বিবাহের ক্ষেত্রে কনের বয়স ১৬ এবং বরের বয়স ১৮ করার দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৫ ৩:০১ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৫ ৩:০১ অপরাহ্ণ

জনতার আওয়াজ ডেস্ক
বাল্য বিবাহ রোধে বিবাহের ক্ষেত্রে কনের বয়স ১৬ এবং বরের বয়স ১৮ করাসহ ১৬ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুসলিম নিকাহ রেজিস্ট্রার কল্যাণ সমিতি।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ মুসলিম নিকাহ রেজিস্ট্রার কল্যাণ সমিতি কর্তৃক ‘বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রারদের যৌক্তিক দাবি সংক্রান্ত’ সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ মুসলিম নিকাহ রেজিস্ট্রার কল্যাণ সমিতির নির্বাহী সভাপতি অধ্যক্ষ ড. মো: গোলাম কিবরিয়া। এই বক্তব্যে তিনি বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রারদের দাবি; নারী অধিকার সংস্কার কমিটির প্রতি ‘ইসলাম বিরোধী’ প্রস্তাবনা থেকে বিরত থাকা; এবং আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
বিবাহ ও তালাক বিষয়ে বাংলাদেশ মুসলিম নিকাহ রেজিস্ট্রার কল্যাণ সমিতির ১৫ দফা দাবিগুলো হলো:
নিকাহ রেজিস্ট্রারদের সুরক্ষা আইন প্রনয়ন করতে হবে; নিকাহ্ রেজিস্ট্রার অস্থায়ী নিয়োগ বন্ধ রাখতে হবে। নিকাহ্ রেজিস্ট্রার নিয়োগের জন্য একটি নতুন কমিটি গঠন করে প্যানেলের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করতে হবে; নিকাহ্ রেজিস্ট্রারের সংশ্লিষ্ট যোগ্যতা সম্পন্ন সন্তানকে শূণ্য পদে পিতার স্থলে পুত্রকে সরাসরি নিয়োগ দানের বিধান রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; বাল্য বিবাহ রোধে বিবাহের ক্ষেত্রে কনের বয়স ১৬ এবং বরের বয়স ১৮ করতে হবে; নিকাহ্ রেজিস্ট্রারদের শিক্ষাগত যোগ্যতা আলিম পাশের পরিবর্তে কামিল করতে হবে; নিকাহ্ রেজিস্ট্রারদের ছুটি জনিত সময়ে নিকাহ্ রেজিস্ট্রার হওয়ার যোগ্যতা রাখে এমন ব্যক্তিকে উক্ত সময়ে দায়িত্ব প্রদানের বিধান রাখাতে হবে, যা পূর্বেও ছিল; প্রবাসীদের বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি নির্ধারণ করতে হবে; একাধিক স্বামী গ্রহণ ইসলামি শরিয়তে শান্তি যোগ্য অপরাধ, তাই যে সকল মহিলা পূর্বের স্বামীকে তালাক কার্যকর না করে বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে একাধিক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তাদের বিষয়ে শাস্তির বিধান প্রনয়ন করতে হবে।
এছাড়াও নিকাহ্ নামায় প্রদত্ত তথ্য ভুল হলে প্রয়োজনীয় সংশোধনের ব্যবস্থা রাখতে হবে; প্রত্যেকটি বিবাহ ও তালাক অফিসে এসে রেজিস্ট্রিকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে হবে; কনে যে এলাকার স্থায়ী বা অস্থায়ী বাসিন্দা সে এলাকার নিকাহ রেজিস্ট্রার উক্ত বিবাহটি নিবন্ধন করবেন মর্মে বিধান করতে হবে; নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বিবাহ ও তালাকের হলফনামা বন্ধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; নিকাহ্ রেজিস্ট্রারদের দাপ্তরিক কাজের জন্য অফিস সহায়ক রাখার বিধান রাখতে হবে; বিবাহ ও তালাকের বালামে কিছু সংযোজন, বিয়োজনও সংশোধন করতে হবে; এবং বিবাহ রেজিস্টার ভলিয়মে বর-কনের ছবি সংযুক্ত করণ ও ফিঙ্গার প্রিন্টের ব্যবস্থা করতে হবে।
এসময় নারী অধিকার সংস্কার কমিটির প্রতি ‘ইসলাম বিরোধী’ প্রস্তাবনা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে ৪ দফা সুপারিশ তুলে ধরেন মো: গোলাম কিবরিয়া।
সুপারিশগুলো হলো:
উত্তরাধিকার আইনে নারী-পুরুষের সমান অধিকার সুস্পষ্ট কুরআনের আইনের লঙ্ঘন যা প্রস্তাব বা বাস্তবায়ন থেকে দূরে থাকার আহবান জানাচ্ছি নয়তো সংস্কার করতে গিয়ে তাওহিদি জনতার রোষানলে পড়তে হবে; বিয়ে, বিয়ে বিচ্ছেদ, সন্তানের অভিভাবকত্ব, উত্তরাধিকারে সব ধর্মের নারী-পুরুষের জন্য অভিন্ন আইন থাকার প্রস্তাব করছে। এ প্রস্তাব সুস্পষ্ট ইসলাম ধর্মের অবমাননা। এ প্রস্তাবের তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এটা থেকে বিরত থাকার জন্য সংস্কার কমিটিকে আহবান জানাচ্ছি; হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানদের পারিবারিক আইন অবিলম্বে অভিন্ন ও সার্বজনীন পারিবারিক আইন প্রণয়ন করতে হবে মর্মে উল্লেখ্য করা হয়েছে। সংস্কারের নামে অনৈসলামি ও অধার্মিক প্রস্তাবনা দিয়ে বর্তমান সরকারকে ব্যর্থ করার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করি বর্তমান ড. মো: ইউনুস সরকার ধর্মের উপর আঘাত আসে এমন কোন কাজে হাত দিবেন না; এবং নারী অধিকার সংস্কার কমিটিতে কয়েকজন অভিজ্ঞ আলেমকে সংযুক্ত করে তারপর সংস্কার প্রস্তাব পেশ করার পর অভিজ্ঞ আলেম সমাজের মাধ্যমে যাচাই-বাচাই করে তা আইনে পরিনত করার আহবান জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে ‘বিবাহ কর’ বাতিল করায় আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের প্রতি বাংলাদেশ মুসলিম নিকাহ্ রেজিস্ট্রার কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুসলিম নিকাহ্ রেজিস্ট্রার কল্যাণ সমিতির সভাপতি কাজী মো: মামুনুর রশিদ, সহ-সভাপতি প্রিন্সিপাল নজরুল ইসলাম তালুকদার, মহাসচিব এড. কাজী মাওলানা মো: আবুল হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মো: আশরাফ উদ্দিন ভূঁইয়া সায়েম প্রমুখ।
জনতার আওয়াজ/আ আ
