সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ : সেলফি নিয়ে মাতামাতি ও হাতাহাতি চলছেই, চলবেই
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
বুধবার, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৩ ৩:০০ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
বুধবার, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৩ ৩:৩৮ অপরাহ্ণ

নিউজ ডেস্ক
একজন মা তার ছেলেকে ফোন করে বলছেন: বাবুরে, তুই তাড়াতাড়ি বাসায় আয়। ছেলে: কেন! কী হয়েছে?
মা: তোর বউ প্যারালাইসড হয়ে যাচ্ছে। ছেলে: কী বলছো! বুঝলে কীভাবে? মা: বউয়ের ঠোঁট, মুখ, হাত, ঘাড় বাঁকা হয়ে যাচ্ছে! ছেলে (হেসে): ওর কিছু হয়নি মা। ও আসলে সেলফি তুলছে। সেলফি নিয়ে এমন নানা কৌতুক প্রায়ই শোনা যায়। বিশেষ করে ঈদের আগে কোরবানির পশুর সঙ্গে ছবি তোলা নিয়ে একটি উপদেশ বেশ জনপ্রিয়: গরুর সঙ্গে আপনি সেলফি তুলুন, অসুবিধা নেই। তবে অনুরোধ একটাই, এমনভাবে তুলবেন যাতে কোনটা আসল গরু সেটা সহজে চেনা যায়।
সেলফি নিয়ে মজার মজার আর চমকপ্রদ সব খবর প্রায়ই কানে আসে। সেলফি তুলতে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করে মারা যাওয়ার খবরও শোনা যায়। শুনতে অবাক লাগে যে, সবচেয়ে কম সময়ে সবচেয়ে বেশি সেলফি তোলার রেকর্ডটি কোনো ফটোগ্রাফারের নয়, সাধারণ কোনো মানুষেরও নয়। এই রেকর্ডটির মালিক এখন বলিউড সুপারস্টার অক্ষয় কুমার।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের ২৪ তারিখ মাত্র ৩ মিনিট বা ১৮০ সেকেন্ডে ১৮৪টি সেলফি তুলে গিনেস বুকে নাম ওঠান অক্ষয়। ওই রেকর্ডের নেপথ্যের কারিগরও ‘সেলফি’ নামের একটি মুভি। অক্ষয় কুমার এবং আরেক বলিউড হিরো ইমরান হাশমি অভিনীত সেলফি তখন মুক্তির অপেক্ষায়। মুম্বইয়ে মুভিটির প্রচারের জন্য ভক্তদের নিয়ে ‘গ্র্যান্ড মিট’-এর আয়োজন করেছিলেন অক্ষয়। সেখানেই মাত্র ৩ মিনিটে ১৮৪টি সেলফি তুলে ফেলেন অক্ষয়। আর, তাতেই হয়ে যায় নতুন রেকর্ড। এর আগে, ৩ মিনিটে ১৬৮টি সেলফি তুলে রেকর্ডটি দখলে রেখেছিলেন আমেরিকার জেমস স্মিথ।
বিশ্বের নানান দেশের খেলোয়াড়, রাজনীতিবিদ, বিনোদন জগত থেকে শুরু করে বিভিন্ন জগতের তারকাদের সঙ্গে প্রতিদিন সেলফি তুলছেন কোটি কোটি ভক্ত-অনুরাগী। কিন্তু, যত্রতত্র কিংবা বিনা অনুমতিতে তাদের সঙ্গে সেলফি তুলতে গিয়ে ভক্তরা অনেক সময় বাধা-বিপত্তি থেকে শুরু করে অপমান কিংবা শাস্তিরও সম্মুখীন হন। এই যেমন মাস চারেক আগে সেলফি তুলতে আসা ভক্তকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেন ভক্তবান্ধব হিসেবে পরিচিত বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান। নিজের অভিনীত মুভি ‘ডানকি’র শুটিংয়ের জন্য কাশ্মীরে গিয়েছিলেন শাহরুখ। শুটিং সেরে মুম্বই বিমানবন্দর দিয়ে আসার সময় বেশকিছু ভক্ত তাকে ঘিরে ধরেন। তাদেরই একজন এগিয়ে এসে সেলফি তোলার জন্য নিজের মুঠোফোনটি শাহরুখের দিকে বাড়িয়ে দেন। সঙ্গে সঙ্গেই মেজাজ হারিয়ে শাহরুখ ওই মোবাইলটি সরিয়ে দেন। শুধু তাই নয়, সেলফি তুলতে চাওয়া ভক্তকে ধাক্কা মেরে চলে যান। গোটা ঘটনাটি আবার ভিডিও করছিলেন আরেকজন ভক্ত। শাহরুখের মেজাজ হারানোর দৃশ্য ধরা পড়ে যায় ওই ভিডিওতে। ভিডিওটি মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। ভক্তের প্রতি শাহরুখের এমন আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেন নেটিজেনরা। অনেকেই আবার প্রশ্ন তুলেন, অন্যকোনো কারণে কি মেজাজ খারাপ ছিল শাহরুখের? এমন ঘটনা নতুন নয়। শাহরুখের ভিডিওটি প্রকাশের কিছুদিন আগে ভাইরাল হওয়া আরেক ভিডিওতে দেখা যায়, বলিউড সুপারস্টার সালমান খানের এক ভক্ত তার পাশে দাঁড়িয়ে সেলফি নিতে সঠিক ফ্র্রেম পাওয়ার জন্য বার বার ক্যামেরায় ক্লিক করতে থাকলে এক সময় মেজাজ হারান তিনি।
তবে, বলিউড খানেরা যতই ভক্তদের সেলফি তুলতে বাধা দেন না কেন, হাল আমলে সেলফি এক ধরনের ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। স্মার্টফোন ব্যবহার করেন কিন্তু কখনো সেলফি তোলেননি এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে, কিন্তু সে সংখ্যাটা নেহায়েত হাতেগোনা। সেলফি নিয়ে চারিদিকে এত মাতামাতি যে এনিয়ে একটি দিবসও পালন করা হয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছরের ২১শে জুন ‘সেলফি দিবস’ পালন করা হলেও বিশ্বের অনেক দেশেই অনেকে এখন সেলফি দিবস পালন করে থাকেন। ২০১৪ সাল থেকে প্রতি বছর ২১শে জুন আমেরিকানরা ‘জাতীয় সেলফি দিবস’ পালন করে আসলেও ২০১৯ সাল থেকে ঠিক তার পরের দিন বিশ্বজুড়ে (২২শে জুন) ‘আন্তর্জাতিক সেলফি দিবস’ পালন করা হচ্ছে। এ দিবসকে কেন্দ্র করে নানা অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হচ্ছে।
স্মার্টফোন আর ইন্টারনেটের দুনিয়ায় হাল আমলে সেলফি তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করলেও অনেকেরই হয়তো জানা নেই, প্রথম সেলফিটি তোলা হয়েছিল প্রায় দুইশো বছর আগে! বিশ্বের প্রথম সেলফির কৃতিত্ব দেয়া হয় মার্কিন রসায়নবিদ রবার্ট কর্নেলিয়াসকে। তিনি ওই সেলফিটি ১৮৩৯ সালে তুললেও তখন সেটি সেলফির মর্যাদা পায়নি। কারণ, এ নিয়ে কোনো ধারণাই ছিল না কারও। যাইহোক, কর্নেলিয়াস নিজেদের ঝাড়বাতির দোকানের পেছনে নিজের ওই ছবিটি তুলেছিলেন। তিনি ক্যামেরা সেটআপ করে নিজের ছবি তোলার জন্য ফ্রেমে ছুটে যান। আর এভাবেই ‘ডাগুয়েরোটাইপ’ পদ্ধতিতে তিনি বিশ্বের প্রথম ‘সেলফি’তে ক্লিক করে বসেন। প্রথম চাঁদে যাওয়া নভোচারীদের কথা বললেই ভেসে ওঠে তিনটি নাম: নিল আর্মস্ট্রং, বাজ অলড্রিন ও মাইকেল কলিন্স। নিল আর্মস্ট্রং এবং মাইকেল কলিন্স মারা গেলেও বেঁচে আছেন শুধু বাজ অলড্রিন (৯৩)। তিনি ১৯৬৬ সালে জেমিনি ১২ মিশনের সময় নিজের একটি ছবি তুলেছিলেন। আজ থেকে ৫৭ বছর আগে তোলা ওই ছবিটিই হলো মহাকাশে তোলা প্রথম কোনো সেলফি।
এতকিছুর পরেও ‘সেলফি’ শব্দটির প্রথম দেখা মেলে ২০০২ সালে। নাথান হোপ নামের অস্ট্রেলিয়ান এক ব্যক্তি নিজের ২১তম জন্মদিনে মাতাল হয়ে সেলাই করা ঠোঁটের একটি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছিলেন, “ফোকাসের জন্য দুঃখিত। এটা একটা সেলফি ছিল।” পরের ইতিহাস সবারই জানা। ২০১২ সালের শেষে বিশ্বখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনের দৃষ্টিতে ‘সেলফি’ শব্দটি বছরের আলোচিত সেরা দশটি শব্দের একটি হিসেবে বিবেচিত হয়। পরের বছর অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারির অনলাইন ভার্সনে ‘সেলফি’ শব্দটি নতুন সংযোজিত হয়। স্যামসাং’র এক জরিপ প্রতিবেদন বলছে: ১৮-২৪ বছর বয়সীদের তোলা ছবিগুলোর শতকরা ৩০ ভাগই হলো সেলফি। বর্তমানে সেলফি উভয় লিঙ্গের মানুষের মাঝেই জনপ্রিয়তা লাভ করলেও অনেক সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, মূলত ‘পর্নো সংস্কৃতিতে’ ব্যবহারের মাধ্যমে সেলফির উত্থান ঘটে। কারণ, নিজের শরীর সুন্দরভাবে প্রদর্শনের মাধ্যমে অন্যকে আকৃষ্ট করার জন্যই নারীরা সেলফি তুলতেন।
এভাবে, সেলফি নিয়ে সারা দুনিয়াতেই চলছে ঢের মাতামাতি আর গবেষণা। বাংলাদেশেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সেলফি নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা জন্মলাভ করেছে। কিন্তু, অতি সম্প্রতি একটি সেলফি ওই সবকিছুকে হার মানিয়েছে। সম্প্রতি ভারতের রাজধানী দিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের সঙ্গে ওই সেলফিটি তোলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ছবিটির মাঝখানে রয়েছেন পুতুল যার বাম হাত মায়ের কাঁধে। ৩ জনের মুখেই হাসি। ছবিটি প্রকাশের পর মুহূর্তেই সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে ওই সেলফি সহ আরও কয়েকটি ছবি দ্রুত প্রকাশের নির্দেশনা দেয়ার একটি স্ক্রিনশটও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়ে।
এ পর্যন্ত ঠিকই ছিল। কিন্তু, ক’দিন আগেও আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল স্তরের প্রায় সকল নেতাকর্মীরা যেখানে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রকাশ্যে তুলোধুনো করছিলেন, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেই দেশের প্রেসিডেন্টের ছবি প্রকাশের পর দলটির দ্বিতীয় শীর্ষনেতা ওবায়দুল কাদের উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন। বাইডেনের এক সেলফিতে বিএনপি নেতাদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে বলে তিনি (০৯ই সেপ্টেম্বর) মন্তব্য করেন। আর, তাতেই শুরু হয়ে যায় পাল্টাপাল্টি কথার লড়াই। পরদিনই (১০ই সেপ্টেম্বর) এই মুহূর্তে বিএনপি’র অন্যতম শীর্ষনেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে বলেন, “ওই ছবি গলায় ঝুলিয়ে জনগণকে বোঝান বাইডেন এখন আমার সঙ্গে আছে।” সেলফির জন্য র্যাবের ওপর থেকে স্যাংশন উঠেনি, ভিসা নীতির পরিবর্তন হয়নি, নতুন ডেমোক্রেসি কনভেনশনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলেও তিনি মন্তব্য করেন। কিন্তু, ফখরুলের কথায় দমে যাননি কাদের। ১১ই সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে তিনি জানান, ওই সেলফি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্কের ইঙ্গিত বহন করে। বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি নিয়ে সরকার কখনো কোনো অস্বস্তিতে ছিল না বলেও তিনি দাবি করেন।
কাদের এমন দাবি করলেও ভিসা নীতি ঘোষণার (২৪শে মে) মাত্র ১০ দিন পর স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, “কে আমাদের ভিসা দেবে না, কে আমাদের স্যাংশন দেবে, ওনিয়ে মাথাব্যথা করে কোনো লাভ নাই। বিশ ঘণ্টা প্লেনে জার্নি করে, আটলান্টিক পার হয়ে, ওই আমেরিকায় না গেলে কিচ্ছু আসে যায় না। পৃথিবীতে আরও অনেক মহাসাগর আছে, অনেক মহাদেশ আছে। সেই মহাদেশের সঙ্গে মহাসাগরেই আমরা যাতায়াত করবো আর বন্ধুত্ব করবো। আমাদের অর্থনীতি আরও মজবুত হবে, আরও উন্নত হবে, আরও চাঙা হবে।” এর আগে এপ্রিল মাসে প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে খোলাখুলিভাবে আমেরিকার সমালোচনা করেছিলেন। এরপরও বেশ কয়েকবার তিনি দেশটির সমালোচনা করেছিলেন।

অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাইডেন সেলফি তোলার পর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা এবং মন্ত্রীদের মধ্যে কেবল কাদের একাই উচ্ছ্বসিত নন। ‘নিজেরা মানবাধিকার লংঘন করে অন্যদের মানবাধিকার রক্ষার সবক দেয়’ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বারংবার এমন অভিযোগ করা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনও সেলফি তোলার মুহূর্তটিকে ‘আনন্দের’ বলে অভিহিত করেন। তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, যখন বিদেশিদের কাছে ধরনা দিতে বিএনপি ব্যস্ত, তখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে নিজে সেলফি তোলেন। পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে বলেছেন, বিশ্ব নেতৃবৃন্দও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে সম্মানের চোখে দেখেন। বিশ্ব নেতৃবৃন্দও মনে করেন বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কাছেই নিরাপদ।
ওদিকে, বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, যাদের কোনো গণভিত্তি থাকে না, তারা একটি সেলফি তুললেই সন্তুষ্ট হন। সেলফি সরকারকে রক্ষা করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম। তিনি বলেছেন, “আওয়ামী লীগের নেতারা এটি ভাইরাল করে বুঝাতে চাচ্ছেন আমরা এখনো দেউলিয়া হইনি। আরে, দেউলিয়া না হলে একটি ছবিকে কেন পুঁজি করছেন?” গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, সেলফি এবং মোদি গদি টেকাতে পারবে না। কথা পরিষ্কার। শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, বাইডেনের সেলফি নিয়ে বাংলাদেশে মাতামাতি আর কথার লড়াই সহসাই থামছে না।
জনতার আওয়াজ/আ আ
