জবি শিক্ষার্থী খাদিজার মুক্তির দাবিতে জাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
রবিবার, আগস্ট ২৭, ২০২৩ ৮:৪৯ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
রবিবার, আগস্ট ২৭, ২০২৩ ৮:৪৯ অপরাহ্ণ

জাবি প্রতিনিধি
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা দুই মামলায় ৩৬৫ দিন ধরে কারাগারে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২৭ আগস্ট) দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে শহীদ মিনার, বটতলা থেকে ট্রান্সপোর্ট চত্বরে এসে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
এ সময় মিছিল থেকে সংস্কার নয় বাতিল চাই, সিএসএ বাতিল চাই; হ তে হাসিনা, হ তে হত্যাকারী; খাদিজা জেলে কেনো, শেখ হাসিনা জবাব দে; লেখক মোশতাক মরলো কেনো, শেখ হাসিনা জবাব চাই; মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই, খাদিজার মুক্তি চাই ইত্যাদি স্লোগান দেয়া হয়। মিছিলে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইজা মেহজাবিন প্রিয়ন্তীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী প্রাপ্তি তাপসী দে। তিনি বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদিজাতুল কুবরা অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী তার স্বপ্ন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবে। শুধুমাত্র ওয়েবিনার হোস্ট করার কারণে অর্থাৎ উপস্থাপক হওয়ার অপরাধে ৩৬৫ দিন ধরে জেলে থাকতে হচ্ছে। খাদিজার বাবা বিদেশে থাকেন প্রতিদিন তার মা, বড় বোন কোর্ট আদালত করতে করতে তারা ক্লান্ত। খাদিজা যে প্রশ্ন গুলো করেছিল প্রশ্নগুলো আসলে কেমন ছিল, বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির অবস্থা এখন কি, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রয়েছে কি এবং তাদের পরিস্থিতি কেমন, এ ধরনের প্রশ্ন স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিকদের করা অধীকার। এই প্রশ্নগুলো করার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীকে ৩৬৫ দিন ধরে জেল খাটতে হচ্ছে। কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এখনও নিশ্চুপ, আর প্রক্টর খাদিজার বড় বোনকে অপমান করেছে যখন তার কাছে তারা সাহায্যের জন্য যান। এ থেকেই বুঝতে পারি বিশ্ববিদ্যালয় কতটা রাষ্ট্রের পা চাটা কুকুর হয়ে গেছে। এই জমায়েত থেকে আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই খাদিজাকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে, তাকে তার শিক্ষাজীবন ফিরিয়ে দিতে হবে, এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরকে জবাবদিহি করতে হবে।’
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া জাহান বলেন, ‘অল্প বয়স্ক একটা মেয়েকে এভাবে জামিন নাকচ করে কেনো রেখে দেয়া হচ্ছে? রাষ্ট্রের প্রশ্নে এত ভয় কেনো? এই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট মূলত ক্ষমতাসীনদের জন্য, এই অ্যাক্ট এর মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে নিপীড়ন ছাড়া আর কিছু করা হচ্ছে না। খাদিজার যে সকল ক্ষতি হয়েছে সেগুলো সরকারের সম্পূর্ণ পুষিয়ে দিতে হবে।’
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী ঋদ্ধ্য অনিন্দ্য গাঙ্গুলী বলেন, ‘আমাদের বোন খাদিজাকে রাষ্ট্রের গুন্ডা বাহিনী পুলিশের দ্বারা কাশিমপুর কারাগারে ৩৬৫ দিন ধরে আটক রাখা হয়েছে। আমরা দেখেছি কারাগারে কনডেম সেলে মুশতাককে কিভাবে অত্যাচার করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে, কার্টুনিস্ট কিশোর যখন বেরিয়ে আসে তখন তার নিকট থেকে শুনেছি সেই ঘটনা কত হৃদয় বিদারক। বর্তমান সরকার দেশকে গণতন্ত্রের দেশ বলে দাবি করে সে দেশে এমন একটি ঘটনা ঘটতে পারে না। গণতন্ত্র যে অবশিষ্ট নেই সেটা বোঝার জন্য ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বা সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট-ই যথেষ্ট। লেখক বলেন কবি, শিক্ষক, শিক্ষার্থী বলেন এমনকি গার্মেন্টস-এর একজন কর্মী কেও ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের নামে উঠিয়ে নিয়ে গেছে। যদি কেউ ফেসবুকে কমেন্ট, ভিডিও আপলোড করে এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে মনে করে তখন তাদের উঠিয়ে নিয়ে যায়। প্রত্যেকটি শ্রেণি পেশার মানুষের শেখ হাসিনার ওপর আস্থা নেই। তাই বলব আমাদের রাস্তায় নামতে হবে। স্বৈরাচারী চিরস্থায়ী হয় না। আইয়ুব গেছে যে পথে হাসিনা যাবে সেই পথে।’
জনতার আওয়াজ/আ আ
