ভারতকে ডিস্টার্ব করতে বাংলাদেশে ঢুকেছে চীন, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সতর্ক সংকেত - জনতার আওয়াজ
  • আজ রাত ৩:৪৮, বৃহস্পতিবার, ২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি
  • jonotarawaz24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

ভারতকে ডিস্টার্ব করতে বাংলাদেশে ঢুকেছে চীন, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সতর্ক সংকেত

নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ: মঙ্গলবার, জানুয়ারি ৯, ২০২৪ ২:২৬ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: মঙ্গলবার, জানুয়ারি ৯, ২০২৪ ২:৪৫ অপরাহ্ণ

 

রিতেশ ঘোষ

ভারতের প্রতিবেশী বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে গত মাসে বিশ্বের বহু অংশের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। বিরোধীদের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই ব্যাপকভাবে এই নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছে। এই দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে শুধু সে কারণে নয়। এটা হয়েছে এ অঞ্চলে ভৌগলিক অবস্থান ও ভূরাজনৈতিক কারণে। এ জন্য বহুবার সংবাদ শিরোনাম হয়েছে বাংলাদেশ। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশ শুধু ভারতের ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশীই নয়, একই সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে তারা চীনেরও ঘনিষ্ঠ অন্যতম অংশীদার। সম্প্রতি বাংলাদেশের বিরোধী দল অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশে কোনো গণতান্ত্রিক মূল্য অবশিষ্ট নেই, যার অধীনে নির্বাচন হতে পারে। এ জন্য তারা নির্বাচন বর্জন করেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কিছু দেশ। যদিও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারত কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থেকেছে, তখন কিন্তু বাংলাদেশে নির্বাচন কিভাবে হচ্ছে তা নিয়ে শেখ হাসিনাকে সমর্থন করেছে চীন ও রাশিয়া।

প্রকৃতপক্ষে পরোক্ষে তারা যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলাতে।
যুক্তরাষ্ট্র বনাম চীন
এটা বিস্ময়কর কোনো ঘটনা নয় যে, বিশ্বের দুই শক্তিধর দেশ বাংলাদেশ ইস্যুতে জড়িয়ে একে অন্যকে হুমকি দিচ্ছে। শেখ হাসিনার বাংলাদেশ বিশ্ব মানচিত্রের এমন একটি অবস্থানে যে, এতে তাদেরকে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের কাছেই সুপার অত্যাবশ্যকীয় করে তুলেছে। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নেই শুধু সহায়তা করছে চীন এমন নয়। একই সঙ্গে প্রতিরক্ষা খাতে চীন সরকারের কাছ থেকে সহায়তা নিচ্ছে বাংলাদেশ। গত দশকে শেখ হাসিনার সরকারকে অস্ত্র, রশদ, সামরিক ট্যাংক এবং যুদ্ধবিমান সরবরাহ দিয়েছে চীন। চীনের কাছ থেকে সাবমেরিন কিনেছে বাংলাদেশ।

কৌশলগত সমুদ্রবন্দর: বাংলাদেশে চীনের অর্জন
এর অর্থ হলো মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, পাকিস্তান ও অন্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশকে তাদের ওপর খুব বেশি নির্ভরশীল হতে কৌশলগতভাবে বাধ্য করছে চীন। এক্ষেত্রে চীনের মূল উদ্দেশ্য হলো ভারতের কাছে বাংলাদেশের নোঙরে পৌঁছা, যাতে তারা নয়া দিল্লির ওপর দৃষ্টি রাখতে পারে। মেগা অবকাঠামো উন্নয়নের নামে চীনের মূল উদ্দেশ্য হলো ইউনান প্রদেশ থেকে বাংলাদেশের বন্দরের সুযোগ পাওয়া, যা ভারতের খুব কাছে।

বিরক্ত যুক্তরাষ্ট্র
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র যখন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে অধিক পরিমাণে উদ্বিগ্ন, তখন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শক্তির লড়াই চলছে। সেটা হলো ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড এবং বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে সমর্থন দিয়ে কে তাদের ঘনিষ্ঠ হতে পারে। এটা আসলে দক্ষিণ চীন সাগর, আন্দামান সাগর ও ভারত মহাসাগরের কিছু এলাকাকে নিয়ন্ত্রণ করায় শক্তির লড়াই।

বাংলাদেশের ভারসাম্য রক্ষা
মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অগণতান্ত্রিক পরিবেশে ভোটের অভিযোগে বাংলাদেশের নির্বাচনে যখন কোনো প্রভাব রাখতে ব্যর্থ হলো যুক্তরাষ্ট্র, তখন বিরোধী দলগুলোর বর্জনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে পরিষ্কার ক্ষমতায় ফিরছেন শেখ হাসিনা। সুতরাং ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের জন্য কূটনৈতিক এবং ভূরাজনৈতিকভাবে চ্যালেঞ্জের পাহাড় তৈরির সূচনা বিন্দু হচ্ছে বাংলাদেশে চীনের প্রবেশ। ভারতের কাছে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যেকোনো মূল্যে তারা ভারতের সঙ্গে ‘গ্রেট’ বন্ধুত্ব বজায় রাখবে। ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষতি করতে বিদেশি কোনো শক্তিকে তার মাটি ব্যবহার করতে দেবে না। বাংলাদেশ আরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, বাংলাদেশে চীনের ভূমিকাকে দেখা উচিত একটি উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে। ভারতের মতো কৌশলগত অংশীদার নয় চীন। কিন্তু বাস্তবে, বাংলাদেশের মতো একটি দেশ যখন তার ‘গিয়ার’ পরিবর্তন করে তখন সে চীনকে আর ম্যানেজ করতে পারে না।
(অনলাইন ওয়ান ইন্ডিয়া থেকে অনূদিত)সূত্রঃমানবজমিন

Print Friendly, PDF & Email
 
 
জনতার আওয়াজ/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ