সিলেট বিএনপিতে শেষ সময়ে দৌড়াচ্ছেন প্রার্থীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
বৃহস্পতিবার, মার্চ ১৭, ২০২২ ৬:৩৪ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
বৃহস্পতিবার, মার্চ ১৭, ২০২২ ৬:৩৪ অপরাহ্ণ
ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
আর মাত্র দুইদিন। সিলেট বিএনপি’র নেতারা অবতীর্ণ হচ্ছেন লড়াইয়ে। শেষ সময়ে দৌড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। ১৮টি ইউনিটে গিয়ে ঢুঁ মারতে হচ্ছে। গোটা জেলা করতে হচ্ছে সফর। ৫ পদে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। বুধবার রাতে সেটি পরিবর্তন করা হয়েছে। কেবলমাত্র সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচন হবে।
সিনিয়র সহ-সভাপতি ও যুগ্ম সম্পাদক পদে ভোট হচ্ছে না। গতকাল ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন। মোট ১৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এর মধ্যে সভাপতি পদে প্রার্থী হলেন তিনজন, সাধারণ সম্পাদক পদে ৬ জন ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ৪ জন। এবারের কাউন্সিলে ভোটার সংখ্যা ১৮১৮ জন। কমিশনের সিনিয়র সদস্য ও সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এটিএম ফয়েজ জানিয়েছেন- ১৩ জন প্রার্থী। ভোটারও বেশি। এ কারণে বুথ বাড়িয়ে গ্রহণ করা হবে নির্বাচন। গণনায় সময় লাগতে পারে। এজন্য তারা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। কাউন্সিলে প্রার্থী হওয়া নেতারা হলেন- সভাপতি পদে আরিফুল হক চৌধুরী, আবুল কাহের শামীম ও আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী। সাধারণ সম্পাদক পদে- আলী আহমদ, আব্দুল আহাদ খান জামাল, মো. আব্দুল মান্নান, কামরুল হাসান চৌধুরী শাহীন, আফম কামাল, এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন মো. শামীম আহমদ, মো. লোকমান আহমদ, এম মুজিবুর রহমান মুজিব এডভোকেট এবং শাকিল মোর্শেদ। জেলা বিএনপি’র নেতারা জানিয়েছেন, ২১শে মার্চ নগরীর আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে সম্মেলন ও কাউন্সিল হওয়ার কথা। সে লক্ষ্যেই তারা প্রস্তুতি চালাচ্ছেন। এতে আসতে পারেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে হয়েছিল জেলা বিএনপি’র সম্মেলন। কাউন্সিলের মাধ্যমেই নতুন নেতৃত্ব দায়িত্ব পেয়েছিলেন। এবারো একই ভাবে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব আসবে। তবে এবার মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী প্রার্থী হওয়ায় শেষ মুহূর্তে এসে জমে উঠেছে কাউন্সিল। প্রার্থীরা উপজেলা উপজেলায় ছুটে চলেছেন। করছেন মিটিং ও গণসংযোগও। ইমেজ রক্ষার লড়াই শুরু হয়েছে। মেয়র আরিফ নিজের অবস্থান জানান দিতে এবারের কাউন্সিলকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। বঞ্চিত অংশের নেতারাও ছুটে চলেছেন তার পক্ষে। তিনিও সব ইউনিটে গিয়ে মিটিং করছেন। এতে করে তৃণমূলেও বিরাজ করছে উৎসাহ। ইমেজ রক্ষার লড়াইয়ে অন্য প্রার্থীরা।
সভাপতি পদে আবুল কাহের শামীম পরীক্ষিত নেতা। তিনি গত টার্মে সভাপতি ছিলেন। এ কারণে তৃণমূলে তার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। শামীমের পক্ষে দলের একাংশের নেতারা ঐক্যবদ্ধ। ভোট ব্যাংকও রয়েছে শামীমের। লড়াইয়ের জানান দিচ্ছেন তিনি। আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরীও জনপ্রিয় নেতা। জেলা বিএনপি’র ইউনিট সম্মেলন ও কাউন্সিলে তিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। তার পক্ষেও দলের একাংশের শক্ত অবস্থান রয়েছে। তার পক্ষে নতুনরা অর্থ্যাৎ ছাত্রদল থেকে উঠে আসা নেতারা একজোট হয়ে মাঠে নেমেছেন। আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী জানিয়েছেন, কর্মীরা কর্মীবান্ধব নেতা চায়। যারা সুখে, দুঃখে পাশে থাকবে তেমন নেতা চায়। এ কারণে এবারের কাউন্সিলে তিনি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। সাধারণ সম্পাদক পদেও লড়াই জমে উঠেছে। এই পদে এবারো প্রার্থী হয়েছেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ। দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকলেও তাদের বলয়ের নেতারা গোটা জেলাজুড়ে ইউনিট কাউন্সিলে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। আর শেষদিকে প্রবাস থেকে ফিরে আলী আহমদ সক্রিয় হয়েছেন। তৃণমূলে তারও গ্রহণযোগ্যতা ও অবস্থান রয়েছে। সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী ও বিএনপি নেতা কামরুল হাসান শাহীন, আব্দুল আহাদ খান তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছেন। তিনজনেরই রয়েছে আলাদা গ্রহণযোগ্যতা। এমরান আহমদ চৌধুরী সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
আব্দুল আহাদ খান জামাল ছিলেন সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। ইউনিট কাউন্সিলে তারা চষে বেড়িয়েছেন গোটা জেলা। তৃণমূলেও রয়েছে তাদের শক্তিশালী অবস্থান। শেষ মুহূর্তে এসে কামরুল হাসান চৌধুরী শাহীনও প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস দিচ্ছেন। সিলেট বিএনপি’র এক বলয়ের শীর্ষ নেতা শাহীন এবারের কাউন্সিল ও নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সাবেক ছাত্রদল নেতা লোকমান আহমদ, শামীম আহমদ ও শাকিল মোর্শেদ তীব্র লড়াইয়ে রয়েছেন। তিনজনের অবস্থান সমানে সমান। সিলেট জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার জানিয়েছেন- ‘কেন্দ্রের নির্দেশ মতো আমরা সার্বিক প্রস্তুতি চালাচ্ছি। এবারের সম্মেলন ও কাউন্সিল বেশ অর্থবহ। এর কারণ হচ্ছে- আমরা তৃণমূল থেকে দলকে সংগঠিত করে জেলা সম্মেলন ও কাউন্সিলের আয়োজন করেছি। এতে করে তৃণমূল থেকে জেলা পর্যায়ে দল শক্তিশালী হয়েছে।’