বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাস নিয়ে বই প্রকাশ
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
বৃহস্পতিবার, মে ১৮, ২০২৩ ৯:১২ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
বৃহস্পতিবার, মে ১৮, ২০২৩ ৯:১২ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাস নিয়ে লেখা বই ‘ক্রিকেটের সাথে চলা’ প্রকাশ করা হয়েছে। বইটি লিখেছেন সাবেক ক্রিকেটার লুৎফর রহমান মাখন। দেশ ভাগের আগে বাংলা অঞ্চলের ক্রিকেটের ইতিহাস, ৫০ দশকের ক্রিকেটের উত্থান, সে সময়ের ক্রিকেট অবকাঠামো, খেলা ও এর সঙ্গে সংস্লিষ্টদের নানা ঘটনা উঠে এসেছে এ বইয়ে।
বৃহস্পতিবার (১৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন প্রবীণ ক্রীড়া সাংবাদিক মো. কামরুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে ‘ক্রিকেটের সাথে চলা’ বইটির লেখক লুৎফুর রহমান মাখন বলেন, ‘আমাদের ফ্যামিলির মধ্যে সবারই খেলাধুলায় আগ্রহ আছে। আমাদের ভাই বোনের ভিতরে মোটামুটি সবাই খেলাধুলা করেছি শুধু এক বোন বাদে। খেলা ধুলার মাধ্যমেই মানুষের মনের উন্নতি হয়। খেলাধুলার বিষয়ে শিশুদের কখনোই বাধা দেওয়া উচিত নয়। আমার পরিবার খেলাধুলার বিষয়ে আমাকে কখনো বাধা দেয় নাই উল্টা আমাকে আরো উৎসাহ যুগিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি প্রথম বইটি যখন লিখি তারপর কামরুজ্জামান ভাই আমাকে বলেছিল যে আপনার ক্রিকেটের ইতিহাস নিয়ে কিছু লেখেন। আমি আর তার অনুরোধ না করতে পারলাম না। বইটিতে আমি আমার সম্পর্কে কিছু লিখিনি। ক্রিকেটের বিভিন্ন ইতিহাস তুলে ধরেছি। আমার সময়ের ক্রিকেটার স্ট্যান্ডার আর বর্তমান সময়ের স্ট্যান্ডার অনেক তফাৎ। সেজন্য বইটিতে আমি ক্রিকেটের ইতিহাসকে টেনে আনলাম। ইতিহাসের ফাঁকে ফাঁকে আমার সময় ক্রিকেটের চিত্র বইটিতে তুলে ধরেছি। এই বইটা লেখার বিষয়ে হায়দার রহমান এবং দুলাল আমাকে ভীষণভাবে সহযোগিতা করেছে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, ‘বইটা পড়ে ৫০-৬০ দশকে ঢাকা স্টেডিয়াম এলাকা কেমন ছিল তার পরিপূর্ণ ধারণা পাওয়া যায়। আমাদের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের অনেক সময় এখানেই কেটেছে। ৫৪ সালের দিকে আমাদের বাসার পাশেই সংবাদপত্রের অফিস ছিল। সেখানে গিয়ে শুধু খেলার পাতা পড়তাম। তখন জনপ্রিয় ছিল ফুটবল। তখন স্টেডিয়ামের গ্যালারি ছিল কাঠের।’
তিনি আরও বলেন, ‘৫০ দশকেই চার-পাঁচটা জায়গায় নেট প্র্যাক্টিস হতো। তখন সামনে পিছনে আমরা ঘুরঘুর করতাম। বল কুড়িয়ে দিতাম। ৫৯ সালে আমার নেট প্র্যাক্টিস শুরু হয়। সেই সময় ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে পড়ি। রাজনীতিতে বিশেষ আগ্রহের কারণে পরে আর খেলা হয়নি।’
বইটিতে ৪৭ পূর্ব সময়ের ক্রিকেট নিয়েও লেখক লিখেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তিনি নাটোর, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, রাজশাহীতে কাদের হাত ধরে ক্রিকেটের পথচলা, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ইতিহাস তুলে এনেছেন। মাখন ভাই ছাড়া আর কারও পক্ষে এতো ছোট ছোট বিষয় তুলে আনা সম্ভব না। সে সময়ের অনেক খেলোয়াড়দের নাম আছে এখানে। যাদের নাম দেখলে অনেক স্মৃতি মনে পড়ে যায়।’
সভাপতির বক্তব্যে প্রবীণ ক্রীড়া সাংবাদিক কামরুজ্জামান বলেন, ‘মাখন ভাইয়ের বই যে আমাদের জন্য দিশা হয়ে আসবে তা ভাবিনি। বইটি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাস এবং মাখন ভাইয়ের সময়ের ক্রিকেটের কার্যক্রম বইটিতে লেখা আছে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের পুরো ইতিহাস না হলেও প্রথম দিকের ইতিহাস অনেকখানি বইটিতে আছে। মাখন ভাই বাংলাদেশের ইতিহাসে বড় একটি কাজ করে গেছেন। যেখানে বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে ক্রিকেটের বিষয়ে কোন ইতিহাস সংরক্ষণ করা হয়নি সেখানে মাখন ভাই চেষ্টা না করে শখের বশে লিখে দিয়ে গেছেন। এই বইয়ের মাধ্যমে তিনি ( লুৎফুর রহমান মাখন) বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাস উপহার দিয়েছেন ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য।’
বইটির বিষয়ে সাংবাদিক উৎপল শুভ্র বলেন, ‘মাখন ভাইয়ের এই বইটা সাংবাদিকদের জন্য রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এই ধরনের কালচার আমাদের দেশে তেমন একটা নাই। মাখন ভাই তার ৯০ বছর বয়সে যে ক্রিকেটের ইতিহাস নিয়ে এমন একটা বই লিখেছেন তার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। মাখন ভাইয়ের মত যারা আছেম তারা যদি তাদের স্মৃতি কথা এভাবে লিখে যান তাহলে আমারা যারা আছি ভবিষ্যতের জন্য অনেক কাজে দিবে।’
সাংবাদিক দুলাল মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের দেশে ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাস হারিয়ে যাচ্ছে। তবে আশা করব মাখন ভাইয়ের বইয়ের মত অন্যরাও তাদের অভিজ্ঞতা লিখে যাবেন।’
জনতার আওয়াজ/আ আ
