ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে মায়ের হাতের আঙুল ও ছেলের কব্জি বিচ্ছিন্ন - জনতার আওয়াজ
  • আজ রাত ৪:৫৩, শুক্রবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৭শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
  • jonotarawaz24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে মায়ের হাতের আঙুল ও ছেলের কব্জি বিচ্ছিন্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ: বুধবার, এপ্রিল ১৬, ২০২৫ ৩:৫৩ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: বুধবার, এপ্রিল ১৬, ২০২৫ ৩:৫৩ অপরাহ্ণ

 

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে চাচাতো ভাইয়ের লোহার অ্যাঙ্গেলের কোপে জেঠাতো ভাই ও তার মা গুরুতর আহত হয়েছেন। শুরুতে ছেলেকে কোপানোর হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে মায়ের হাতের একাধিক আঙুল ও ছেলের হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার দণ্ডপাল ইউনিয়নের রাধানাথ মাটিয়ার পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনায় আহতরা হলেন একই এলাকার রঞ্জু সরকারের স্ত্রী মাহফুজা ও ছেলে মামুন। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মোস্তাফিজুর। সে একই এলাকার ফেরদুসের ছেলে। মামুন ও মোস্তাফিজুর রহমান সম্পর্কে চাচাতো-জেঠাতো ভাই।

ঘটনার পর স্থানীয়রা আহত দুইজনকে উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান শেষে মা-ছেলেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

মামুনের স্ত্রী জাহানারা বলেন, মোস্তাফিজুর নিয়মিত মাদক সেবন করে। সে তার স্ত্রীকে প্রায় মারধর করতো। দাম্পত্য কলহ মিমাংসার জন্য বিষয়টি নিয়ে একবার আলোচনায়ও বসা হয় বাড়িতে। সেসময় মামুন মোস্তাফিজুরকে শাসনের জন্য উপস্থিত বয়োজ্যেষ্ঠদের অনুরোধ করেন। প্রায় ৫ মাস আগে মোস্তাফিজুরের স্ত্রী বাবার বাড়ি চলে যান। এই সব ঘটনায় মোস্তাফিজুর ক্ষিপ্ত ছিলেন মামুনের উপর।

জাহানারা আরো বলেন, বুধবার (১৬ এপ্রিল) আমার স্বামী সকালে খাওয়া শেষে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। বাড়ি থেকে বের হওয়ামাত্র মোস্তাফিজুর আমার স্বামীকে পেছন থেকে আঘাত করে। এতে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যায় আমার স্বামী। এরপর উপর্যুপরি আমার স্বামীকে লোহার ধারালো অ্যাঙ্গেল দিয়ে কোপাতে থাকলে সে প্রাণ বাঁচাতে বাড়িতে ফিরে মূল দরজা লাগিয়ে দেয়। মোস্তাফিজুর দরজা ভেঙ্গে বাড়িতে প্রবেশ করে আবার মামুনকে কোপাতে থাকে। এতে তার দুই হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কোপের কারণে ডান কান বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মাথাতেও কোপ দেওয়া হয়।

মামুনকে রক্ষায় আমার শাশুড়ি এগিয়ে এলে তাকেও কোপানো হয়। এতে আমার শাশুড়ির ডান হাতের চারটি আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

জাহানারা জানান, ঘটনার সময় তার কোলে তিন মাসের শিশু সন্তান থাকায় তিনি মোস্তাফিজুরকে বাধা দিতে পারেননি।

ঘটনার পর স্থানীয়রা অভিযুক্ত মোস্তাফিজুরকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ পৌঁছানোর পূর্বে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে মোস্তাফিজুরকে মারধর করে। পরে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে মোস্তাফিজুরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। প্রাথমিকভাবে মোস্তাফিজুর নিজের অপরাধ স্বীকার করেছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশের একটি সূত্র।

ঘটনার পর কোপানোর সময় ব্যবহৃত লোহার অ্যাঙ্গেলটি পার্শ্ববর্তী পুকুরে ফেলে দেয়। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (দুপুর ২টা) পুলিশ লোহার অ্যাঙ্গেলটি পুকুর থেকে উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এই বিষয়ে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
 
 
জনতার আওয়াজ/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ