বিএনপি কী সঠিক পথে হাঁটছে?
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
মঙ্গলবার, জুলাই ৯, ২০২৪ ১১:৫৯ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
মঙ্গলবার, জুলাই ৯, ২০২৪ ১১:৫৯ অপরাহ্ণ

বেলাল উদ্দিন সরকার তুহিন
সাংগঠনিক পদায়ন, পদোন্নতি, কমিটি বিলুপ্ত, নতুন ও পুরোনো নেতৃত্ব বিকশিত করার জন্য সাহসী সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নিচ্ছে বিএনপি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তৃণমূলের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রাখছেন। মতামতের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি, মহানগর দক্ষিণ, চট্টগ্রাম মহানগর, বরিশাল মহানগর বিএনপির কমিটি ঘোষণা করেছেন।
বিগত দিনে পরীক্ষিত, আন্দোলনে অগ্রভাগে যারা ছিলেন তাদেরকে হাতে নেতৃত্ব তুলে দিয়েছেন।
বিশেষভাবে, বিএনপির উপদেষ্টা সদস্য আমানউল্লাহ আমান ও আবদুস সালামকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যুবদলের কেন্দ্রীয় সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরবকে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আহ্বায়ক ও মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালামকে বাদ দিয়ে সাবেক সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম মজনুকে আহ্বাবায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ফলে তৃণমূল কর্মীরা নতুন করে উজ্জীবিত হয়েছে।
নেতৃত্বের পরিবর্তন একটা ধারাবাহিক রীতি ও সাংগঠনিক দায়িত্ব। সারাদেশে বিপুল বিএনপির নেতাকর্মীরা গতিশীল নেতৃত্ব আশা করে।
কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পদে শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ সেলিম ভাইয়াকে পদায়ন করায় পুরো বিভাগে নতুন জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। দলের মধ্যে সামান্য মতভেদ তিনি আলোচনা করে চৌকস নেতৃত্বের কারণে কুমিল্লা মহানগর ও জেলা উত্তর, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির উদ্যোগে বিশাল সমাবেশ, সাংগঠনিক কর্মসূচি চমৎকারভাবে পরিচালিত হচ্ছে। যা দৃশ্যমান।
বিএনপির ভ্যানগার্ড ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর অসাধারণ নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক বিচক্ষণতা প্রবলভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে সামগ্রিক রাজনীতিতে। পরিস্থিতি বিবেচনায় তিনি দেশীয়, আন্তর্জাতিক রাজনীতির গতিপথ এবং গতিধারা নিয়ে দলীয় মুখপাত্র হিসেবে গ্রহণযোগ্য বক্তব্য সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের কাছে নতুন বার্তা দিচ্ছেন।
দলের একাডেমিক রাজনীতির পুরোধা হলেন রিজভী আহমেদ। মাঠে ময়দানে নেতাকর্মীদেরকে উজ্জীবিত রাখার জন্য বীরদর্পে মিছিল করছেন তিনি।
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এনি, আবদুস সালামকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তারা দুজনেই দীর্ঘদিন দলীয় সাংগঠনিক গুরুত্বপূর্ণ পদে সফলভাবে কাজ করেছেন।
যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে বিএনপির প্রচার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কর্মীবান্ধব নেতা হিসেবে সর্বমহলে তার সুপরিচিতি রয়েছে। তিনি ছিলেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি।
আরেকজন নীরবে নিবৃত্তে বিএনপির জন্য ১৫ বছর কাজ করে যাচ্ছেন মাইনুল ইসলাম। টাঙ্গাইলে এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের আপনজন হিসেবে পরিচিত তিনি। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাকে। বিএনপির একজন নিবেদিত মানুষ। সুখে-দুখে আড়ালে আবডালে কাজ করতেই পছন্দ করেন মাইনুল ইসলাম। তিনি মিডিয়া হাউসের মালিকও বটে। বিশিষ্ট শিল্পপতি হিসেবে অতিশয়
সজ্জন নেতা।
বিএনপি টানা ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে। কিন্তু দলের একটা পদ পাবার জন্য আগ্রহী রয়েছেন বিপুল নেতাকর্মী। এতে প্রমাণ হয় যে, বিএনপির প্রতি জনগণের প্রবল আস্থা ও ভালোবাসা রয়েছে। গণতন্ত্র, সাংবাদিক মৌলিক অধিকার, সুশাসন, ভোটাধিকারের জন্য লড়াই সংগ্রাম করছে। বুকভরা আশা নিয়ে তৃণমূলের কর্মীরা জেল, জুলম, নির্যাতন উপেক্ষা করে মাস্তুল ধরে রেখেছেন। যারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদের রয়েছে স্বৈরাচারী এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের অভিজ্ঞতা।
১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপি নামে দলটি প্রতিষ্ঠাতা করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান (বীর উত্তম)। দেশের জনগণ পাঁচবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করেছিলেন। বিএনপির চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া জেলবন্দি। শারীরিক অবস্থা ভালো নয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সুদূর ইংল্যান্ড থেকে দল পরিচালনা করছেন। তিনি সারাদেশের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংযোগ রেখে বলিষ্ঠভাবে নেতৃত্ব দেবার কারণে দলে এখনো ফাটল ধরেনি। প্রবীণ আইনজীবী, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও পুরো নির্বাহী কমিটির নেতারা তার সিদ্ধান্ত মেনে নিচ্ছেন অকপটে।
সঠিক নেতৃত্ব নির্ধারণ, পদায়ন করলে জনগণের মূল আকাঙ্খা বাস্তবায়ন করতে সুবিধা হবে।
লেখক: রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
জনতার আওয়াজ/আ আ
