রেলওয়ের জায়গায় বাজার, নীরব কর্তৃপক্ষ
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
মঙ্গলবার, জুন ১১, ২০২৪ ৬:০৫ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
মঙ্গলবার, জুন ১১, ২০২৪ ৬:০৫ অপরাহ্ণ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের পাশেই রেলওয়ের মালিকানাধীন একটি পুকুর রয়েছে। একটি অসাধু চক্র দীর্ঘদিন ধরেই ময়লা আর্বজনা ফেলে পুকুরের একাংশ ভরাট করে ফেলেছে। এ ভরাটকৃত জায়গা দখলের জন্য বসিয়েছে একটি বাজার, যা বউ বাজার নামে পরিচিত।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এ অবৈধ বাজার থেকে একটি অসাধু চক্র ক্রেতাদের কাছ থেকে প্রতিদিন দুইশত হতে তিনশত টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করে যা দৈনিক প্রায় চল্লিশ হতে ষাট হাজার টাকার মতো উঠে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বউ বাজার ইজারাকৃত জামাল মিয়া বলেন, আমরা পৌরসভা থেকে নয় লক্ষ পঁচাত্তর হাজার টাকা দিয়ে বাজারটি লিজ নিয়েছি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রেলওরের ভূ-সম্পদ কর্মকর্তার বরাদ দিয়ে একটা সাইনবোর্ড টানানো আছে। যাতে লিখা আছে এই জায়গার মালিক বাংলাদেশ রেলওয়ে, এখানে বাজার বসানো সম্পূর্ণ নিষেধ। যা রেলওয়ের ভাষ্য মোতাবেক এই বাজারটি সম্পন্ন অবৈধ। এর পাশেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা ১২৬২ স্মারক নাম্বারে একটা সাইনবোর্ড টানিয়ে রেখেছে যেখানে দুইজন ব্যক্তিকে ৯,৭৫,০০০ হাজার টাকার বিনিময়ে তারা বাজারটি ইজারা দিয়েছেন। কিন্তু এখানে রেলওয়ে কৃর্তপক্ষ ব্যানার টানানোতেই সীমাবদ্ধ, দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও রেলওয়ে কৃর্তপক্ষের ভূমিকা ছিলো নিরব। এখন জনমতে প্রশ্নে উঠে রেলওয়ের নিজস্ব জায়গা ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা কিভাবে ইজারা দিয়ে বাজার বসানোর অনুমতি দেয়। যার এখতিয়ার পৌরসভার নেই।
এই বিষয়ে নদী ও প্রকৃতি সুরক্ষা বিষয়ক সংগঠন তরী বাংলাদেশের আহবায়ক শামিম আহমেদ জানান, যেহেতু জায়গাটি বাংলাদেশ রেলওয়ের সেহেতু এই জায়গার লিজ দেওয়া না দেওয়ার এখতিয়ার শুধুমাত্র বাংলাদেশ রেলওয়ের। যদি কেউ বা অন্য কোনো ডিপার্টমেন্ট লিজ বা দখলে নিয়ে থাকে তবে তা হবে সম্পূর্ণ বেআইনি। এখানে বাংলাদেশ রেলওয়ের নিরবতায় অসৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। বাজারটি লিজ বা অন্য কোনোভাবেই পাশে থাকা জলাধারটি ভরাট করতে পারে না!
আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ খেয়াল করছি যে, কৌশলে বাজার সম্প্রসারণের নামে জলাধার ভরাটে অপচেষ্টা করছে একটি মহল যা কোনো অবস্থাতেই কাম্য নয়। এখানে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিবেশ আইন প্রয়োগ করার যথেষ্ট সুযোগ থাকলেও অধিদপ্তরের নিরবতায় হতাশ তরী বাংলাদেশ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার জসিম উদ্দিন জানান, এই সম্পত্তি রেলওয়ের, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা কোনভাবেই ইজারা দিতে পারে না। আমি রেলওয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তারা সরেজমিনে এসে পরিদর্শন করে গেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল প্রধান ভূ-সম্পদ কর্মকর্তা সুজন চৌধুরী 01711506129 নাম্বারে কল করলে কল কেটে দিয়ে এসএমএসের মাধ্যমে ডিভিশনাল স্ট্রেট অফিসারের নাম্বার প্রেরণ করে উনার সাথে যোগাযোগ করার কথা বলেন। ডিভিশনাল স্ট্রেট অফিসারের এই নাম্বারটি 01711691611 বেশ কয়েকবার কল করার চেষ্টা করলে নাম্বারটি ডিএকটিভ দেখায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল কুদ্দুস এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারে জায়গা সরকার ইজারা দিয়েছেন আপনার কি সমস্যা, আপনার কোন সমস্যা আছে? নিশ্চয় পৌরসভা আর রেলওয়ে এক নয়।
পৌরসভা রেলওয়ের জায়গা ইজারা দিতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পৌরসভার আইনে মেয়র এই বাজার ইজারা দিয়েছেন। জায়গা কার দেখার বিষয় না, বাজারটি যেহেতু পৌর এলাকার সেই আইনের বলে পৌরসভা এই উদ্যোগ নিয়েছেন।