অসৌজন্য আচরণেই হেরেছেন মমতাজ!
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
মঙ্গলবার, জানুয়ারি ৯, ২০২৪ ২:৩৫ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
মঙ্গলবার, জানুয়ারি ৯, ২০২৪ ২:৩৫ অপরাহ্ণ
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জ-২ আসনে নৌকার টিকিট পেয়েছিলেন কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম। গত তিনবার সংসদ সদস্যও হয়েছেন। কিন্তু এবার আর সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি। স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের শিল্পপতি দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর কাছে ভোটযুদ্ধে হেরেছেন। মমতাজের হেরে যাওয়ার নেপথ্যে অনেক কারণ সামনে চলে এসেছে।
নির্বাচনী ফলাফলে বিজয়ী প্রার্থী টুলু পেয়েছেন ৮৮ হাজার ৩০৯ ভোট। আর নৌকার মমতাজ পেয়েছেন ৮২ হাজার ১৩৮ ভোট। তার পরাজয়ের নেপথ্যে নানা কারণ রয়েছে বলে ভোটার ও স্থানীয়রা জানান। তারা জানান, তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন, কমিটি গঠনে স্বেচ্ছাচারিতা, আত্মীয়করণ ও পদ বাণিজ্য, নৌকা প্রতীকের নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যানদের অসম্মান, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিনকে কটাক্ষ করে বক্তব্য প্রদানসহ বিতর্কিত ব্যক্তিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া এবং দীর্ঘ ১৫ বছরে কাক্সিক্ষত উন্নয়ন না করা।
সেইসঙ্গে তার পারিবারিক ও ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বও ভোটারদের মধ্যে প্রভাব ফেলে। তার প্রয়াত বাবা মধু বয়াতির প্রথম স্ত্রী ও তিন কন্যার প্রতি অবিচারের ঘটনায় মমতাজকে পড়তে হয় বেকায়দায়। তারা মমতাজের পক্ষ ত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী টুলুকে সমর্থন দেন।
এছাড়া নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় মমতাজ ও তার অনুসারীদের সভা-সমাবেশে দেওয়া আক্রমণাত্মক বক্তব্য, বেসামাল কথাবার্তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায় ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এদিকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন না পাওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী টুলু প্রায় ১৫ বছর ধরে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করে আসছিলেন। তিনি গৃহহীনদের বাসস্থান, বেকারদের কর্মসংস্থান, অসহায়দের চিকিৎসাসেবাসহ বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয়, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠেন।
এছাড়া দলীয় বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটিতে পেয়ে যান অর্থ সম্পাদক পদ। অন্যদিকে নির্বাচনী আসনের বেশিরভাগ ইউপি চেয়ারম্যান, পৌরসভার কাউন্সিলরসহ দলের একটা বড় অংশ ছিলেন তার সঙ্গে। এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের অনেক সিনিয়র নেতারা গোপন সমর্থন এবং নির্বাচনে অংশ না নেওয়া দলগুলোর ভোটারদের একটা অংশও তার বিজয়ে ভূমিকা রেখেছে।
মমতাজ বেগম ২০০৮ সালে সংরক্ষিত মহিলা আসনে, ২০১৪ সালে নৌকার টিকিট পেয়ে মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ও ২০১৮ সালে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হন। এবার অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে মমতাজের পরাজয় ঘটে।