শহীদ জিয়ার দর্শন-ভাবনা আমাদের ধারণ করতে হবে: আমির খসরু
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
শনিবার, জানুয়ারি ১৮, ২০২৫ ৮:৩৮ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
শনিবার, জানুয়ারি ১৮, ২০২৫ ৮:৩৮ অপরাহ্ণ

জনতার আওয়াজ ডেস্ক
বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেছেন, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। বিগত ফ্যাসিবাদ সরকার আমাদের ভোটের অধিকার হরণ করেছে। আমরা বিগত দিনে ভোট দিতে পারিনি। ভোট একটি নাগরিক অধিকার।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে টাঙ্গাইলের আশিকপুর এবং পুরোনো বাসস্ট্যান্ডে সিএনজি, অটো টেম্পুর অসহায়, গরিব শ্রমিকদের মাঝে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১৭ বছরে ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে ফ্যাসিবাদী সরকার। তারপরও বিএনপি নেতাকর্মীরা জনগণের সঙ্গে ছিল। দেশে ভোটের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
সুলতান সালাউদ্দিন বলেন, অনেকেই অনেক কথা বলছে সংস্কার আগে না নির্বাচন আগে। আমরা বলতে চাই, সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এটি চলতেই থাকবে। নির্বাচন জনগণের অধিকার। জনগণ পছন্দের মতো একটি সরকার প্রতিষ্ঠিত করবে। এই দেশের মালিক হচ্ছে দেশের জনগণ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক শানু, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক রাশেদুল আলম, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুর রহমান খান শফিক ও যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য সৈয়দ শহিদুল আলম টিটু প্রমুখ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আমাদের রাজনীতিতে একটি গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে। ধারাবাহিক রাজনৈতিক বক্তব্য দিলে মনে হয় বাংলাদেশের জনগণ আর মেনে নিতে পারবে না। শেখ হাসিনা বিদায় হওয়ার পর দেশের মানুষ বিরাট একটি মনোভাব তৈরি করেছে। মানুষের মনে যে প্রত্যাশা জেগেছে যে আকাঙ্ক্ষা দেখেছে যে নতুন বাংলাদেশ দেখতে চাচ্ছে সেটি আমাদের ধারণ করতে হবে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক হিসেবে ধারণ করতে হবে, দল হিসেবে ধারণ করতে হবে। নতুন বাংলাদেশ কীভাবে গড়ব আমরা প্রত্যেকটি বিষয়ের উপর অবস্থান থাকতে হবে। যাতে সরকার ক্ষমতায় আসার সাথে সাথেই তারা দেশের প্রত্যেকটি সেক্টরে কাজ করতে পারে।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের মুক্ত চিন্তা বাংলাদেশের উদ্যোগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯ জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যার জন্য আমরা ১৬ বছর ধরে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি, জেল খেটেছি অনেক নেতাকর্মীর খুন, গুম হয়েছে, সেই স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে বিদায় করেছি, বাংলাদেশ আজ মুক্ত। তবে মুক্ত চিন্তা ব্যতীত কোনো জাতি সামনের দিকে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আজকের সরকার আর কি করতে পারতো, প্রতিবাদের সাথে সাথে আমরা কি করব, আগামী দিনে সরকার কি করবে বিএনপি কি করবে কি ভাবছেন এজন্য জনগণকে আনতে হবে।
তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী অর্থনীতি একটি গর্বিত জাতি হিসেবে স্বাধীন রাষ্ট্র যেখানে গর্বের মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে পারতেন সেই বিষয়টি আমাদের লক্ষ্য রেখে কাজ করতে হবে তার দর্শন তার ভাবনা আমাদের ধারণ করতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান কোথায় আছে সেই বিষয়টি আগামীতে কিভাবে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সঠিকভাবে নিয়ে আসার জন্য আমরা কি করব, স্বাস্থ্য খাত অনেক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় আমরা স্বাস্থ্য সেবা কীভাবে জনগণের সেবায় নিয়োজিত করতে পারব সে বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। সেজন্য জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে।
বিএনপির এই শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, জিয়াউর রহমান সাহেব একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। ক্ষমতা নেওয়ার পর তিন বছর ছিল। তিন বছরের মধ্যে এরকম একজন মানুষ তিনি সবকিছুকে ভেঙে ফেলে তৈরি করেছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেন। কৃষক শ্রমিক ব্যবসায়ী প্রত্যেকটি বিষয়ের উপর তিনি নজর রাখতেন। সেই বিষয়টি আমাদের অনুসরণ করতে হবে। তিনি শুধু একজন রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন না সরকার প্রধান ছিলেন না একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। জিয়াউর রহমান একজন আর্মি জেনারেল ছিলেন, যিনি সম্মুখ যুদ্ধ করে দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি একজন সংস্কারক ছিলেন। সুতরাং জিয়াউর রহমান সম্পর্কে বলতে গেলে শেষ হবে না। তার দর্শন আমাদের মধ্যে চলে আসে। দেশের সর্বস্তরের মানুষের কথা চিন্তা করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড তৈরি করেছিলেন। অর্থনীতি প্রত্যেকটি মানুষের সমান অধিকার থাকবে।
তিনি বলেন, তারেক রহমান বলেছেন, কোনো প্রতিহিংসার রাজনীতি হবে না। যারা অপরাধ করেছে তাদের সঠিক বিচার করে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। যারা খুন হয়েছে গুম হয়েছে তাদের পরিবারের সাহায্য সহযোগিতা করতে হবে এবং যারা অপরাধ করেছে তাদের সঠিক বিচার করতে হবে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার জন্য ফ্যাসিস্ট রেজিম তৈরি করে দেশের সকল প্রতিষ্ঠান একদলীয় কায়েম করে ধ্বংস করে দিয়েছে এমনকি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ধ্বংস করেছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী অর্থনীতি একটি গর্বিত জাতি হিসেবে স্বাধীন রাষ্ট্র যেখানে গর্বের মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে পারতেন সেই বিষয়টি আমাদের লক্ষ্য রেখে কাজ করতে হবে তার দর্শন তার ভাবনা আমাদের ধারণ করতে হবে। জিয়াউর রহমান কারো বিরুদ্ধে সরাসরি তার বক্তব্য ফলো করেনি। তিনি যে কাজগুলো করতেন সেইটা তিনি বলতেন কারো সাথে বিদ্বেষপূর্ণ কোনো বক্তব্য ছিল না।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন— উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডক্টর এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস এ ইসলাম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডক্টর শামীমা সুলতানা, কবি জাকির আবু জাফর প্রমুখ।
জনতার আওয়াজ/আ আ
