নির্বাচনের সময় নিয়ে সেনাপ্রধান মতামত দিয়েছেন: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
মঙ্গলবার, অক্টোবর ১, ২০২৪ ১:৩৭ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
মঙ্গলবার, অক্টোবর ১, ২০২৪ ১:৩৭ পূর্বাহ্ণ
জনতার আওয়াজ ডেস্ক
নির্বাচনের সময় নির্ভর করবে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ও তা নিয়ে রাজনৈতিক আলোচনার ওপর। তারপর সময়ের বিষয়টা আসে যে নির্বাচন কবে হবে।
এ কথা বলছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সাক্ষাৎকারের বিষয়টিও আলোচনায় আসে। এ প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, ‘রয়টার্সের প্রতিবেদনটি একটু ভালোমতো দেখবেন।… ইংরেজি রিপোর্টে কোট আনকোটের (উদ্ধৃতি) মধ্যে (এই ধরনের) কিছু নেই।…রিপোর্টে ষষ্ঠ প্যারায় (অনুচ্ছেদ) বলেছে, ফলোয়িং দ্য রিফর্মস, তারপর বলেছে ওই ১৮ মাস।… সেই জায়গায় এটা ১৬ মাস, না ১৮ মাস, না ১২ মাস নাকি ৬ মাস (পর হবে) সেটা সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশের জনগণ।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘এটা (নির্বাচন) কবে হবে? এটি ১৬ মাস পরে হবে, নাকি ১২ মাস পরে, নাকি ৮ মাস পরে, সেটা এখনই নির্ধারিত করা যাচ্ছে না।’ তিনি মনে করেন, ‘সেনাপ্রধান এখানে ওপিনিয়ন (মতামত) দিয়েছিলেন।’
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে মূলত এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টার এই সফরকে খুবই সফল ও ঐতিহাসিক অভিহিত করেন তাঁর প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি জানান, সরকার গঠিত ছয় সংস্কার কমিশন পুরোদমে কাজ শুরুর আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। খুব দ্রুতই এই আলোচনা হবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সংবিধান ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠনের কথা জানান।
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী। আর সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে প্রথমে বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিকের নাম ঘোষণা করা হলেও পরে তা পরিবর্তন করে অধ্যাপক আলী রীয়াজকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, মঙ্গলবার থেকে কমিশনের কাজ শুরুর করার কথা ছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত ছয় সংস্কার কমিশন গঠনের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। সরকারের চাওয়া হলো, কাজ শেষে কমিশনগুলো আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে।
কমিশনের কাজের বিষয়ে আজকের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, কমিশনের কাজ আগামীকাল থেকে শুরু করার কথা। কিন্তু একটি সিদ্ধান্ত এসেছে তার আগে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে উপদেষ্টা পরিষদ আরেক দফা আলোচনা করতে চাচ্ছেন। তিনি বলেন, কমিটির প্রধানদের যখন নাম ঘোষণা হয়েছে, তখন কমিশনের কাজ কিছুটা হলেও শুরু হয়েছে। যেহেতু এখানে রাজনৈতিক দলগুলো একটি অংশীজন। তাই তাদের সঙ্গে আলাপ করে মতামত চাওয়া হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘এটুকু বলতে পারি, এই আলোচনাটি খুব তাড়াতাড়ি হবে। আলোচনা হওয়ার পরই দেখবেন কমিশনের কাজগুলো শুরু হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর।