হাসিনা ভাইপারের ছোবলে গোটা জাতি ভীতি-শঙ্কার মধ্যে: রিজভী - জনতার আওয়াজ
  • আজ ভোর ৫:১২, বুধবার, ২৩শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৫শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
  • jonotarawaz24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

হাসিনা ভাইপারের ছোবলে গোটা জাতি ভীতি-শঙ্কার মধ্যে: রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ: শুক্রবার, জুন ২৮, ২০২৪ ৪:৫০ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: শুক্রবার, জুন ২৮, ২০২৪ ৫:৪৯ অপরাহ্ণ

 

জনতার আওয়াজ ডেস্ক

হাসিনা ভাইপারের ছোবলে গোটা জাতি এখন ভীতি ও শঙ্কার মধ্যে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘জনগণ মনে করে দেশবিরোধী চুক্তি আড়াল করতেই- ছাগলকান্ড, বেনজিরকান্ড, আজিজকান্ড, হেলিকপ্টারে আসামী গ্রেফতারকান্ড সামনে আনা হচ্ছে। একজন ডিক্টেটরের হুকুমে দেশ চলছে বলেই জনগণ আজ ত্যাজ্য, প্রত্যাখ্যাত ও নিজ দেশে পরবাসী হতে চলেছে। হাসিনা ভাইপারের ছোবলে গোটা জাতি এখন ভীতি ও শঙ্কার মধ্যে। শ্বাসবায়ু প্রাণভরে কেউ গ্রহণ করতে পারছে না। তবে জনগণ চূড়ান্ত বাধা টপকিয়ে বাংলাদেশকে কারো আশ্রিত রাজ্য বানাতে দেবে না।

শুক্রবার (২৮ জুন) বিকেলে নয়াপল্টনের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন যারা ভারত বিরোধীতার ইস্যু খুঁজছেন, তারা আবারও ভুল পথে যাচ্ছে। ওবায়দুল কাদেরের কথায় ধরে নিতে হবে আমাদের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করে কেউ বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে স্থাপনা করে যাবে তারপরেও এর বিরোধীতা করলে সেটি ভুল পথ হবে, এ ধরনের কথা কেবলমাত্র নতজানু, জনগণের ক্ষমতা ছিনতাইকারী দেশদ্রোহীদের মুখেই সাজে। জনগণের সম্মতি ব্যতিরেকে চিকেননেককে বাইপাস করে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ভারত রেলপথ নির্মাণ করবে আর সেটি চুপ করে দেখা হবে ৭১’র শহীদদের রক্তকে অসম্মান করার শামিল। বাংলাদেশে ভেতর দিয়ে রেলপথ বসানোর চুক্তি করে শেখ হাসিনা স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ মা-বোনের নির্যাতনের সাথে বেইমানী করছেন।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘বাংলাদেশের সীমান্ত রক্তে ভেজা, ভারত থেকে বয়ে আসা বাংলাদেশের নদীগুলো উষর মরুভূমিতে পরিণত হওয়া, চরম বানিজ্য ঘাটতির পটভূমিতে বাংলাদেশের বুক চিরে রেললাইন বসিয়ে ভারতের সামরিক ও বেসামরিক পণ্য পরিবহনের সুযোগে বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্যে শনির দশা ডেকে আনা হবে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা রক্ষা এবং নিজস্ব শক্তির উপর নির্ভরশীল থাকতে পারবে না। এমনিতেই আমাদের দেশের জনগণের এনআইডির সকল তথ্য ভারতকে জানানো হয়েছে। ভারত সবসময় বিগব্রাদার সূলভ গরিমা থেকে বাংলাদেশকে বিবেচনা করে। ৭ই জানুয়ারি একতরফা ডামি নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে বৈধতা দিয়েছে ভারত, তাই কৃতজ্ঞতা স্বরূপ শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিনিময়ে ভারতকে সব উজাড় করে দিতে কুন্ঠিত হচ্ছেন না।

রিজভী বলেন, ‘দেশে দূর্নীতির মহামারী, লুন্ঠন আর কুৎসিত অনাচারের নানা রং-বেরঙের কাহিনী এখন মানুষের মুখে-মুখে। আর এই সমস্ত অপকর্মে জড়িতরা প্রায় সবাই ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠ। এইসব ঘটনা ফাঁস হওয়াতে সরকারের মন্ত্রী ও এমপিরা বেসামাল হয়ে পড়েছে। ভারসাম্যহীন কথাবার্তা বলছেন। একদিকে বলছেন দূর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে প্রচার ষড়যন্ত্রের অংশ, আবার অন্যদিকে বলছেন অভিযোগ সত্য। এ কথার কি অর্থ হতে পারে, তা আমার জানা নেই। অভিযোগ সত্য হলে দূর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে প্রচার ষড়যন্ত্রের অংশ হবে কেন? এরা বিভ্রান্তিতে ভুগছেন, কারণ এই দখলদার আওয়ামী সরকারের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারাই ছিল ডামি সরকারকে টিকিয়ে রাখার বিশ্বস্ত সৈনিক।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘অবৈধ একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে এ সমস্ত কর্মকর্তাই ভোটারদেরকে নতজানু রাখতে রীতিমতো ব্লাড-স্পোর্ট বা রক্ত খেলায় মেতেছিলো। এরা জনগণকে নতজানু রাখতে যথেচ্ছাচার রাষ্ট্রশক্তিকে ব্যবহার করেছে। এরাই ডেলিবারেট কিলিং করেছে, নিয়ন্ত্রণহীন হত্যাকান্ডের জন্য নিজ বাহিনীর সদস্যদেরকে কেন সক্রিয় হচ্ছে না সেই জন্য ভর্ৎসনা করেছে। গণতন্ত্রকামী মানুষের বিরুদ্ধে উগ্রতা এবং বন্দুকের ভয় দেখিয়ে নিরব রাখার চেষ্টা করেছে। সেজন্যই মন্ত্রী-এমপিরা তালগোল পাকিয়ে স্ব-বিরোধী বক্তব্য রাখছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘গণতন্ত্রের প্রতীক, ‘গণতন্ত্রের মা’ স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার এক নিরবচ্ছিন্ন অঙ্গীকারাবদ্ধ নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তির দাবীতে আগামীকাল শনিবার নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বেলা ২টা থেকে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হবে। ইতোমধ্যে আমরা সমাবেশের জন্য চিঠি পুলিশ কমিশনারের দপ্তরে প্রেরণ করেছি। বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলও পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেছে। সমাবেশ সফল করার জন্য বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য জনাব মির্জা আব্বাসকে সমন্বয়ক করে পর্যায়ক্রমে নানা প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইতোমধ্যে সমাবেশ সফল করতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি, আগামীকাল একটি ঐতিহাসিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবীতে ঢাকাবাসীসহ দলের সকল স্তরের নেতাকর্মীদেরকে যথাসময়ে সমাবেশে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহিদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সায়েদুল আলম বাবুল, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহ-সম্পাদক আবদুল কাদির ভুইয়া জুয়েল, মাহমুদুর রহমান সুমন, সহ-কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ ভুইয়া প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email
 
 
জনতার আওয়াজ/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ