পর্যালোচনা : রাষ্ট্রদূতদের গাড়িতে ফ্ল্যাগ ও ভিয়েনা কনভেনশন
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
মঙ্গলবার, মে ১৬, ২০২৩ ১১:৫১ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
মঙ্গলবার, মে ১৬, ২০২৩ ১১:৫১ অপরাহ্ণ

শহীদুল্লাহ ফরায়জী
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত ও সৌদি আরবসহ কতিপয় দূতাবাসে বিশেষ ও স্থায়ী এসকর্ট বাতিল করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। কেবল এসকর্ট প্রত্যাহারই নয়, রাষ্ট্রদূতদের গাড়িতে ফ্ল্যাগ উড়ানো বন্ধের বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে বলে জানান তিনি। কয়েকটি গণমাধ্যমে এ সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রদূতের গাড়িতে ফ্ল্যাগ উড়ানো বন্ধের বিষয়টি বিবেচনার এখতিয়ার বাংলাদেশের নেই।
কূটনীকিতরা কী ধরনের সুবিধা পাবেন বা তাদের সাথে কেমন আচরণ করা হবে সে বিষয়ে ১৯৬১ সালের এপ্রিলে জাতিসংঘের উদ্যোগে ভিয়েনায় এক কনফারেন্সের পর অংশগ্রহণকারী দেশগুলো নিয়ে একটি চুক্তি করা হয়।
কূটনৈতিক মিশন ও কূটনীতিক সম্পর্কিত এ ধরনের নিয়মকানুনের অধিকাংশই Vienna Convention On Diplomatic Relations 1961 এ বিধৃত আছে। বাংলাদেশ চুক্তিটির স্বাক্ষরকারী দেশ।
ভিয়েনা কনভেনশনে যেসব নিয়ম-নীতি উল্লেখ করা আছে সে অনুযায়ী কোন দেশে অন্য কোন দেশের কূটনীতিক মিশন বা প্রতিনিধিরা অবস্থান করে থাকে।
এই চুক্তির মাধ্যমে অন্য দেশে কূটনীতিকদের বিভিন্ন ধরনের সুবিধা, নিরাপত্তা, বাসস্থান, আইন প্রয়োগসহ নানা বিষয় নিশ্চিত করে থাকে গ্রাহক দেশ।
ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী, কূটনীতিক এবং গ্রাহক দেশ আচরণ করতে বাধ্য। যার কারণে এই চুক্তি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
Vienna Convention On Diplomatic Relations 1961 এর আর্টিকেল ২০ এ বলা হয়েছে-
The mission and its head shall have the right to use the flag and emblem of the sending State on
the premises of the mission, including the residence of the head of the mission, and on his means of transport.
অর্থাৎ
মিশন এবং মিশন প্রধানের প্রেরক রাষ্ট্রের পতাকা এবং প্রতীক ব্যবহার করার অধিকার থাকবে এবং মিশন প্রাঙ্গণ, মিশন প্রধানের বাসভবন সহ গাড়িতেও তা প্রযোজ্য হবে।
সুতরাং ভিয়েনা কনভেনশন স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে প্রেরক দেশের রাষ্ট্রদূতদের গাড়িতে পতাকা উড়ানো বন্ধ করার এখতিয়ার গ্রাহক দেশ বাংলাদেশের নেই।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোনক্রমেই ভিয়েনা কনভেনশনে বিধৃত কোন বিষয়কে উপেক্ষা করে বা অগ্রহণযোগ্য করে কোন বক্তব্য দিতে পারেন না। একজন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভিয়েনা কনভেনশন বিরোধী বক্তব্য কোনক্রমেই রাষ্ট্রের মর্যাদাকে সুরক্ষা দেয় না।
এসব মনগড়া বক্তব্য কোনক্রমেই কূটনৈতিক সুলভ নয় এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সহায়কও নয়। বরং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ হবে। এসব বিষয়ে আমাদেরকে অবশ্যই সতর্ক থাকা উচিত।
লেখক : গীতিকার
faraizees@gmail.com
।
জনতার আওয়াজ/আ আ
