পাঁচ দফা দাবিতে সমাবেশ করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদ
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
মঙ্গলবার, মার্চ ১৫, ২০২২ ৪:১৩ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
মঙ্গলবার, মার্চ ১৫, ২০২২ ৪:১৩ অপরাহ্ণ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ডাকসু নির্বাচন, গেস্টরুম নির্যাতনবিরোধী আইন পাসসহ পাঁচ দফা দাবিতে ছাত্র সমাবেশ করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদ।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আয়োজনে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়৷
তাদের অন্য তিনটি দাবি হলো-
হলগুলোতে ছাত্রসংগঠনের দখলদারি বন্ধ করে প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় আসন বণ্টন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের আসনসংখ্যা ও বাসের সংখ্যা বাড়ানো এবং সব ধরনের চাকরিতে আবেদন ফি বাতিল৷
সমাবেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোকে ‘সন্ত্রাস, দখলদারি ও চাঁদাবাজির অভয়ারণ্যে’ পরিণত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গেস্টরুম’ ও ছাত্র নির্যাতনবিরোধী আইন পাস এবং ডাকসুসহ সব ছাত্র সংসদের নির্বাচন দাবি করেছেন তিনি৷
তিনি আরো বলেন, ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হলকে টর্চার সেল বানিয়ে রেখেছে৷ তারা শিক্ষার্থীদের মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে তাদের কর্মসূচিতে নিয়ে আসে৷ ছাত্রলীগ এখন ছাত্রদের দানবে পরিণত করার একটি সংগঠনে পরিণত হয়েছে৷
শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অবস্থা বিরাজ করছে, তার চেয়ে আইয়ুব খানের আমলে ভালো অবস্থা ছিল৷ এখানে মেধা ও যোগ্যতার মূল্যায়ন হচ্ছে না৷ হচ্ছে দলীয় দাসত্ব ও লেজুড়বৃত্তির৷
বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, হলগুলোতে ভয়ানক পরিবেশ বিরাজ করছে৷ ছাত্রলীগ হলগুলোকে সন্ত্রাস, দখলদারি ও চাঁদাবাজির অভয়ারণ্যে পরিণত করেছে৷ এই অবস্থার পরিবর্তনে শিক্ষার্থীদের দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে বেরিয়ে আসতে হবে৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমিতির নির্বাচন হয়৷ কিন্তু ডাকসু নির্বাচন হয় না৷ ২০১৯ সালে ডাকসু নির্বাচন হওয়ার পর হলগুলোতে অমানবিক দমন-পীড়নের সংস্কৃতিতে কিছুটা পরিবর্তন এসেছিল৷ সব ছাত্রসংগঠন প্রতিযোগিতামূলক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল৷ কিন্তু সেটি ম্লান হয়ে গেছে৷ তাই অবিলম্বে ডাকসুসহ সব ছাত্র সংসদের নির্বাচন দিতে হবে৷
গণঅধিকার পরিষদের নেতা ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও প্রক্টর গণরুম-গেস্টরুম জিইয়ে রেখেছেন৷ এই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গর্ব করার অনেক কিছু আছে৷ কিন্তু আমাদের মাথা নত হয়ে যায় প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা এসব ব্যক্তিদের কর্মকাণ্ড দেখে৷ ক্লাসে শিক্ষকের হাজিরা খাতায় নাম না থাকলে সমস্যা নেই, কিন্তু ছাত্রলীগের খাতায় নাম না থাকলে রক্ষা নেই-এমন অবস্থা চলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ গণরুম-গেস্টরুম সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে৷
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আখতার হোসেন৷
তিনি বলেন, ‘গণরুমের চেয়ে জেলখানা অনেক বেশি সুন্দর৷ জেলখানায় অন্তত ঘুমানোর নির্দিষ্ট জায়গা থাকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য সেটিও থাকে না৷ শিক্ষার্থীদের মেরুদণ্ড ভেঙে রাখা হয়েছে গেস্টরুম সংস্কৃতির মাধ্যমে৷’ পরে তিনি পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বর্ধিত কমিটি ঘোষণা করেন৷
ছাত্র অধিকার পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দপ্তর সম্পাদক সালেহ উদ্দিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা তারেকুল ইসলাম ও রাসেল সরকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা আসিফ মাহমুদ, জাহিদ আহসান, আশরেফা তাসনীম ও নুসরাত তাবাসসুম বক্তব্য দেন৷
জনতার আওয়াজ/আ আ
