তারেক রহমান : ফ্যাসিবাদ বিরোধী বিপ্লব ও জাতীয় ঐক্যের অঙ্গীকার - জনতার আওয়াজ
  • আজ দুপুর ২:৪৬, শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি
  • jonotarawaz24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

তারেক রহমান : ফ্যাসিবাদ বিরোধী বিপ্লব ও জাতীয় ঐক্যের অঙ্গীকার

নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ: শনিবার, নভেম্বর ১৯, ২০২২ ১০:৩৬ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: শনিবার, নভেম্বর ১৯, ২০২২ ১০:৩৬ অপরাহ্ণ

 

অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান / ফারহান আরিফ

১৯৭৩ সালে সামরিক ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়ে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রক্ষমতায় তৃতীয়বারের মতো আরোহণ করার পূর্বে হুয়ান ডমিঙ্গো পেরন আঠারো বছর স্পেনে নির্বাসিত ছিলেন। সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১৯৫৮ সালে ক্ষমতাচ্যুত করে তাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়। এশীয় দেশ ইরানেও এমনই একটি বিপ্লবের মহানায়ক আয়াতুল্লাহ খোমেনি। ১৯৭৯ সালে ইসলামী বিপ্লবের মাধ্যমে রেজা শাহ পাহলভির রাজতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়ে তিনি ইরানের প্রধান নেতায় পরিুত হন। এর আগে তাকেও দীর্ঘকাল যাবত ফ্রান্সে নির্বাসিত থাকতে হয়েছিল। নির্বাসনে থেকেই তারা নিজ নিজ বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এরকম নির্বাসনে থেকে কিংবা আত্মগোপনে থেকে বিপ্লবের বরপুত্র হিসেবে সাফল্যের চূড়ায় আরোহী অভিযাত্রীর সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। আধুনিক বিশ্বব্যবস্থায়ও এর অসংখ্য উদাহরু রয়েছে। অতীতের চেয়ে বর্তমান সময়ে আন্দোলন, বিপ্লবের ধরন পাল্টেছে; সাথে সাথে পাল্টেছে ফ্যাসিস্ট শাসকদের নিপীড়নের মাত্রাও। আধুনিক ফ্যাসিবাদের নিপীড়নের হাতিয়ার কেবল বিভিন্ন আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রই নয়; বরং আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রচারমাধ্যম ব্যবহার করেও বর্তমান ফ্যাসিস্ট শাসকরা বিরোধী মতের ওপর নির্যাতন, নিষ্পেষণ চালিয়ে যাচ্ছে।

সাম্প্রতিক বাংলাদেশ এরকমই একটি ফ্যাসিবাদের বধ্যভূমিতে পরিুত হয়েছে। ফ্যাসিবাদের নিপীড়নমূলক আগুনের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে লড়াই করে যাচ্ছে এদেশের অকুতোভয় এক ঝাঁক বীর সৈনিক। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী এ বীর যোদ্ধাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের সংশপ্তক উত্তরাধিকারি তারেক রহমান। হুয়ান ডমিঙ্গো পেরন, আয়াতুল্লাহ খোমেনিদের মত তিনিও পরবাসে বসেই এ বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। সুদূর লন্ডন থেকে তিনি দিবানিশি বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের লড়াকু সৈনিকদের সাহচর্য দিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন গড়ে ষোল থেকে আঠারো ঘণ্টা তিনি সংগঠন, দেশগঠন ও সমাজকাঠামো পরিবর্তনের দিকনির্দেশনা প্রণয়নে সরাসরি সংযুক্ত থাকছেন। তারেক রহমানের রাষ্ট্র, সমাজ ও সংগঠনের প্রতি দায়বদ্ধতার টানে এই পরিশ্রম ও আত্মনিয়োগ বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার তার আধিপত্যবাদকামী সহচরদের মাথাব্যথার কারু হয়ে দেখা দিয়েছে। আধুনিক ফ্যাসিবাদি নিপীড়নের এমন কোনো পদ্ধতি নেই, যা তারা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করেনি। ওয়ান-ইলেভেন সৃষ্ট সামরিক শাসকগোষ্ঠীর নির্যাতনের শিকার হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাওয়া তারেক রহমান বর্তমান ফ্যাসিস্ট শাসকগোষ্ঠীর প্রধান চক্ষুশূল। কোনোভাবেই তারা তার ন্যূনতম উপস্থিতি বরদাশত করতে পারে না। প্রতিহিংসামূলক আচরণের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে হেন কোনো মিথ্যা অভিযোগ নেই, যা তার ওপর আরোপ করা হয়নি। এ কথা সর্বজনবিদিত যে, যখন কোনো স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠী তার প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়, তখনই তারা প্রতিপক্ষের ব্যক্তিচরিত্রকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করে। আর এর জন্য প্রয়োজনীয় আধুনিক সকল প্রচারযন্ত্রকেই তারা সর্বোচ্চ প্রয়োগ করে থাকে। মিথ্যা প্রপাগান্ডাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তারা একটি দেশের গণমাধ্যমকে দখল করার পাশাপাশি আধুনিক প্রচারুার সবচেয়ে কার্যকর পন্থা তথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পেশাদার কর্মী পর্যন্ত নিয়োগ করে। বর্তমান আওয়ামী ফ্যাসিবাদ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এর সবকিছুই ব্যবহার করেছে। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি কিছুই; বরং উত্তরোত্তর তারেক রহমানের রাজনীতি তার কর্মীদের কাছে, দেশবাসীর কাছে চূড়ান্তভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামী প্রচার-প্রপাগান্ডার সকল চেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়ে আজ তারেক রহমানই এদেশের মুক্তির অগ্রদূত। সমগ্র দেশবাসী ফ্যাসিবাদের এই নাগপাশ থেকে মুক্তির আশায় তার দিকেই উন্মুখ হয়ে তাকিয়ে রয়েছে।

তারেক রহমানের Take Back Bangladesh জনমনে উৎসাহ, উদ্দীপনার সঞ্চার করেছে। তিনি তার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে কেবল রাষ্ট্রক্ষমতার পরিবর্তনই প্রত্যাশা করেননি, বরং দিয়েছেন রাষ্ট্র ও রাজনীতির গুণমান পরিবর্তন, শাসনকাঠামোতে আমূল সংস্কারের ঘোষণা
তারেক রহমানের আজকের এই অবস্থানে আসা, অর্থাৎ জনগণের আশা- আকাক্সক্ষার পাদ প্রদীপে অবস্থান নেয়া একদিনে ঘটেনি। শৈশবে পিতৃহারা তারেক রহমান মুক্তিযুদ্ধে পাক বাহিনীর ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করেছেন। তিনি তার মা, এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, আপোসহীন বিপ্লবী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সেই শৈশবেই বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধকালে তার সেই বন্দিত্ব প্রমাণ করে তিনি একজন শিশু মুক্তিযোদ্ধা। অর্থাৎ শৈশবেই তিনি শত্রুর ভয়াবহ অগ্নিরোষ মোকাবিলা করে ত্যাগ ও সংগ্রামের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এসেছেন। যৌবনের প্রারম্ভে এসে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী ছাত্রনেতাদের সাথে তিনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার যোগসূত্র স্থাপনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন। নব্বই পরবর্তী সময়ে তিনি বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময়ে শাসনক্ষমতার সাথে নিজেকে না জড়িয়ে রাজনীতির গতি-প্রকৃতি পর্যবেক্ষণে আত্মনিয়োগ করেছেন। ১৯৮৯ সালে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বগুড়া জেলা শাখার প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে আত্মনিয়োগ করেন। সেই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে বর্তমানে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। আওয়ামী সরকারের রোষানলের শিকার কারারুদ্ধ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবর্তমানে তারেক রহমান এদেশের জাতীয়তাবাদী ঝান্ডা বহন করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ফ্যাসিবাদ হটানো আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন।

তারেক রহমানের রাজনীতির দর্শন হচ্ছে তারুণ্য ও তৃণমূল। বাংলাদেশের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা জানার জন্য তিনি মাইলের পর মাইল পথ হেঁটেছেন, প্রান্তিক মানুষের কথা শুনেছেন; সমস্যার স্বরূপ জেনেছেন এবং সমাধানে করুীয় নির্ধারু করে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। তিনি শহীদ জিয়া ও বেগম খালেদা জিয়ার পদাঙ্ক অনুসরু করে উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতিতে আত্মনিয়োগ করেছেন। আর এ কাজে দেশের তরুণ প্রজন্মকে সংযুক্ত করতে ২০০২ সালে তিনি তৃণমূলে সফর শুরু করেন। শহীদ জিয়ার আদর্শকে দেশের তরুণ প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে তাদেরকে আগামী বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রাণশক্তিতে রূপান্তরের এক মহাযজ্ঞ নিয়ে তিনি বাংলাদেশের নানা প্রান্তে চষে বেড়ান। তিনি বিশ্বাস করেন এদেশের তরুণ সমাজের কাছে দেশের সঠিক ইতিহাস, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও বাংলাদেশবাদী রাজনীতির বার্তা পৌঁছে দেয়া সম্ভব হলে একদিন এদের মাধ্যমেই বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে এক রোল মডেল হিসেবে আবির্ভূত হবে।

বাংলাদেশের জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে তারেক রহমান সর্বদাই জাতীয় ঐক্য ও সংহতির ওপর জোর দিয়ে যাচ্ছেন। চিন্তাশীল ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতা তারেক রহমান বিশ্বাস করেন, একটি দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভেদের অনল জ্বালিয়ে রেখে কখনোই শান্তি প্রতিষ্ঠা কিংবা উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ জন্যে প্রয়োজন সর্বপর্যায়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। যারা যত বেশি ঐক্যবদ্ধ হতে পারবে, তারা তত দ্রুত সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারবে। তাই সমবেত প্রচেষ্টার ধারণা থেকে তিনি আহবান জানান, ‘রাজনৈতিক মতপার্থক্য মঞ্চে থাকুক; মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়নে নয়।’ বর্তমান আওয়ামী দুঃশাসনের অবসানকল্পে তিনি সকল রাজনৈতিক সংগঠনকে জাতীয় ঐক্য ও সংহতির চেতনায় ঐক্যবদ্ধভাবে শামিল হতে আহবান জানিয়েছেন। তিনি মনে করেন, দানবীয় এই ফ্যাসিবাদকে হটানোর জন্য জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। ইতিমধ্যে তিনি তার বিভিন্ন বক্তব্য ও বিবৃতিতে সকল রাজনৈতিক শক্তির কাছে জাতীয় ঐক্যের আহবান জানিয়েছেন এবং এ লক্ষ্যে কার্যক্রমও চলছে। দেশনায়ক তারেক রহমান সুদূর লন্ডনে থেকেও জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার এই কর্মযজ্ঞে সার্বক্ষণিক যুক্ত থেকে পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদী শক্তির কবল থেকে বাঁচিয়ে একটি সুন্দর আগামী প্রতিষ্ঠায় তিনি সর্বোচ্চ ছাড় দেয়ার মানসিকতা রাখেন। তারেক রহমানের কাছে সর্বপ্রধান হচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি এবং একটি শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট সকল সামাজিক ও রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সমন্বয়ে একটি জাতীয় ঐকমত্যের সরকার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছেন। এমনকি নির্বাচনে সর্বোচ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও তিনি আন্দোলনে শামিল সবচেয়ে ক্ষুদ্র গোষ্ঠীটিকেও আগামী বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীদার হিসেবে পাশে রাখার অঙ্গীকার করেছেন। তারেক রহমানের এই অঙ্গীকারের মাধ্যমে তার উদার রাজনৈতিক মনোভাবের প্রমাণ পাওয়া যায়।

মূলত শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উদার রাজনীতির উত্তরাধিকারই বহন করছেন দেশনায়ক তারেক রহমান। শহীদ জিয়া যেমন বাকশাল ও তৎপরবর্তী ক্ষমতা কুক্ষিগতকরণের রাজনীতির নাগপাশ থেকে মুক্ত করে বাংলাদেশকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে উদার রাজনীতির স্বাক্ষর রেখেছেন; দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যেমন সংসদীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতাকে জনগণের দরজায় নিয়ে গিয়েছেন, ঠিক তেমনি দেশনায়ক তারেক রহমান ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার ঘোষণার মাধ্যমে রাজনৈতিক উদারপন্থার একটি নবদিগন্ত সূচনা করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। তবে লুণ্ঠিত গণতন্ত্র ও মানুষের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনার এই যুদ্ধে বরাবরের মতোই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আওয়ামী লীগ ও তাদের ফ্যাসিবাদের পৃষ্ঠপোষকেরা। আর তাই তারা তারেক রহমানকে তাদের প্রধান টার্গেটে পরিণত করেছে।

তারেক রহমানের দেশপ্রেম, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান, অন্যের সেবাদাসে পরিণত না হওয়ার মানসিকতা এবং কল্যাণমুখী রাজনীতি ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তাদের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক দোসরদের মাথাব্যথার কারণ। বরাবরের মতোই বাংলাদেশি জাতীয়তবাদের এই ধারাকে প্রতিহত করার জন্য তারা তাদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু তিনি তার আপন লক্ষ্যে স্থির হয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে দেশের কল্যাণে কাজ করে চলেছেন। তারেক রহমান নিজে স্বপ্ন দেখেন এবং দেশবাসীকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন- সকল জুলুমের অবসান ঘটিয়ে এক সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণের। গণতন্ত্র হরণকারী শক্তির হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার সুদৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে তিনি উচ্চারণ করেছেন, Take Back Bangladesh.

গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে রাজনীতিকে গণবিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে; রাজনীতির ময়দানে গণমানুষের অবস্থানকে সংকুচিত করে ফেলা হয়েছে; রাজনীতিকে সম্পূর্ণ মানুষের ক্ষমতাচর্চা এবং উচ্চাভিলাষীর সম্পদ ও ক্ষমতা অর্জনের হাতিয়ারে পরিণত করা হয়েছে। এমন এক পঙ্কিলাবর্ত পরিস্থিতিতে তারেক রহমানের Take Back Bangladesh জনমনে উৎসাহ, উদ্দীপনার সঞ্চার করেছে। তিনি তার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে কেবল রাষ্ট্রক্ষমতার পরিবর্তনই প্রত্যাশা করেননি; বরং রাষ্ট্র ও রাজনীতির গুণমান পরিবর্তন, শাসন কাঠামোতে আমূল সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন। ইতিমধ্যে তিনি দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট, রাষ্ট্রক্ষমতায় ব্যক্তি প্রধান ক্ষমতাচর্চা পরিবর্তন করে ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়ন ইত্যাদি নানা সংস্কারমূলক ঘোষণার মাধ্যমে তার রাষ্ট্রনায়কসুলভ প্রতিচ্ছবির স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত একটি গণতান্ত্রিক শ্রেণি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এর ফলে এ দেশের কোটি কোটি মুক্তিকামী মানুষ এবং বাংলাদেশবাদী আদর্শের শক্তিতে বলীয়ান কর্মীদের মাঝে তাকে আগামীর অবশ্যম্ভাবী রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে পরিচিতি এনে দিয়েছে।

বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ বিশ্বাস করে সকল অনিশ্চয়তা, কণ্টকাকীর্ণ ও বন্ধুর পথের গতিরোধক ভেঙে তিনি আবার মঞ্চে ফিরবেন। এই চিরসবুজ বাংলার প্রান্তরসমূহ আবারো তার পদধ্বনিতে মুখরিত হবেই; সব অন্ধকার, সব কলুষতা, সমস্ত মলীনতার অবসান হবেই। তারুণ্য ও তৃণমূলকে উপজীব্য করে যে রাজনীতির সূচনা তিনি করেছেন, জাতীয় ঐক্য ও সংহতির ভিত্তিতে তিনি যে বিপ্লবের ডাক দিয়েছেন- সেটি ব্যর্থ হবার নয়। কোনো অর্বাচীন শক্তির নীল চোখ এ যাত্রাকে রুদ্ধ করতে পারে না। দেশনায়ক তারেক রহমান ও তার এই যাত্রা অব্যাহত আছে, থাকবে; উজ্জ্বল, দেদীপ্যমান ও সমহিমায় ভাস্বর হয়ে।

লেখকঃ ড. মোর্শেদ হাসান খান- শিক্ষক, মার্কেটিং বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক, বিএনপি, জাতীয় নির্বাহী কমিটি ও মহাসচিব, ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। ফারহান আরিফ- যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

Print Friendly, PDF & Email
 
 
জনতার আওয়াজ/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ