আয়না ঘরের চাইতেও ভয়াবহ ঘর তৈরি করেছিল আ’লীগের এমপিরা
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
মঙ্গলবার, অক্টোবর ১, ২০২৪ ৪:০৯ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
মঙ্গলবার, অক্টোবর ১, ২০২৪ ৪:০৯ অপরাহ্ণ
জনতার আওয়াজ ডেস্ক
আয়না ঘরের চাইতেও ভয়াবহ আরও বিভিন্ন ধরনের বিভীষিকাময় ঘর তৈরি করেছিলেন আওয়ামী লীগের এমপি-নেতারা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুরে আমরা বিএনপি পরিবারের উদ্যোগে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা রিকশা চালক সাইফুল ইসলামকে নতুন রিকশা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশে ভারতের বিরুদ্ধে কেউ যদি টু শব্দ করে তার বেঁচে থাকার অধিকার নাই এমন পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল শেখ হাসিনা এমন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘এই কারণেই আবরারকে তারা হত্যা করলো। কত কাহিনী আমরা প্রতিদিন শুনেছি শুধু কি আয়না ঘর? আমরা তো শুনেছি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৈরি করা আয়না ঘরের কথা। আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি কেউ কেউ আট বছর পর ১০ বছর পর আয়না ঘর থেকে বের হচ্ছেন সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আইনজীবী, ব্যারিস্টার ৯ বছর ১০ বছর পর তারা সেখান থেকে বের হচ্ছেন। কি নির্মমতা শেখ হাসিনা তৈরি করেছিলেন বাংলাদেশে।
তিনি বলেন, ‘এটা তো একটা দিক। আয়না ঘরের চাইতেও ভয়াবহ আরও বিভিন্ন ধরনের বিভীষিকাময় ঘর তৈরি করেছিলেন আওয়ামী লীগের এমপি নেতারা। আজকেই খবরের কাগজে দেখতে পেলাম সেই বিখ্যাত আলতাফ গোলন্দাজ যিনি পা উপরের দিকে ঝুলিয়ে মাথা নিচু করে বিএনপির এক নেতাকে ১৯৯৬-৯৭ সালে পিটিয়েছিলেন সেই ভয়ংকর আলতাফ গোলন্দাজের ছেলে ফাহিম গোলন্দাজ এমপি তার একটি আয়না ঘর ছিল তিনি ভয়ঙ্কর কুকুরের ফার্মের মধ্যে তার মতের বিরোধীদেরকে ছেড়ে দিত। এমনকি তার দলের লোকও যদি কেউ তার বিরুদ্ধে যেত তার সাথেও এমন নির্মম আচরণ করা হত।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘ভয়ংকর গ্যাস চেম্বারের চাইতেও বিভিৎস নিপীড়নের একেকটা কেন্দ্র বাংলাদেশের জনপদের পর জনপদ তারা তৈরি করেছিলেন। এই জনপদ তৈরিতে কারা ছিল আওয়ামী লীগের এমপি, আওয়ামী লীগের উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার চেয়ারম্যান।
ইউপি চেয়ারম্যানদেরকে এখনো বাতিল করা হচ্ছে না কেন উপদেষ্টা পরিষদের কাছে এমন প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সবাই আমরা সমর্থন করেছি। জুলাই বিপ্লবের ফসল হচ্ছে অন্তবর্তীকালীন সরকার। যারা এই ধরনের নিপীড়নের এক একটা কেন্দ্র তৈরি করেছিল হিংস্র কুকুর দিয়ে যারা কামড় দেয়াতো। তাদের অংশ তো এখনো রয়ে গেছে। ইউপি চেয়ারম্যানদেরকে আপনারা এখনও বাতিল করছেন না কেন? এরাও তো সেই আওয়ামী লীগের গুন্ডা, পান্ডা, সন্ত্রাসী। এলাকার মধ্যে তারাই তো বর্বরতা চালিয়েছে। আপনাদের ভয় কিসের? উপদেষ্টা পরিষদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই আপনাদের ভয় কিসের? কারা আপনাদেরকে নিষেধ করছে?
রিজভী বলেন, ‘মেধাবী ছাত্র আবরারকে হত্যা করেছিল ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ নামের আগে ছাত্র শব্দটি আছে। শেখ হাসিনা এসব ছাত্র পছন্দ করে না। শেখ হাসিনা বুয়েট বিশ্ববিদ্যালয় পছন্দ করে না, শেখ হাসিনা মেধাবী ছাত্র পছন্দ করে না, দেশ টিকে থাকলো কি-না টিকে থাকলো এটা তো তার দরকার নেই। তাকে টিকিয়ে রাখবে পার্শ্ববর্তী দেশের গোয়েন্দা সংস্থা। এই সংস্থা তাকে টিকিয়ে রাখবে এটা তিনি বিশ্বাস করতেন তাই গোল্লায় যাক বাংলাদেশের মেধাবী ছাত্র। সেজন্য প্রথমেই কোটা বৃদ্ধি করে মেধার সর্বনাশ ডেকে এনেছিলেন। মেধাবী ছেলেরা প্রশাসনে আসবে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় তারা অবস্থান নিবে চাকুরি করবে এইটা শেখ হাসিনার পছন্দের মধ্যেই পড়ে না। তার দরকার কি? তাকে তো সহায়তা করবে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে।
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা ১৮ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে এসেছিলেন। ১৭ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। এসবের বিষয়ে টু শব্দ করা যায়নি। জ্বালানি নেই, গ্যাস নেই, কিন্তু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বানিয়েছিলেন কারণ এখানে তার নিজের লোকরা আছে। তার দলের লোকেরা ছিল আত্মীয়স্বজনরা ছিল। কিন্তু জ্বালানি নেই বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে কি করে?
সাম্প্রতিক সময়ে গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিরতার কথা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘গার্মেন্টসের মালিক যারা শেখ হাসিনার অত্যন্ত সুবিধাভোগী তাদের গার্মেন্টসের লোকেরা এসে অন্যান্য যেগুলো গার্মেন্টস আছে যারা নিরপেক্ষ তাদের সেখানে হামলা করছে। এটাতো তথ্য নিয়ে আপনাদেরকে বলছি। নজরুল ইসলাম কে? সালাম মুর্শিদি এরা কি আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী নয়? এরা কি আওয়ামী লীগের এমপি নয়?এদের গার্মেন্টস থেকে এসে কৃত্রিমভাবে পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতা তৈরি করছে। যাতে ছাত্র-জনতার বিপ্লব ব্যর্থ হয়।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপি’র স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল,আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্য সচিব মিথুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আরিফুর রহমান তুষার প্রমুখ।