পরিবারের সঙ্গে দিনটি উদযাপন করতে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছেন মানুষ
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
শুক্রবার, এপ্রিল ৫, ২০২৪ ৩:২৩ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
শুক্রবার, এপ্রিল ৫, ২০২৪ ৩:২৩ অপরাহ্ণ
জনতার আওয়াজ ডেস্ক
আর কয়েকদিন পরই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। পরিবারের সঙ্গে দিনটি উদযাপন করতে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছেন মানুষ। ইতোমধ্যে ঘরমুখো যাত্রীদের ভিড়ে জমজমাট হয়ে উঠেছে সায়েদাবাদ, মহাখালি, গাবতলী বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডগুলোতে। স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে নগরবাসীকে শেকড়ের টানে গ্রামে ফিরতে দেখা গেছে।
শুধু বাস টার্মিনাল নয় কমলাপুর রেল স্টেশন, এয়ারপোর্ট রেল স্টেশনে গতকাল থেকে ভীড় লেগেই আছে। সড়কে যানজট এড়াতে অনেকে রেলের অগ্রিম টিকিট কেটে রখেছেন। অনেকে যাচ্ছেন আবার আকাশ পথে। পদ্মা সেতু হওয়ার পর নৌপথের যাত্রী অপেক্ষাকৃত কম। তবে যারা বাসে করে বাড়ি ফিরছেন অনেকে বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ করছেন।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সরেজমিনে বিভিন্ন টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, ঈদযাত্রায় বাড়ি ফেরার জন্য টার্মিনালে যাত্রীদের বেশ ভিড়। মূলত এ ভিড় গতকাল বিকেল থেকে শুরু হয়েছে। যার রেশ সাপ্তাহিক ছুটির দিন সকালেও রয়ে গেছে। এসব বাস টার্মিনাল থেকে দেশের উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের বাস বেশি ছেড়ে যায়।
জানা গেছে, এবারের ঈদের ছুটি ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হলেও আজ শুক্রবার, আগামীকাল শনিবার এবং আগামী পরশু রবিবার সরকারি ছুটি রয়েছে। অনেকে ৮ ও ৯ এপ্রিল ঐচ্ছিক ছুটি নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন। যারা ছুটি নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন তারা ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি কাটাতে পারবেন। ফলে অনেকেই আগেভাগে বাড়ি যাচ্ছেন বেশি ছুটি কাটানোর আশায়।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১০ অথবা ১১ এপ্রিল ঈদ উদযাপিত হতে পারে। অনেকে পরে ভিড় হওয়ার শঙ্কায় পরিবার আগেই বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছে।
কাউন্টার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদের ছুটি শুরু হলে এখনকার তুলনায় যাত্রীর সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে।
ঢাকা-চুয়াডাঙ্গা রুটের বাস দর্শনা ডিলাক্সের কাউন্টার ম্যানেজার সোহেল রানা বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে অনেকেই বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। আজ যারা আসছেন, তাদের অনেকেরই আগ থেকে টিকিট বুক করা ছিল। এছাড়া আজও টিকিট কাটছেন অনেকে।
ঢাকা-ঝিনাইদহ রুটের জেএল লাইন পরিবহনের ম্যানেজার আকরাম বলেন, ছুটি শুরু না হলেও ঈদযাত্রা শুরু হয়ে গেছে। সকাল থেকে আমাদের দুটো বাস ছেড়ে গেছে।যাত্রীসংখ্যা ভালো, তবে এটা আরো বাড়বে।
সাকুরা কাউন্টারের কর্মী রাসেল বলেন, সকাল থেকেই অনেক যাত্রী আসছেন, অনেকেরই আবার আগের থেকে টিকিট কাটা। আশা করছি যাত্রীর আরো বাড়বে।
কথা হয় ঝিনাইদহগামী যাত্রী ইফতেখার হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঝামেলা এড়াতে আগেই টিকিট কেটে রেখেছিলাম। পরিবার নিয়ে যাচ্ছি, তাদের যেন কোনো কষ্ট না হয় তাই এসির টিকিট কেটেছি। আশা করছি ভালোভাবে বাড়ি পৌঁছাতে পারবো।
বরিশালগামী যাত্রী ফজলে রাব্বি বলেন, আগে তো বাড়িতে পৌঁছাতে অসম্ভব ভোগান্তি পোহাতে হতো। এখন পদ্মা সেতু হয়ে খুব সুন্দরভাবে বাড়ি যেতে পারছি।
এখানে এসে কোনো ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তেমন কোনো ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি। এসেই কাউন্টার থেকে টিকিট কেটেছি, টাইমলি বাসে উঠে পড়বো।
পরিবারসমেত কুষ্টিয়া যাবেন ব্যবসায়ী আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঈদের ছুটি শুরু হলে রাস্তায় চাপ বেড়ে যাবে, তাই ভোগান্তি এড়াতে আগেই বাড়ি যাচ্ছি। সবার সঙ্গে ঈদ কাটিয়ে তারপর ঢাকা ফিরবো।
এদিকে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় টার্মিনাল প্রাঙ্গণে পুলিশ কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। দায়িত্বরত এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তা, সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই কন্ট্রোলরুম বসানো হয়েছে। কেউ কোনো সমস্যায় পড়লে বা অভিযোগ নিয়ে আমাদের কাছে এলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।