তেরো বছর দেশছাড়া এমপি কায়কোবাদ - জনতার আওয়াজ
  • আজ বিকাল ৪:২৬, বুধবার, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২রা জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি
  • jonotarawaz24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

তেরো বছর দেশছাড়া এমপি কায়কোবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ: মঙ্গলবার, অক্টোবর ৮, ২০২৪ ৮:০৫ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: মঙ্গলবার, অক্টোবর ৮, ২০২৪ ৮:০৫ অপরাহ্ণ

 

জনতার আওয়াজ ডেস্ক
আওয়ামীলীগ সরকারের ষড়যন্ত্র মূলক মিথ্যা মামলার শিকার হয়ে দীর্ঘ তেরো বছর ধরে প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের বাইরে রয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা-৩ মুরাদনগর আসনের ৫বারের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ।

এলাকায় তুমুল জনপ্রিয়তার কারনে ঈর্ষান্বিত হয়ে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় জড়িয়ে দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এইনেতাকে দেশে আসতে দেয়নি ক্ষমতাশীনরা।

২০২৩ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারী তার প্রাণপ্রিয় মায়ের মৃত্যু হলেও মায়ের জানায় অংশ নিতে পারেননি তিনি। মায়ের লাশটা দাফনের জন্যও তাকে সুযোগ দেয়নি স্বৈরশাসকরা। পাশাপাশি উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের ৪ সহস্রাধিক নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৬৯টি মিথ্যা মামলা দিয়েছে ফ্যাসিষ্ট সরকার।

মুরাদনগরে তিনি এতোটাই জনপ্রিয় যে রাজনৈতিক পরিচয়ের বাইরেও অনেক ভক্ত অনুসারী রয়েছে এই নেতার। এলাকার তুমুল জনপ্রিয় ও বর্ষীয়ান এই নেতা বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার অবস্থান করছেন।

গণঅভ্যূথানে হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় হামলা, ভাংচুর ও ক্ষয়ক্ষতি হলেও সাবেক এমপি কায়কোবাদের কঠোর অবস্থান ও দিক-নির্দেশনায় মুরাদনগর উপজেলায় এমন সহিংস ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে।

এছাড়াও তিনি বর্তমান সময়ে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য ও সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজির বিরুদ্বে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। একযুগের বেশি সময় ধরে দেখতে না পারা প্রিয় নেতাকে একনজর দেখার জন্য উম্মুখ হয়ে আছে মুরাদনগরের সর্বস্তরের জনগন। তাদের মুখে শুধু একটাই প্রশ্ন যে কবে দেশে আসছেন তাদের দাদাভাই।

জানা যায়, কুমিল্লা জেলার ভৌগলিক অবস্থানে সবচেয়ে বড় উপজেলা হলো মুরাদনগর। ৩৪০বর্গ কিলোমিটার আয়তনের বৃহৎ উপজেলাটি ২টি থানা ২২টি ইউনিয়নে ৩১৫টি গ্রাম নিয়ে গঠিত কুমিল্লা-৩ মুরাদনগর সংসদীয় আসন। কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দেশের অন্যান্য এলাকা থেকে সম্পূর্নই ভিন্ন।

সাড়ে ছয় লক্ষ জনগনের বিশাল এ জনপদের সাধারন মানুষকে স্বার্থহীন ভালবাসা দিয়ে প্রতিটা মানুষের হৃদয়ের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন ৫ বারের নির্বাচিত সাবেক সাংসদ কাজী শাহ মোফাজ্জাল হোসাইন কায়কোবাদ।

তার দক্ষ নেতৃত্বের বদৌলতে গড়ে উঠা মুরাদনগর উপজেলা বিএনপি সকল মামলা হামলা মোকাবেলা করে এখন কঠিন ইস্পাতের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ। দাদা কায়কোবাদ মুরাদনগর বাসীর অত্যন্ত প্রিয় মুখ। যার কাছে সমাজের সকল স্তরের মানুষ সহজেই মনের সকল কথা বলতে পারে। বিপদে আপদেসহ সকল প্রয়োজনে তাকে পাশে পায়।

এভাবেই তিনি লক্ষ লক্ষ মানুষের আস্থা ও ভালবাসা অর্জন করে সংসদে এই জনপদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন পাঁচবার। তিনি দেশের সর্ব বৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। মুরাদনগরের সকল সভ্যতা ইতিহাস ঐতিহ্যের সাথে জড়িয়ে রয়েছে যার অস্তিত্ব।

গ্রামীণ অবকাঠামো থেকে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার অবদান একমাত্র তারই। সেসময় তিনি মুরাদনগরের রামচন্দ্রপুর-শ্রীকাইল-নবীপুর সড়ক, ইলিয়টগঞ্জ-মুরাদনগর সড়ক, মুরাদনগর-হোমনা সড়কসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সড়কসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করেন।

আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতার মসনদে বসার পর থেকেই একটি প্রভাবশালী মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। ২০১১সালে এমপি থাকাকালীন সময়ে তিনি যখন অসুস্থ হয়ে দেশের বাহিরে চিকিৎসারত ছিলেন সে সময়ে তাকে ২১ শে আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলার মত একটি স্পর্শকাতর মামলায় জড়িয়ে তাকে মুরাদনগর বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়।

তাকে দুরে রেখে মুরাদনগরের উন্নয়নকেই ব্যাহত করেনি, বঞ্চিত করেছে সাধারন নিপিড়িত মানুষকে, অশ্রু ঝড়িয়েছে তার লাখ লাখ ভক্তের। তবুও থেমে থাকেননি তিনি মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতেন তার প্রিয় মুরাদনগরবাসীর সাথে। সাধারন মানুষের কোন সমস্যার কথা শুনলেই দলের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে নিজ উদ্যোগে নিপিড়িত মানুষের সমস্যা সমাধানের ব্যাবস্থা করেছেন।

মুরাদনগরের উন্নয়নের রূপকার ও আধুনিক মুরাদনগরের স্থপতি কায়কোবাদ মুরাদনগরের সর্বস্তরের জনগনের অন্তর জুড়ে মিশে রয়েছেন। যাকে এক নজর দেখার জন্য মুরাদনগরের মানুষ অধিক আগ্রহে শুধু অপেক্ষাই নয় রীতিমত পাগল প্রায় হয়ে আছেন। আবাল, বৃদ্ধ, বনিতা থেকে শুরু করে উপজেলাবাসীর একটাই দাবী তাদের প্রিয় দাদাকে কাছে পাওয়া।

বলতে গেলে এটি এখন মুরাদনগরবাসীর একটি প্রাণের দাবিতে পরিনত হয়েছে। তিনি মিথ্যা মামলার বেড়াজাল ছিন্ন করে সকল মুরাদনগরের লাখো ভক্তের মাঝে ফিরে আসবেন এটাই প্রত্যাশা সকলের।

এদিকে দাদা কায়কোবাদ এমাসেই (অক্টোবর) দেশে ফিরে মুরাদনগরে আসবেন বলে নিশ্চিত করেছে বিশ্বস্ত একটি সুত্র।

উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালে কায়কোবাদ প্রথম বারের মতো স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৯৬সালে মুরাদনগরে তিনবার নির্বাচন হয়। সেসময় আওয়ামীলীগ সরকারে থাকা অবস্থায় নির্বাচন হলেও এলাকায় তুমুল জনপ্রিয় কায়কোবাদ আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে পরাজিত করে আবারো এমপি নির্বাচিত হন।

তিনি এমপি হয়ে অবহেলিত মুরাদনগরকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিনত করার মাধ্যমে উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের ৩১৫টি গ্রামের উন্নয়ন করে এই উপজেলাকে একটি সম্ভাবনাময় অঞ্চল হিসেবে দাড় করিয়েছেন।

তিনি ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে এতোটাই জনপ্রিয়তা অর্জন করেন যে আরো কোন নির্বাচনে পরাজিত হতে হয়নি তাকে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদ বলেন, এই জালিমদের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তার সন্তান তারেক রহমানসহ দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ।

তিনি বলেন, আমার অসুস্থ ছোট্ট ভাইটি কোন রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল না। তার বন্ধুর মৃত্যুর খবরে জানাযা দিতে যায় এলাকায়। জানাযার ময়দান থেকে তাকে গ্রেফতার করে নিয়েছিলো পুলিশ বাহিনী। আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে আমি ১৩টি বছর দেশে আসতে পারি না।

আমার মায়ের মৃত্যুর পরে তার জানাযা ও দাফন আমি দিতে পারি নাই। মাকে শেষ দেখাটাও দেখতে দেয়নি আমাকে। যারা দেশের মানুষের উপর জুলুম অবিচার করেছে এই জুলুমকারীদের বিচার আল্লাহ চাইলে দেশের মাটিতে হবে ইনশাআল্লাহ বলে জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
 
 
জনতার আওয়াজ/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ