজিয়ে আদালতের রায় দেওয়ার জন্য আনা হয় অথচ কেউ প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে পারে না। দেশে দুর্ভিক্ষ চলছে অথচ সরকার মিথ্যা উন্নয়নের জোয়ারে ভাসিয়ে দিচ্ছে। ভারত বাংলাদেশে রেল লাইন ব্যবহার করে বাংলাদেশের নিরাপত্তাকে ছিন্ন ভিন্ন করে দিবে। বর্তমান সরকার দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে আর ভারতে রেল চালু করতে দিয়ে সার্বভৌমত্বকে ধ্বংস করবে তাই আমাদের এই বিষয়ে এখনই সতর্ক না হলে কঠিন বিপদ আমাদের সামনে অপেক্ষা করছে।

কর্নেল (অবঃ)মিয়া মশিউজ্জামান বলেন, আমি যখন বিডিআর এ কর্মরত ছিলাম তখন তো সীমান্তে এত হত্যাকাণ্ড হয়নি তাহলে এখন কেন হয় তার একটাই কারণ বর্তমান সরকার দেশদ্রোহী এই সরকার ভারতের সরকার, ভারত যা করতে বলছে সরকার তাই করছে। ভারত যে অবৈধ চুক্তিগুলো বাংলাদেশের সাথে করেছে এই গুলো তারা সঠিকভাবে প্রয়োগ করে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। বাংলাদেশের মধ্যে ভারত রেলপথ, স্থলপথে যে চলাচলের জন্য চুক্তি করেছে এইগুলো দেশের জনগণকে প্রতিহত করতে হবে তা না হলে এই দেশ আমরা রক্ষা করতে পারবো না। ঘরের মধ্যে সেমিনার করে আলোচনা করে আমরা দেশকে রক্ষা করতে পারবো না আমাদের এই প্রচেষ্টাগুলো জনগণের কাছে নিয়ে যেতে হবে আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হবে তাহলেই আমরা দেশকে দেশের সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে পারবো।

সাবেক জজ ও অর্থনীতি বিশ্লেষক ইফতেদার আহমেদ এর সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক কর্নেল (অবঃ) মিয়া মশিউজ্জামান, সাবেক রেড ক্রিসেন্ট এর চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুর রব, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মশিউল আলম, কর্নেল (অবঃ) নাজিমুল হক, কর্নেল (অবঃ) দিদারুল আলম, (জিপিআর) এর সমন্বয়ক কর্নেল (অবঃ) মো. আব্দুল হক, (জিপিআর)এর যুগ্ন আহবায়ক মিনহাজুল আবেদীন শরীফ প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email
 
 
জনতার আওয়াজ/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ