আর কতো কথা বলতে দিলে বিএনপির মনে হবে দেশে গণতন্ত্র আছে : হানিফ
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
বুধবার, মার্চ ২, ২০২২ ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
বুধবার, মার্চ ২, ২০২২ ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, বিএনপি যদি মনে করে রাস্তায় নেমে গাড়ি ভাঙচুর, পেট্রল বোমা মারলেই গণতন্ত্র আছে, তাহলে সে গণতন্ত্র তারা আর দেখবে না।
বুধবার ( ২ মার্চ) ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত ও চাঁদপুর জেলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের আগে একথা বলেন তিনি।
হানিফ বলেন, বিএনপি প্রতিদিন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করে সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। তারা টেলিভিশনে টকশোতে মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। তারপরও তাদের শান্তি হচ্ছে না। কথায় কথায় বলে আমরা তাদের কথা বলার সুযোগ দিচ্ছি না, দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। আর কতো গণতন্ত্র চায় তারা? আর কতো কথা বলতে দিলে তাদের মনে হবে দেশে গণতন্ত্র আছে।
তিনি বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি অব্যাহত আছে ও মাথাপিছু আয় বাড়ছে। মাত্র ছয়শ ডলার ছিল আমাদের মাথাপিছু আয়, এখন দুই হাজার পাঁচশ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এ দেশ এক সময় ছিল চরম দরিদ্রের দেশ। বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি বলে আখ্যায়িত ছিল। ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত ছিল। সেই বাংলাদেশ আজকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের শুধু মাথাপিছু আয় বাড়েনি রপ্তানি আয়ও বেড়েছে। খাদ্য সংকট আমরা সমাধান করতে সক্ষম হয়েছি, খাদ্যে আজ আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়েছি। আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন আজ দৃশ্যমান। কর্ণফুলী টানেল হচ্ছে, মাতারবাড়ী-পায়রা দুটি সমুদ্র বন্দর হয়েছে। মেট্রোরেল হচ্ছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে। আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছি। এতো উন্নয়ন দেশের মানুষের ভালো লাগলেও বিএনপির ভালো লাগে না।
আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ৭৫ সালে জিয়া ক্ষমতা দখল করে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের অঙ্গরাজ্য বানিয়েছিল। সে সময় মহান মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান জয় বাংলা নিষিদ্ধ ছিল। শুধু জয় বাংলা নয় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণও নিষিদ্ধ করা হয়। যে ভাষণের জন্য লাখ লাখ মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। পাকিস্তানিরা পরাজিত হয়ে যে জায়গায় ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করেছিল জিয়া সেখানকার স্তম্ভ ভেঙে শিশু পার্ক নির্মাণ করেছে। কারণ তিনি চাননি পাকিস্তানের কোনো লজ্জাজনক স্মৃতি এ দেশে থাকুক।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, যে কোনো বিষয়ে বিএনপি অপরাজনীতির ইস্যু খোঁজে। এজন্য আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মীদের আরও সতর্ক থাকতে হবে। নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিএনপির অপরাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বিএনপি দেশকে অস্থিতিশীল বা কোনো অপকর্ম করার চেষ্টা করলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। তাদের কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না।
নির্বাচন কমিশন আইন নিয়ে বিএনপি সকালে এক কথা ও বিকেলে আরেক কথা বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের শেষ সময় বিএনপি দাবি করলো, কমিশন গঠনে আমরা আইন চাই। তখন আইনমন্ত্রী বলেছিলেন এতো স্বল্প সময়ে আইন করা কঠিন। তখন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল একাধিকবার বলেছিলেন, সরকার চাইলে একদিনে আইন পাস করতে পারে। বিএনপির দাবির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আইনমন্ত্রী বিলটির খসড়া সংসদে উত্থাপন করলেন। সেখানে বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ সব দলের সংসদ সদস্যের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্তভাবে উত্থাপন করলেন। সর্বসম্মতিক্রমে বিলটি পাস হলো। বিলটি পাস হওয়ার পরে তাদের কথা চেঞ্জ। এখন বলে সরকার তড়িঘড়ি করে নির্বাচন কমিশন গঠন ও আইন তৈরি করেছে। আসলে মিথ্যাচারের রাজনীতি করা ছাড়া বিএনপির আর কিছু করার নেই।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহামুদ স্বপন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসির উদ্দীন আহম্মদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম পাটোয়ারী দুলাল, চাঁদপুর ৪ আসনের এমপি শফিকুর রহমান ও চাঁদপুর ২ এমপি নুরুল আমিন রুহুল প্রমুখ।
জনতার আওয়াজ/আ আ
