আজিজ-আনার-বেনজির চক্র শেখ হাসিনার মাফিয়া চক্রেরই প্রোডাক্ট: রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
রবিবার, জুন ১৬, ২০২৪ ৫:০৩ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
রবিবার, জুন ১৬, ২০২৪ ৫:০৩ অপরাহ্ণ

জনতার আওয়াজ ডেস্ক
আজিজ-আনার-বেনজির চক্র শেখ হাসিনার মাফিয়া চক্রেরই প্রোডাক্ট মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘এরাই মাফিয়া সরকারের প্রতিচ্ছবি। চিহ্নিত ভোট ডাকাত শেখ হাসিনাই বেনজীরদের সকল অবৈধ ক্ষমতার উৎস। দেশে গুম খুন অপহরণ ভোট ডাকাতিসহ যাবতীয় অপকর্মের জন্য বেনজীর ছিল খুনি সরকারের অন্যতম প্রধান বিশ্বস্ত হাতিয়ার। শেখ হাসিনা নিজেই আজিজ-বেনজীরসহ এই মাফিয়া সিন্ডিকেটের প্রধান পৃষ্ঠপোষক।
রবিবার (১৬ জুন)নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘বিনাভোটে রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে পুলিশ, জনপ্রশাসন এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোভী দুর্নীতিবাজদের নিয়ে ভোট ডাকাত শেখ হাসিনা একটি মাফিয়া সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। এই মাফিয়া চক্র প্রতিবার তাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক শেখ হাসিনাকে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতা নবায়ন করতে সহযোগিতা করে। অপরদিকে ভোট ডাকাত সরকার মাফিয়া চক্রকে অবাধ দুর্নীতি আর লুটপাটের সুযোগ করে দেয়। এটি জনগণের কাছে স্পষ্ট, খুনি দুর্নীতিবাজ আজিজ-আনার-বেনজির চক্র শেখ হাসিনার মাফিয়া চক্রেরই প্রোডাক্ট। এরাই মাফিয়া সরকারের প্রতিচ্ছবি। চিহ্নিত ভোট ডাকাত শেখ হাসিনাই বেনজীরদের সকল অবৈধ ক্ষমতার উৎস্য। দেশে গুম খুন অপহরণ ভোট ডাকাতিসহ যাবতীয় অপকর্মের জন্য বেনজীর ছিল খুনি সরকারের অন্যতম প্রধান বিশ্বস্ত হাতিয়ার।
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা নিজেই আজিজ-বেনজীরসহ এই মাফিয়া সিন্ডিকেটের প্রধান পৃষ্ঠপোষক। দেশের প্রায় সকল প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদেই আজিজ কিংবা বেনজীরের মতো দুর্নীতিবাজদের বসিয়ে ভোট ডাকাত হাসিনা প্রতিবারই তার বিনাভোটের সরকারের মেয়াদ নবায়ন করে চলেছে। বেনজীরের নজিরবিহীন রিপোর্ট যেভাবে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তদন্ত করলে দেখা যাবে, সাবেক প্রধান বিচারপতি, দুদকের সাবেক প্রধান, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কিংবা অনেক বর্তমান শীর্ষ কর্মকর্তার পাহাড়সম দুর্নীতির তথ্যও একইভাবে বেরিয়ে আসবে। কারণ, হাসিনা নিজেই দেশের অন্যতম শীর্ষ দুর্নীতিবাজ। বিনাভোটে রাষ্ট্র ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে দুর্নীতিই হাসিনার মূলনীতি। রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের প্রধানদেরকে বেনজীর-আজিজের মতো অবাধ দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ না দিলে তারা কেউ হাসিনার ভোট ডাকাতিতে সহযোগিতা করবেনা, দুর্নীতিবাজ হাসিনা এটি ভালো করেই জানে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘হাসিনার শাসনকালে এ পর্যন্ত যতগুলো চাঞ্চল্যকর দুর্নীতি কিংবা ব্যাংক লুটের ঘটনা প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিটি ঘটনায় মহাচোরদের সঙ্গে শেখ হাসিনার সখ্যতা প্রমাণিত। একটি জাতীয় দৈনিকের একজন প্রবীণ সম্পাদক বলেছেন, তারা বেনজীরের অপকর্ম সম্পর্কে জানতেন কিন্তু কিছু লেখার সাহস করেন নি। এ প্রসঙ্গে বলতে চাই, যদি আমরা পরিবর্তন চাই, যদি আমরা আনার-বেনজির-আজিজদের মতো দুর্নীতিবাজ এবং মাফিয়া মুক্ত শাসন প্রশাসন দেখতে চাই, যদি আমরা আমাদের তরুণ যুবকদের ভূমধ্য সাগরে ডুবে মরা থেকে বাঁচাতে চাই, যদি আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার চাই তাহলে গণতন্ত্রের পক্ষের প্রতিটি মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। গণতন্ত্র মানবাধিকার ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করতে গিয়ে বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলের অসংখ্য নেতাকর্মী গুম খুন অপহরণের শিকার হয়েছে। মিথ্যা কিংবা গায়েবি মামলায় সারাদেশে লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অনেকেই মাসের পর মাস ঘর ছাড়া। তারপরও বিএনপি রাজপথ ছাড়েনি। গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলো রাজপথ ছাড়েনি।
এই আনন্দঘন ঈদে মানুষের মনে সুখ নেই, আনন্দ নেই দাবি করে রিজভী বলেন, ‘এই আনন্দঘন ঈদে মানুষের মনে সুখ নেই, আনন্দ নেই। মানুষের আনন্দ কেড়ে নিয়েছে এই লুটেরা সরকার। মানুষের ঘরে খাবার নেই। উচ্চমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তরাও এখন অর্থনৈতিকভাবে কোণঠাসা, তারাও কোরবানী করার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছে। কোরবানীর পশুর হাটে ক্রেতা কম, যারা আছেন বেশীরভাগ সরকারি দলের লুটেরা, অবৈধ অর্থের মালিকরা। দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই চরম অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শেয়ার বাজার থেকে আরম্ভ করে পাড়া মহল্লার কাঁচা বাজার পর্যন্ত প্রতিটি সেক্টরেই সিন্ডিকেটের দৌরাত্মে অসহায় সাধারণ জনগণ। লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৮ শত টাকা, ঈদে খাবার প্রস্তুতে ব্যবহারকৃত মসলা যেমন, এলাচের কেজি ৪ হাজার টাকা, লবঙ্গের কেজি প্রায় ২ হাজার, দারনিচির কেজি প্রায় ৬ শত টাকা, তেজপাতার কেজি ৩ শত টাকা, জনগণ যেন এক খাদ্যপন্যের মূল্যবৃদ্ধির আগ্নেয়গিরির উপর বসে আছে। শশার কেজি-১২০ টাকা, কাচা মরিচ ২৬০ টাকা, করলা কেজি প্রতি ৭০ টাকা অর্থাত শুধু মাছ মাংসই নয় শাক-সবজিতেও হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ প্রভাহিত হচ্ছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন,’দেশের সবকটি ব্যাংক এখন প্রায় দেউলিয়া। শুধু ডলার সংকটই নয়, ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠেছে। এমনকি ঈদের সময়েও ব্যাংকে গিয়ে গ্রাহকরা চাহিদামতো নগদ ৫ হাজার টাকাও তুলতে পারছেন না। ডলার সংকটের কারণে ব্যাবসায়ীরা এলসি খুলতে পারছেন না। উচ্চ শিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীরা বিদেশ যেতে পারছেনা। ব্যাংকগুলোকে অনিরাপদ করে তোলা হয়েছে। ব্যাংকের ‘লকার’ থেকে গায়েব করে দেয়া হচ্ছে গ্রাহকদের শত শত ভরি স্বর্ণ। এমনকি গ্রাহকদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকার ভল্ট-ও এখন নিরাপদ নয়। রপ্তানি বাণিজ্যে চরম হতাশা। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য বৈষম্য বেড়েই চলছে। বর্তমানে দেশ সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভর। দেশি বিদেশী ঋণের ভারে জর্জরিত। এই হলো দেশের আর্থিক পরিস্থিতি। স্বাধীনতা, সাফল্য সমৃদ্ধি আর গণতন্ত্রের মহানায়ক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ৭৪ এর দুর্ভিক্ষপীড়িত বাংলাদেশকে অর্থনৈকিভাবে স্বাবলম্বী করে বিদেশে চাল চিনি রপ্তানি শুরু করেছিলেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সরকারের সময়ে বাংলাদেশ এশিয়ার ইমার্জিং টাইগারে পরিণত হয়েছিল। শেখ হাসিনা আর তার মাফিয়া চক্রের দুর্নীতি লুটপাটের কারণে সেই বাংলাদেশ বর্তমানে আবার তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটে। দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে চরম অরাজকতা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মাফিয়া সরকার এখন ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বিভিন্ন দেশে ঘুরছে।
তিনি বলেন, ‘৯০ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত ‘দেশ আজ বিশ্ব বেহায়ার খপ্পরে’ স্লোগানটি গণতন্ত্রকামী মানুষের মনোযোগ কেড়েছিল। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সেই স্লোগানটি আরো বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে পাশাপাশি ‘দেশ আজ নির্লজ্জ তাবেদার এক সেবাদাসের খপ্পরে’। এ কথাটা কেন বললাম? কারণ, অবৈধ ক্ষমতালিপ্সার কারণে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটের অধিকার হারিয়ে জনগণ আজ নিজ দেশেই যেন পরাধীন এবং বন্দী। অরক্ষিত দেশের সীমান্ত। সেইন্ট মার্টিন প্রায় অবরুদ্ধ। বাংলাদেশের নাগরিকগণ সেখানে যেতে নিরাপদ বোধ করছেনা। সেন্ট মার্টিনকে ঘিরে গত কয়েকদিন মিয়ানমার যা করছে, এটি দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য চূড়ান্ত হুমকি।
রিজভী বলেন,’বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে দীর্ঘদিন থেকেই চরম অস্থিরতা চলছে। মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ভারী অবৈধ অস্ত্র ঢুকছে। যুদ্ধ কবলিত মিয়ানমারের জান্তা সেনারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরেও প্রায়শই ঢুকে পড়ছে। শেখ হাসিনার তাবেদার সরকার যথারীতি জান্তা সেনাদের আগ্রাসি ভূমিকায় নির্বিকার রয়েছে। পুনরায় মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে। অথচ, গত ৭/৮ বছরেও মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে জোর করে ঠেলে দেয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একজনকেও মিয়ানমার ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। কেন সম্ভব হয়নি? বাংলাদেশ কি কোন দেশের স্বার্থ রক্ষা করছে? তাহলে কার স্বার্থ রক্ষা করছে? মিয়ানমারের ব্যাপারে বাংলাদেশ কি নীতি অবলম্বন করছে, অবশ্যই জনগণের সেটি জানার অধিকার রয়েছে। শেখ হাসিনার তাবেদারী আচরণের কারণে বাংলাদেশের নাগরিকগণ যেন আজ কোনো সীমান্তেই নিরাপদ নয়। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশসহ মোট সাতটি দেশের সীমান্ত রয়েছে। অন্য কোনো দেশের সীমান্তে গুলি করে মানুষ হত্যা করার সাহস না করলেও বাংলাদেশ সীমান্তে প্রায়শঃই বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারাচ্ছে বাংলাদেশী নাগরিক। গত ৯ জুন কুমিল্লা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। এভাবে ভারতের সঙ্গে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি আর তাবেদারী মানসিকতার কারণে বাংলাদেশ সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ করার সাহস এবং স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলেছে আওয়ামী সরকার। আজ বাংলাদেশের সীমান্ত অনিরাপদ। বিপন্ন স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব। অথচ স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার তাবেদার সরকার-নির্বিকার।
রিজভী বলেন,’শেখ হাসিনার তাবেদার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে আজিজ আর বেনজিরের মতো দুর্নীতিবাজদের ব্যবহার করে দেশে বিদেশে বিশেষায়িত বাহিনীগুলোর সম্মান-গৌরব-ইমেজ ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। ভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং মত দমনে স্বৈরাচারী সরকার যেভাবে র্যাবকে ব্যবহার করেছে, দেশ এবং জনগণের স্বার্থে এই ঘাতক বাহিনীতে এই মুহূর্তে আর কোন সেনা কর্মকর্তা এবং সদস্যদের পোস্টিং অবিলম্বে বন্ধ হওয়া জরুরি। শেখ হাসিনার অবৈধ ক্ষমতা আর ভোট ডাকাতি নিরাপদ করা সেনাবাহিনীর কাজ নয়, বরং দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিরাপদ রাখাই সেনাবাহিনীর প্রধান কাজ। এই প্রেক্ষিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গতকাল শনিবার এক ভার্চূয়াল বক্তৃতায় প্রশ্ন রেখেছেন সার্বভৌমত্ববিরোধী তৎপরতা চললেও সীমান্ত জুড়ে এখনো কেন সেনাবাহিনী মোতায়ন করা হচ্ছে না? তিনি অবিলম্বে সীমান্ত জুড়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করার আহবান জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন,’দেশকে মাফিয়াতন্ত্রের কবল থেকে মুক্ত করার দায়িত্ব বিএনপি কিংবা একক কোনো রাজনৈতিক দলের নয়। মাফিয়া চক্রের কবল থেকে দেশকে পুনরুদ্ধার করতে হলে ভয়কে জয় করে প্রতিটি শ্রেণী পেশার মানুষকে ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যিনি যা জানেন সাহসের সঙ্গে প্রকাশ করতে হবে। শেখ হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতায় সৃষ্ট আওয়ামী লীগের আরো চার ‘ডামি এমপি’র সিন্ডিকেট মালয়েশিয়ায় পাঠানোর নাম করে জনগণের পকেট থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়ে ১৭ হাজার মানুষকে নিঃস্ব করে ফেলেছে। এই মানুষগুলো মালয়েশিয়া যেতে পারেনি। উল্টো মালয়েশিয়া থেকে ৬১ হাজার বাংলাদেশী ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছে। লুটেরা সিন্ডিকেটের প্রধান পৃষ্ঠপোষক শেখ হাসিনা নাকি বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুরের মতো উন্নত করে ফেলেছে? তাহলে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য হাজার হাজার মানুষ কেন জায়গা জমি কিংবা সর্বশেষ সম্বল বিক্রি করে এখন সর্বহারা? কেন বিদেশ যেতে মরিয়া হয়ে ভূমধ্য সাগরে সলিল সমাধি ঘটছে অসংখ্য তরুণ যুবকের? সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা/ আপনাদের অনেকেরই মনে আছে, ২০১৮ সালে কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময়, শেখ হাসিনা কোটা প্রত্যাহারের আশ্বাস দিয়েছিলো। এখন আবার আদালতকে ব্যবহার করে আবারো সেই কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহাল করেছে। এটি স্পষ্টই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা। এই সরকার প্রতারক বলেই বারবার জনগণের সঙ্গে ধোঁকাবাজি করছে। ‘কোটা’ কখনো মেধার বিকল্প হতে পারেনা। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, চাকুরী কোটা’র ব্যাপারে ছাত্র তরুণদের দাবি অবশ্যই ন্যায্য এবং যৌক্তিক। জনগণের রায়ে বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে অবশ্যই ছাত্র-তরুণদের যেকোন যৌক্তিক এবং ন্যায্য দাবি বাস্তবায়ন করবে। একইসঙ্গে প্রতিবন্ধীদের বিষয়টিও রাষ্ট্র অবশ্যই গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবে। যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি, সিদ্ধান্তে অবিচল থাকি, অচিরেই একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে জবাবদিহিতামূলক সরকার গঠিত হবে। ইনশাআল্লাহ।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, ন্যায়নীতি, নৈতিকতা, ধর্মীয়, সামাজিক মূল্যবো সকল ক্ষেত্রেই চূড়ান্ত অবক্ষয় ঘটেছে। শেখ হাসিনার অবৈধ ক্ষমতালিপ্সার কারণে চরম বিপর্যয়ে দেশ এবং জনগণ। দেশের এমন চতুর্মুখি সংকটকালে আর বসে থাকার সময় নেই। মাদার অফ ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ওদের হাতে গোলামীর জিঞ্জির আমাদের হাতে স্বাধীনতার পতাকা। স্বাধীনতার পতাকার মর্যাদা রক্ষা করতে চাইলে, তাবেদার অপশক্তির কাছ থেকে দেশ উদ্ধার করার বিকল্প নেই। অন্যথায় সেদিন আর বেশি দেরি নয়, যেদিন আমাদেরকে হয়তো মাতৃভূমিতেই ফিলিস্তিনিদের ভাগ্যবরণ করতে হবে। লেন্দুপ সরকার প্রধানের তাঁবেদারির কারণে আজ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন। লাখো প্রাণের বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ছিল দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য। আর এবারের মুক্তিযুদ্ধ দেশ এবং জনগণের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য। অতএব, গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি, বাংলাদেশের পক্ষের শক্তির প্রতি উদাত্ত আহবান, দেশের স্বাধীনতা রক্ষার আন্দোলনের চলমান লড়াইয়ে শরিক থাকুন। মা-মাটি দেশ আজ সংকটে। ডামি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা মাফিয়া চক্রের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে না পারলে দেশ এবং জনগণের স্বাধীনতা থাকবেনা। আমরা কি বুয়েটের আবরার কিংবা ফরিদপুরের মধুখালীর আশরাফুল-আসাদুলের মতো অসহায়-নির্মম মৃত্যু চাই? চাইনা। তাহলে আসুন আমরা মাতৃভূমির স্বাধীনতা রক্ষার আন্দোলনে ৭১ এর মুক্তিযোদ্ধাদের মতো চরম ত্যাগ শিকারের জন্য আবারো প্রস্তুত হই। স্লোগান তুলি, আমার অধিকার আমার দেশ-টেইক ব্যাক বাংলাদেশ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ,স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ রফিকুল ইসলাম,সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম,নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল আলম তেনজিং প্রমুখ।
জনতার আওয়াজ/আ আ
