১৫৪৪ জনের নাম, অজ্ঞাত কয়েক হাজার আসামিনয়াপল্টনে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩৭ মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
মঙ্গলবার, অক্টোবর ৩১, ২০২৩ ১২:২৫ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
মঙ্গলবার, অক্টোবর ৩১, ২০২৩ ১২:২৫ পূর্বাহ্ণ

নিউজ ডেস্ক
গত শনিবার বিএনপি’র মহাসমাবেশ ঘিরে হামলা, সংঘর্ষ, নিহত, ককটেল বিস্ফোরণ, পুুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়া, গাড়ি ভাঙচুর, গাড়ি পোড়ানোসহ নানা ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের বিভিন্ন থানায় ৩৭টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে ১ হাজার ৫৪৪ জনকে। এ ছাড়া অজ্ঞাত হিসাবে আরও কয়েক হাজার বিএনপি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। বেশির ভাগ মামলা পুলিশ বাদী হয়ে করেছে। কিছু মামলায় বাদী হয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা। বিভিন্ন মামলার এজাহার পড়ে দেখা গেছে এসব মামলায় বিএনপি’র শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের আসামি করা হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে পুলিশ হত্যা মামলা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলাসহ ৪টি মামলায় আসামি করা হয়েছে। একইভাবে মির্জা আব্বাসকেও বিভিন্ন মামলায় আসামি করা হয়েছে।
৩৭টি মামলার মধ্যে ডিএমপি’র রমনা বিভাগের শাহবাগ থানায় ১টি, রমনায় ২টি। মতিঝিল বিভাগের পল্টন থানায় ৩টি, মতিঝিলে ১টি, শাহজাহানপুরে ৬টি, খিলগাঁওয়ে ১টি, রামপুরায় ১টি, মুগদায় ১টি। ওয়ারী ডিভিশনের ডেমরা থানায় ১টি, ওয়ারীতে ১টি, যাত্রাবাড়ীতে ২টি।
তেজগাঁও বিভাগের হাতিরঝিল থানায় ২টি। মিরপুর বিভাগের মিরপুর মডেল থানায় ১টি, পল্লবীতে ২টি, কাফরুলে ১টি, দারুস সালামে ১টি, শাহ আলীতে ১টি, রূপনগরে ১টি, ভাষানটেকে ১টি। গুলশান বিভাগের ভাটারা থানায় ৩টি, বাড্ডায় ১টি ও উত্তরা বিভাগের উত্তরা পূর্ব থানায় ৩টি মামলা হয়েছে।
গত ২১শে অক্টোবর থেকে ২৯শে অক্টোবর পর্যন্ত ডিএমপি’র বিভিন্ন থানায় বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের একটি পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা গেছে ২৮শে অক্টোবর বিএনপি’র মহাসমাবেশ ঘিরে ডিএমপি’র ৮টি থানা ও ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার অভিযান চালিয়েছে। এসব অভিযানে ১৪৮০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরমধ্যে রমনা বিভাগের থানা পুলিশ ও ডিবি গ্রেপ্তার করেছে ৯০ জন, লালবাগ ৩২১ জন, মতিঝিল ১২৭ জন, ওয়ারী ৩৫৬ জন, তেজগাঁও ১১৯ জন, মিরপুর ৩৫৩ জন, গুলশান ৮৯ ও উত্তরা ডিভিশন ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ২১শে অক্টোবর ঢাকায় বিএনপি’র ৩১ জন, ২২ অক্টোবর ৪২ জন, ২৩ অক্টোবর ৪২ জন, ২৪ অক্টোবর ৮৫ জন, ২৫ অক্টোবর ১১১ জন, ২৬ অক্টোবর ২০২ জন, সমাবেশের আগের দিন ২৭ অক্টোবর ৩৪০ জন, ২৮শে অক্টোবর ৬৯৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর ২৯শে অক্টোবর সংঘর্ষের পরদিন ২৫৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সবমিলিয়ে ৯ দিনে ১৭২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত সবাইকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। পরে আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠান।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ২৮শে অক্টোবরে ব্যাপক ঘটনা ঘটেছে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি হবে সেই আশ্বাস তারা আমাদের দিয়েছিল। কিন্তু সকাল থেকে তারা অসম্ভব রকমের আক্রমণাত্মক পরিস্থিতিতে চলে যায়। যেসব ঘটনা ঘটেছে সেসব ঘটনার ছবি, ভিডিও, ফুটেজ সবার কাছেই আছে। সেগুলো বিশ্লেষণ করে মামলা হয়েছে। আমরা ফুটেজ ও ভিডিও দেখে দেখে আরও যাচাই-বাছাই করে আসামিদের গ্রেপ্তার করবো। তবে একেবারে তাড়াহুড়ো করবো না। তাড়াহুড়ো করলে ভুলত্রুটি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আমরা পেশাদারিত্ব বজায় রেখে মামলা রুজু, আসামি চিহ্নিত, গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি। বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসায় অভিযান নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের কাছে ব্যক্তি কোনো বিষয় না। বিষয় হচ্ছে তিনি অপরাধী কিনা। যদি অপরাধী হয়ে থাকেন তবে থাকে গ্রেপ্তার করা হবে।
অবরোধ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনদিনের জন্য রেলপথ, সড়কপথ ও নৌপথে অবরোধের ঘোষণা হয়েছে। সেটি সারা দেশে হলেও ঢাকার বাসিন্দাদের জীবন, সম্পদ, সবকিছুকে মাথায় রেখে ডিএমপি নিরাপত্তা প্রণয়ন করবে।
আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি কোনো ধ্বংসাত্মক কাজ রাজনৈতিক কর্মসূচির অংশ হতে পারে না। যারা কর্মসূচি দিয়েছেন তাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষ যদি সায় দেয় তবে এটি একটা বিষয় আর যদি সায় না দেয় তবে সেটিকে তারা প্রটেকশন দিতে হবে। আর যদি তারা সেটি না দেয় তবে ডিএমপি আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং নগরবাসীকে নিরাপদ রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।
জনতার আওয়াজ/আ আ
