১৬ বছরের কুশাসনে সবচেয়ে বেশী লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়েছেন নারীরা : রিজভী - জনতার আওয়াজ
  • আজ বিকাল ৫:১৮, বুধবার, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২রা জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি
  • jonotarawaz24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

১৬ বছরের কুশাসনে সবচেয়ে বেশী লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়েছেন নারীরা : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ: শুক্রবার, মার্চ ৮, ২০২৪ ৫:২৯ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: শুক্রবার, মার্চ ৮, ২০২৪ ৫:২৯ অপরাহ্ণ

 

জনতার আওয়াজ ডেস্ক
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, কর্তৃত্ববাদী শেখ হাসিনার গত ১৬ বছরের কুশাসনে সবচেয়ে বেশী লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়েছেন নারীরা। বর্তমান নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে শুধু রাত-বিরেতে নয়, দিনে দুপুরে পথ চলতে নারীরাসহ সাধারণ মানুষের গা ছমছম করে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার চলমান দুঃশাসনে কারোই রেহাই নেই। কেউ রাজনীতি করুক কিংবা না ই করুক, কেউই নিরাপদ নন।

শুক্রবার ( ৮ মার্চ) বিকেলে নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহারও রেহাই মেলেনি উল্লেখ করে রিজভী আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনা এখন কেবলমাত্র একটি কলের পুতুল। শেখ হাসিনার ক্ষমতার নাটাই দেশের জনগণ কিংবা বাংলাদেশের সীমানার ভেতরে নয়। শেখ হাসিনার ক্ষমতার নাটাই বাংলাদেশের সীমানার বাইরে। সুতরাং, আপনার কিংবা আপনাদের স্বার্থ দেখা তাবেদার শেখ হাসিনার পক্ষে সম্ভব নয়। এমনকি তাবেদার সরকার আপনার স্বার্থ দেখার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছে।

তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার কাউকে মানুষ বলেই গণ্য করছে না। শেখ হাসিনার থাবা থেকে বর্তমানে একজন নোবেল লরিয়েটেরও রেহাই মিলছে না। এক যুগের বেশি পার হলেও এখনো সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচার হয়নি। গত ১৫ বছরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর একটি হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত কিংবা বিচার হয়নি। দেশে সংঘটিত একটি অগ্নিকান্ডের ঘটনারও বিচার হয়নি। ব্যাংক খেকোদের বিচার হয়নি। অথচ ঠুনকো অভিযোগে একজন নোবেল লোরিয়েটকে প্রায় প্রতিদিন আদালতের বারান্দায় ঘুরতে হচ্ছে। মাদার অফ ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়া, নোবেল লরিয়েট ডক্টর ইউনুস, ডক্টর শহিদুল আলম, দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ এবং ভিন্নমতের মানুষের প্রতি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নির্মম আচরণ দেখেও এখনো যারা না দেখার ভান করছেন কিংবা এখনো যারা শেখ হাসিনার অবিচার-অনাচারের বিরুদ্ধে সাধ্যমতো প্রতিবাদী হয়ে উঠছেন না আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি চুপ করে থেকে কেউ নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম হবেন না। বিখ্যাত ব্রিটিশ রাজনীতিক এ্যাডমন্ডবার্ক বলেছেন ‘ভয় মানুষের বৃত্তি গ্রাস করে ফেলে’।

রিজভী আহমেদ বলেন, দেশের সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিক হত্যা, এমনকি বিজিবি সদস্য মেরে ফেললেও বাংলাদেশের প্রতিবাদ করার সাহস নেই। বরং, দিন দুয়েক আগে ‘ডামি প্রধানমন্ত্রীর ডামি উপদেষ্টা’র একটি বক্তব্য রীতিমতো বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য উদ্বেগজনক। তিনি বলেছেন, সীমান্তে মৃত্যুর ঘটনা হত্যাকান্ড নয়, সীমান্ত হত্যাকান্ড নাকি দুর্ঘটনা।

এই পরিস্থিতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৃহস্পতিবার লন্ডন থেকে ভার্চূয়াল মাধ্যমে দেওয়া বক্তব্য তুলে ধরেন রিজভী। তিনি বলেন, কোনো অজুহাত কিংবা ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থ প্রাধান্য দিয়ে যদি আমরা ঐকবদ্ধ না হই তবে একদিন আমাদেরকেও হয়তো নিজ ভূমিতেই নির্মম নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের ভাগ্যবরণ করতে হবে। অনেকেই হয়তো ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার রোষানল থেকে বাঁচার জন্য নীরব ছিলেন কিংবা যেকোনো কারণেই হোক সরব প্রতিবাদ করেননি। তাতে দেশের কোনো লাভ হয়নি। বরং দেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। দেশে গণতন্ত্রের কবর রচিত হয়েছে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস এমন এক সময় পালিত হচ্ছে যখন বাংলাদেশে নারীরা ঘরে-বাইরে-কর্মস্থলে সর্বত্রই নির্যাতিত-নিপীড়িত-লাঞ্ছিত-খুন খারাবীর শিকার হচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হাতে। রাজনৈতিক চরিত্র হারিয়ে আওয়ামী লীগ এবং তাদের অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সারাদেশে ভয়ংকর নারী নিপীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। রাষ্ট্রক্ষমতার আশ্রয়, প্ররোচনায় এদের অসভ্যতা রুচিহীন বর্বর শক্তিতে পরিণত করেছে। নবধারার আওয়ামী বাকশালরাজ্যে নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতার মাত্রায় এখনো কোন ছেদ যতি টানা হয়নি, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় তা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

তিনি বলেন, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশে গত ১৩ মাসে এক হাজারের বেশি নারী ও শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। গত বছর নারীর প্রতি সহিংসতা ছিল উদ্বেগজনক বিষয়। এ সময়ে সারাদেশে ৫৭৩ জন নারী ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে কোন কোন নারীকে। এসব ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন ১২২ জন পুরুষ। প্রতিবাদ করতে গিয়ে আটজন নারী-পুরুষ খুন হন।

বিএনপি নেতা বলেন, দেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় নেত্রী দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া একজন মহীয়সি নারী। যিনি অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে বার-বার মুক্ত করেছেন। যিনি বাংলাদেশ নারী সমাজের অগ্রগতিতে অসামান্য অবধান রেখেছেন। অথচ তাঁকে সীমাহীন হয়রানী ও হেনস্তা করার জন্য অন্যায় এবং বেআইনিভাবে মিথ্যা মামলায় আটক করে রাখা হয়েছে। সমস্ত মৌলিক মানবাধিকার, সাংবিধানিক অধিকারকে পদদলিত করে তাঁকে সুচিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। চার বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দিয়ে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে বিনা ভোটের ডামি সরকার। পদ্মা সেতু থেকে ফেলে দিয়ে হত্যার হুমকীও দিয়েছেন চরম প্রতিহিংসাপরায়ণ শেখ হাসিনা। তার প্রধান টার্গেট এখন দেশনেত্রী। অন্যায়ভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করে কেবল একজন রাজনৈতিক নেত্রীকেই নয় বরং বাংলাদেশের কণ্ঠকেই রুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। শেখ হাসিনা নারী অধিকারের কথা বললেও আদতে সব ভাওঁতাবাজী। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থাকলে ভয় প্রাধাণ্য লাভ করে। কারণ এবারও ডামি নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রীর মুকুটে শোভিত হলো গণশক্রর এক কালিমা লিপ্ত পালক।

এ সময় তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য আজাদ চৌধুরী নাহিদকে গ্রেফতার ও আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের আজকের শান্তিপূর্ণ র‌্যালীতে বাধা দেওয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুইয়া, অধ্যাপক মামুন আহমেদ, সহ অর্থ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল আলম তেনজিং, কৃষক দলের নেতা মেহদেী হাসান পলাশ প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email
 
 
জনতার আওয়াজ/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ