সেন্টমার্টিন ঘিরে যা করছে, তা সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি — তারেক রহমান
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
রবিবার, জুন ১৬, ২০২৪ ৭:২৭ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
রবিবার, জুন ১৬, ২০২৪ ৭:২৮ অপরাহ্ণ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
দেশ আজ নির্লজ্জ তাঁবেদার এক ক্রীতদাসের খপ্পরে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল শনিবার এক ভিডিও বার্তায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত দেশ আজ বিশ্ব বেহায়ার খপ্পরে, স্লোগানটি নিশ্চই বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের মনে আছে। সেদিন বহু মানুষের মনোযোগ কেড়েছিল স্লোগানটি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই স্লোগানটি হতে পারে এমন, দেশ আজ নির্লজ্জ তাঁবেদার এক ক্রীতদাসের খপ্পরে।
সেন্টমার্টিন প্রায় অবরুদ্ধ উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, কেনো কথাটি বললাম? কারণ লেন্দুপ হাসিনার অবৈধ ক্ষমতার লিপ্সার কারণে, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটের অধিকার হারিয়ে বাংলাদেশের জনগণ যেন আজ নিজ দেশেই পরাধীন। অরক্ষিত দেশের সীমান্তে। সেন্টমার্টিন প্রায় অবরুদ্ধ। এই মুহূর্তে যখন আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি, বাংলাদেশের নাগরিক সেখানে যেতে নিরাপদবোধ করছে না। সেন্টমার্টিন ঘিরে গত কয়েকদিন মিয়ানমার যা করছে, এটি যেকোনো দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য চূড়ান্ত হুমকি।
বর্তমান সরকার একজন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরে চলছে চমর অস্থিরতা। মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনেক দিন ধরে ভারী অবৈধ অস্ত্র ঢুকছে। যুদ্ধ কবলিব মিয়ানমারের জান্তা সেনারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রায় ঢুকে পড়ছে। হাসিনার তাঁবেদার সরকার যথারীতি জান্তা সেনাদের পুনরায় মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে। অথচ গত ৭-৮ বছরেও মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে জোর করে ঠেলে দেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একজনকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে পারেনি আজকের এই স্বৈরাচার সরকার। কিন্তু কেনো সম্ভব হয়নি? প্রিয় দেশবাসী, বাংলাদেশ কী তাহলে কোনো দেশের স্বার্থ রক্ষা করছে?
তিনি বলেন, তাহলে প্রশ্ন আসে, কার স্বার্থ রক্ষা করতে চাইছে বাংলাদেশ। এই স্বৈরাচার সরকার। মিয়ানমারের ব্যাপারে বাংলাদেশের কী নীতি অবলম্বন করেছে বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই স্বৈরাচার। ভোটবিহীন ডামি সরকার। অবশ্যই জনগণের এটি জানার অধিকার রয়েছে।
সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিকেরা নিরাপদ নয় উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, শেখ হাসিনার তাঁবেদারি আচরণের কারণে বাংলাদেশর নাগরিক আজ কোনো সীমান্তেই নিরাপদ নয়। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশসহ মোট ৭টি দেশের সীমান্ত রয়েছে। অন্য কোনো দেশের সীমান্তে গুলি করে মানুষ হত্যা করার সাহস না করলেও বাংলাদেশ সীমান্তে প্রায় বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারাচ্ছে বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিকগণ। গত ৯ জুন কুমিল্লা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এভাবে একের পর এক নেন্দুক কৃতদাস শেখ হাসিনার নতজানু পররাষ্ট্রনীতি, আর তাঁবেদারি মানসিকতার কারণে বাংলাদেশ সীমান্তে হত্যার প্রতিবাদ করার সাহস ও স্বাধীনতা হারিয়েছে। হাসিনার তাঁবেদার সরকারের ঘনিষ্ঠ কুর্ক্ষিন পর্যন্ত পাব্যত এলাকায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ করেছে। আজ বাংলাদেশর পুরো সীমান্ত অনিরাপদ। অথচ হাসিনার তাঁবেদার সরকার নির্বিকার।
তিনি বলেন, লেন্দুপ হাসিনা তার তাঁবেদার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে আজিজ আর বেনজীরের মতো দুর্নীতিবাজদের ব্যবহার করে দেশে-বিদেশে বিশেষায়িত বাহিনীগুলো সম্মান গৌরব ও ইমেজ ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। ভিন্ন রাজনৈতিকদল এবং মত দমনে স্বৈরচারী হাসিনা যেভাবে র্যাবকে ব্যবহার করেছে। দেশ এবং জনগণরে স্বার্থ এই খুনি বাহিনীতে এই মুহূর্তে আর কোনো সেনা কর্মকর্তা এবং সদস্যদের পোস্টিং দেওয়া হওয়া উচিত নয়। বরং বন্ধ করা উচিত অতিবিলম্ব তাদের পোস্টিং র্যাবে।
দেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভোমত্ব নিরাপদ রাখায় সেনাবাহিনীর প্রধান কাজ উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, হাসিনার অবৈধ ক্ষমতা আর ভোট ডাকাতি করা সেনাবাহিনীর কাজ হতে পারে না। সেনাবাহিনীর কাজ নয়। বরং দেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভোমত্ব নিরাপদ রাখায় সেনাবাহিনীর প্রধান কাজ। স্বাধীনতা বিরোধী তৎপরতা চললেও সীমান্তজুড়ে এখনো কোনো সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে না আজ দেশের মানুষের কাছে এটি একটি প্রশ্ন।
হাসিনা বারবার জনগণের সঙ্গে ধোঁকাবাজি করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের প্রিয় তরুণ ভাই-বোনেরা। আপনাদের অনেকেরই মনে আছে, ২০১৮ সালে কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় স্বৈরাচারী হাসিনা কোটা প্রত্যাহারের আশ্বাস দিয়েছিল। এখন আবার আদালতকে ব্যবহার করে সেই কোটা ব্যবস্থা পুর্নবহাল করেছে। আজ এটি স্পষ্ট এটি ছিল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা। শেখ হাসিনা একজন প্রতারক বলেই বারবার জনগণের সঙ্গে ধোঁকাবাজি করছে। কোটা কখনো মেধার বিকল্প হতে পারে না। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, মনে করি, চাকরি কোটার ব্যাপারে ছাত্র-তরুণদের দাবি অবশ্যই ন্যায্য এবং যৌক্তিক। জনগণের রায়ে বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে ছাত্র-তরুণদের যেকোনো যৌক্তিক এবং ন্যায্য দাবি বাস্তবায়ন করব। একই সঙ্গে প্রতিবন্ধীদের বিষয়টিও রাষ্ট্র অবশ্যই গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবে। যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি, সিদ্ধান্তে অবিচল থাকি, অচিরেই একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে জবাবদিহিতামূলক সরকার গঠিত হবে। ইনশাআল্লাহ।
জনতার আওয়াজ/আ আ
