শান্তি প্রতিষ্ঠায় তথ্যের সততা নিশ্চিতের অঙ্গীকার করতে হবে - জনতার আওয়াজ
  • আজ রাত ৪:৩৯, বুধবার, ২৬শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
  • jonotarawaz24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

শান্তি প্রতিষ্ঠায় তথ্যের সততা নিশ্চিতের অঙ্গীকার করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ: শনিবার, জুন ২৯, ২০২৪ ৪:২৮ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: শনিবার, জুন ২৯, ২০২৪ ৪:২৮ অপরাহ্ণ

 

জনতার আওয়াজ ডেস্ক

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সবার আগে তথ্যের সততা নিশ্চিতের অঙ্গীকার করতে হবে। ভিন্ন মত থাকা সমাজের একটা সৌন্দর্য, গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু যেখানে একমত হতে হবে সেটি হচ্ছে, সত্য ও সঠিক তথ্য বলতে হবে। সত্য আগে স্বীকার করতে হবে। তার পর ভিন্ন মতামত দিতে হবে। তথ্যই যদি বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয় এবং এর মাধ্যমে যদি একটা চিন্তা তৈরি করা হয়-এটা ভালো, ওটা খারাপ তাহলে সেটা সমাজে কারো মঙ্গল বয়ে আনবে না। কাজেই আমাদের অঙ্গীকার করতে হবে যে, আমরা তথ্যের জায়গায় সততা নিশ্চিত করবো।

শনিবার (২৯ জুন) দুপুরে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ-এর কনভেনশন হলে পিস অ্যাম্বাসেডর’স জাতীয় সম্মেলন ২০২৪ এ সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ এর উদ্যোগে, ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি)-এর সহযোগিতায় এবং ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস এর অংশীদারিত্বে এ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, তথ্য যাচাই-বাছাই করা আমাদের দায়িত্ব। সত্য মেনে নেয়ার দৃষ্টিভঙ্গি না থাকলে, রাজনীতির সাথে মিলিয়ে তথ্য বিকৃত করলে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে না। আগে অঙ্গীকার করতে হবে যে, আমি যে রাজনৈতিক ধ্যান-ধারণায় বিশ্বাস করি না কেনো, তথ্যের জায়গায় আমি নিশ্চিত করতে চাই আমার সততা। সেই তথ্য, যেটা সত্য। সত্য কারো পক্ষে যাবে, কারো বিপক্ষে যাবে। সত্য যেদিকেই যাবে সেটা মেনে নিতে হবে। কিন্তু এই সমাজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনেক জায়গায় অনেক ক্ষেত্রে মিথ্যাচার হয়। শুধু আমার রাজনৈতিক চিন্তার পক্ষে গেছে বা যে লোকটিকে আমি রাজনৈতিকভাবে অপছন্দ করি তার বিপক্ষে গেছে এজন্য যতই মিথ্যা হোক সেটা আমি আরো দশ জনকে প্রচার করি। এটি ন্যায়সঙ্গত নায়।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে এমন কিছু ঘটনা-দুর্ঘটনা ঘটে গেছে ও ঘটানো হয়েছে, যে কারণে বাংলাদেশের রাজনীতি আজ দাঁড়িয়ে আছে দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের ওপরে। বাংলাদেশের ‘৭৫ এর ১৫ আগস্ট এর মতো ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশের রক্তের ইতিহাস আছে। তার ওপর দিয়ে বিভক্তি ও দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হওয়ার অনেক কারণ আছে। তবে দ্বন্দ্ব ও সংঘাত দল-মত নির্বিশেষে আমাদের সবাইকে পেছনে নিয়ে যাবে।

তিনি যোগ করেন, রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকা প্রয়োজন, ভিন্ন মত থাকা প্রয়োজন। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতা, প্রতিযোগিতা হবে ইতিবাচক, নেতিবাচক নয়। প্রতিদ্বন্দ্বিতা দ্বন্দ্ব-সংঘাতে পরিণত হয় যখন নেতিবাচকতা চলে আসে। নিজের সক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে, নিজের শ্রম, মেধা ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে ইতিবাচকভাবে এগিয়ে যাওয়া প্রয়োজন প্রতিটি ব্যক্তি পর্যায়ে, দলগত এবং গোষ্ঠী পর্যায়ে। যদি আমরা ইতিবাচক প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবেশ তৈরি করতে পারি তাহলে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে।

মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, বাংলাদেশের প্রশ্নে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এ দেশের জন্ম এবং আজ এ দেশের এগিয়ে যাওয়া। সেই মূল জায়গায় কোন আপোষ চলবে না। বাংলাদেশের জন্ম যেখানে, যে চেতনা ধরে, সেখানে কোন আপোষ চলবে না। তার বাইরে আমাদের সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের গোড়ায় গিয়ে সকল দল-মত নির্বিশেষে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

তিনি এ প্রসঙ্গে আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী যে অপশক্তি, মৌলবাদী যে অপশক্তি, সেই ধরণের উগ্রবাদী কোনো অপশক্তিকে আমরা গণতান্ত্রিক পরিবেশে কোনো জায়গা দিতে চাই না। কারণ তারা গণতন্ত্রকে, মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে এবং শান্তিকে বিনষ্ট করে। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য অপশক্তিগুলোকে বাদ দিয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

প্রতিমন্ত্রী যোগ করেন, আশা করি আগামী দিনে আমরা পৃথিবীর অন্যান্য দেশকে দেখিয়ে দিতে পারবো যে, এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে, মতবিরোধ আছে, ভিন্ন মত আছে, কিন্তু শান্তিও প্রতিষ্ঠিত আছে। দ্বন্দ্ব-সংঘাতের বাইরে আমরা রাজনীতিকে নিতে পারব বলেও আশা করি। ভিন্ন মত, তর্ক-বিতর্ক সবকিছু থাকবে। আওয়ামী লীগ-বিএনপি আমরা তর্কের যুদ্ধ, কথার যুদ্ধ করবো। আমাদের মধ্যে ভিন্ন মতের জায়গা থাকবে, কিন্তু কোনো দ্বন্দ্ব-সংঘাত-সহিংসতায় জড়ানো ঠিক হবে না। এগুলো থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ এর গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. বদিউল আলম মজুমদারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রানা মো. সোহেল, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম প্রমূখ।

Print Friendly, PDF & Email
 
 
জনতার আওয়াজ/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ