সরকারি প্ররোচনায় ২৮ অক্টোবরের সহিংসতা, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একত্রে কাজ জরুরি - জনতার আওয়াজ
  • আজ রাত ১:১২, শুক্রবার, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • jonotarawaz24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

সরকারি প্ররোচনায় ২৮ অক্টোবরের সহিংসতা, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একত্রে কাজ জরুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ: মঙ্গলবার, অক্টোবর ৩১, ২০২৩ ২:২৮ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: মঙ্গলবার, অক্টোবর ৩১, ২০২৩ ২:২৮ অপরাহ্ণ

 

রাইট টু ফ্রিডমের ওয়েবিনারে বক্তারা

নিউজ ডেস্ক
২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন সারা দুনিয়ার নির্বাচনী ইতিহাসে কালো এক অধ্যায়। ২০১৮ সালের নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলেও অবাধ ও সুষ্ঠু হয় নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে এর আগে অনুষ্ঠিত ৪টি নির্বাচনই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিকট গ্রহণযোগ্য হয়েছে। ২৮ অক্টোবরের সহিংসতা সরকারের প্ররোচনারই অংশ। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একসঙ্গে কাজ করা জরুরি।

সোমবার (৩০ অক্টোবর) ওয়াশিংটনভিত্তিক অধিকার সংগঠন-রাইট টু ফ্রিডম আয়োজিত ‘বাংলাদেশ’স ইলেকশনস: ওভারকামিং দ্য ইন্টেগ্রিটি ডেফিসিট’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এমন সব মন্তব্য করেছেন। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অ্যাম্বাসেডর উইলিয়াম বি মাইলাম। ইন্টারন্যাশনাল আইডিইএ’র এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা এন্টনিও স্পিনেলি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত রাজনৈতিক এবং নির্বাচনী ডাইমেনশনে প্রয়োজনীয় সংস্কার না আনা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনী পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করা যাবে না।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে হলে যেসব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাদের অংশগ্রহণ থাকতে হবে। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন মানে সাধারণ মানুষ নিরাপদে ভোট দিয়ে বাসায় ফিরে যেতে পারবে। ২০১৪ সালের নির্বাচন সারা দুনিয়ার নির্বাচনী ইতিহাসে কালো এক অধ্যায়। বাংলাদেশের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকাটা বেআইনি নয়, তবে সেটা অনৈতিক।

নিরপেক্ষ প্রশাসন তথা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে বাংলাদেশের এর আগে অনুষ্ঠিত ৪টি নির্বাচনই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলেও অবাধ ও সুষ্ঠু হয় নি। রাতেই ব্যালট বাক্স ভর্তি করা হয়েছে, সকালেই নির্বাচন শেষ হয়ে গেছে। ঢাকার উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে (হিরো আলম) মারার সময় পুলিশ বোবা হয়ে ছিল। বর্তমানে নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে নামালেও তারা নিজেরা মেজিস্ট্রেটের কথা ছাড়া একশনে যেতে পারে না। অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে আমাকে বলেছেন, গত দুটি নির্বাচনে তাদেরকে কিছুই করতে বলা হয় নি। এই হাইব্রিড সরকারের আমলে সবকিছুতে রাজনীতি ঢুকানো হয়েছে। ৯০% সরকারি কর্মকর্তা পক্ষপাতদুষ্ট।

ইংরেজি দৈনিক ‘নিউ এজ’ সম্পাদক নূরুল কবীর বলেন, গত দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারে নি। তত্বাবধায়ক সরকার বহালের জন্য বিরোধীদের এবং জনগণের দাবির প্রতি সরকার কোনো গুরুত্ব দেয় নি। সরকারের লোকজনের কথায়, সহিংসতা না করতে পারলে আন্দোলন হয় না। ২৮ অক্টোবরের সহিংসতা সরকারের প্ররোচনার অংশ। বর্তমান সরকার অতীতে এতো খারাপ কাজ করেছে যে তাদের জন্য ক্ষমতা ত্যাগ করা কঠিন। গোটা রাষ্ট্রযন্ত্রকে রাজনীতিকরণ করে সরকার ভাবছে এভাবে টিকে থাকা যাবে। কিন্তু, তাদের মানুষের কথা শোনা উচিত। প্রধানমন্ত্রী জানেন, কিভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হয়।

মার্কিন সরকারের অধীন বেসামরিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি’র গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং সুশাসন বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা জেফ্রি ভ্যানাস বলেন, নির্বাচন একদিনের বিষয় নয়। এটা একটা প্রক্রিয়া।

যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেন, ওয়াশিংটনভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) জনমত জরিপ বলছে- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে দেশের ৪৪ শতাংশ মানুষ। পরিসংখ্যান বলছে- র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র‍্যাব এবং এর সাতজন কর্মকর্তার উপর যুক্তরাষ্ট্রের টার্গেটেড স্যাংশনের ফলে অনেক মানুষের প্রাণ বেঁচেছে। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একসঙ্গে কাজ করার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সাবেক ডেপুটি চিফ অফ মিশন এবং রাইট টু ফ্রিডম এর বোর্ড মেম্বার জন এফ ড্যানিলোভিজের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে সমাপনী বক্তব্য রাখেন সংগঠনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মুশফিকুল ফজল আনসারী। সূত্রঃমানবজমিন

Print Friendly, PDF & Email
 
 
জনতার আওয়াজ/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ