হঠাৎ চুপ বিএনপি, নেতারা বলছেন দম নিয়ে তৈরি হচ্ছেন - জনতার আওয়াজ
  • আজ বিকাল ৫:৪৩, বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
  • jonotarawaz24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

হঠাৎ চুপ বিএনপি, নেতারা বলছেন দম নিয়ে তৈরি হচ্ছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ: বুধবার, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৪ ১২:৪১ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: বুধবার, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৪ ১২:৪১ পূর্বাহ্ণ

 

নতুন কর্মসূচি নিয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা নেই
৩০ জানুয়ারির পর ততটা সরব নন বিএনপি নেতারা

নিউজ ডেস্ক
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বর্তমান সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। যার অংশ হিসেবে রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামে শরিক রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সর্বশেষ গত ৩০ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনের দিন রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি পালন করেছিল দলটি। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ওই কালো পতাকা মিছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধার মুখে পড়েছিল। এই কর্মসূচি শেষে নতুন করে আর কোনো কর্মসূচি দেয়নি বিএনপি।

সচরাচর একটি কর্মসূচি শেষ হওয়ার আগে নতুন কর্মসূচি নিয়ে দলের মধ্যে এবং দলের বাইরে শরিক রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে দেখা গেলেও এবার তেমনটি হয়নি। দলের দায়িত্বশীল নেতারাও পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে কিছু বলতে পারছেন না। এমনকি পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণে কবে নাগাদ বৈঠক হবে, সে বিষয়েও ধারণা দিতে পারছেন না কেউ। রাজপথে কর্মসূচি না দিয়ে হঠাৎ অনেকটা চুপ দলটি।

রাজপথে কর্মসূচি না দেওয়া ও হঠাৎ করে চুপ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা চুপ হয়ে যাইনি। আমরা দম নিচ্ছি। রাজপথে কর্মসূচি নেই। তবে অন্য কর্মসূচি রয়েছে। যেমন নেতাকর্মীদের মুক্ত করা, কারাবন্দি নেতাদের খোঁজখবর নেওয়াসহ দলের অভ্যন্তরীণ নানা বিষয়ে কাজ চলছে। এসব কাজ শেষে আবার পুরোদমে রাজপথে নামব।’

৩০ জানুয়ারির কালো পতাকা মিছিল শেষে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা না দেওয়া ও পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রাজপথের কর্মসূচি নেই মানে আমাদের আন্দোলন-সংগ্রাম নেই তা নয়। ৩০ জানুয়ারির পর টঙ্গীতে প্রথম দফা বিশ্ব ইজতেমা হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় দফা হবে। বইমেলা, বাণিজ্য মেলা চলছে। ফাঁকে ফাঁকে নতুন কর্মসূচি আসবে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের দায়িত্বশীল নেতাদের পাশাপাশি রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামে শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। এরপর নতুন কর্মসূচি আসবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ও পরে সারা দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হয়েছে। এসব নির্যাতনের চিত্র তুলে আনতে দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরীর নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা যেসব জেলায় সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে, সেসব জেলায় যাচ্ছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলছেন। এরপর ঢাকায় ফিরে তারা একটি রিপোর্ট জমা দেবেন। এ ছাড়া দলের আইনজীবীরা কারাবন্দি নেতাদের মুক্তির জন্য আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। নেতাকর্মীরা ধীরে ধীরে জামিনে মুক্ত হয়ে আসছেন।’

৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। রাজপথের শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেছিলেন। এরপর কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু ৩০ জানুয়ারি কর্মসূচির পর পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণে দলের মধ্যে কোনো পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে কি না জানতে চাইলে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আপাতত কোনো কর্মসূচি নেই। কোনো নির্দেশনাও নেই। এর আগে সারা দেশের দায়িত্বশীল নেতাদের নিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বৈঠক করলেও আপাতত তেমন কোনো বৈঠকের ইঙ্গিত দেখছি না। ধারণা করছি, দলের নেতারা সময় নিচ্ছেন। কারাবন্দি নেতারা বেরিয়ে আসুক সেই অপেক্ষা করছেন।’

গত ২৭ জানুয়ারি রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে কালো পতাকা মিছিল শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ৩০ জানুয়ারি সংসদ অধিবেশন শুরুর দিন রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেছিলেন, ‘এই কালো পতাকা মিছিলের মাধ্যমে আমাদের দ্বিতীয় দফা আন্দোলন শুরু হলো। সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলতে থাকবে।’

নতুন কর্মসূচির বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, কিংবা এ বিষয়ে দ্রুতই কোনো বৈঠক হবে কি না জানতে চাইলে গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক গতকাল সোমবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘৩০ জানুয়ারির পর নতুন কর্মসূচি নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আমাদের কোনো বৈঠক হয়নি। কিংবা বৈঠকের জন্য আজ (গতকাল সোমবার) পর্যন্ত আমাদের কিছু জানানো হয়নি। তাই আমরা গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক দলগুলো আলাদাভাবে নিজ নিজ কর্মসূচি পালন করছি। আগামীকাল (আজ মঙ্গলবার) আমরা গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের বৈঠক ডেকেছি। বৈঠকে আন্দোলন-সংগ্রামসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে নিজেরা আলোচনা করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণার আগে বিএনপি চাইছে তাদের কারাবন্দি নেতাদের মুক্ত করতে। এ কারণে হয়তো সময় নিচ্ছে। এ ছাড়া অন্য কোনো কারণ রয়েছে কি না সে বিষয়ে তারাই ভালোই বলতে পারবে।’

গত বছরের ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ ডাকে বিএনপি। কিন্তু পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় তা পণ্ড হয়ে যায়। এরপর হরতাল, অবরোধ, মানববন্ধন, নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করে বিএনপি। নির্বাচনের আগের দিন ও নির্বাচনের দিন হরতাল পালন করে দলটি। নির্বাচনের পরের দিন গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানায়।

Print Friendly, PDF & Email
 
 
জনতার আওয়াজ/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com