বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়া ও কারাবন্দী সাংবাদিকদের মুক্তি দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
মঙ্গলবার, মার্চ ১৪, ২০২৩ ৯:৪৪ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
মঙ্গলবার, মার্চ ১৪, ২০২৩ ৯:৪৪ অপরাহ্ণ

সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যম এক ভয়ঙ্কর সময় পার করছে। সরকার একের পর এক মিডিয়া বন্ধ করে দিচ্ছে। সাংবাদিকদের উপর হামলা ও মামলা দিয়ে নির্যাতন করছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার সিনিয়র ফটোসাংবাদিক আজিজ ফারুকীকে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।’
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ‘এভাবে গণমাধ্যম বন্ধ করে ও সাংবাদিকদের নির্যাতন করে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। কাজেই অবিলম্বে সকল বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিন, আজিজ ফারুকীসহ সব কারাবন্দী সাংবাদিককে মুক্তি দিন। তা নাহলে আপনাদের পরিণাম ভয়াবহ ও কঠিন হবে।’
সিনিয়র ফটোসাংবাদিক আজিজ ফারুকীর মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) আয়োজনে মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
বিএফইউজে’র সভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো: শহিদুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন ও জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি হাসান হাফিজ, বিএফইউজের সহ-সভাপতি ওবাইদুর রহমান শাহীন, কোষাধ্যক্ষ খায়রুল বাশার, সাংগঠনিক সম্পাদক খুরশীদ আলম, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এ কে এম মহসীন, সহ-সভাপতি নাসিম শিকদার, ডিইউজের সহ-সভাপতি শাহীন হাসনাত, যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার, কোষাধ্যক্ষ মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক গাযী আনোয়ার, দফতর সম্পাদক ডি এম আমিরুল ইসলাম অমর, নির্বাহী সদস্য শহীদুল ইসলাম, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন ইবনে মঈন চৌধুরী, সাবেক নির্বাহী সদস্য এইচ এম আলামিন, সদস্য ইকবাল মজুমদার তৌহিদ, আবু হানিফ, তাজুল ইসলাম প্রমুখ।
ডিইউজের প্রচার সম্পাদক খন্দকার আলমগীর হোসাইনের সঞ্চালনায় সবাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিইউজের সহ-সভাপতি রাশেদুল হক, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদ, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য আব্দুস সেলিম, জাকির হোসেন, ডিইউজের নির্বাহী সদস্য আবুল হোসেন খান মোহন, কাজী তাজিম উদ্দিন, রফিক লিটন প্রমুখ।
রুহুল আমিন গাজী বলেন, ‘সাংবাদিকদের কাজ হলো সংবাদ ও ছবি সংগ্রহ করা। ফটোসাংবাদিক আজিজ ফারুকী অফিসের অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে পুলিশ কোনো কারণ ও মামলা ছাড়া তাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। তার সাথে থাকা ক্যামেরা ও মোবাইল কেড়ে নিয়েছে। এই ঘটনা থেকে আবারো প্রমাণিত হলো এই সরকারের কাছে গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আশা করা যায় না। ফ্যাসিস্ট কায়দায় সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। অবিলম্বে আজিজ ফারুকীকে মুক্তি দিন। দিনকালসহ সব বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিন। তা নাহলে আপনাদের কঠোর জবাব দিতে সাংবাদিকসমাজ বাধ্য হবে।’
এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘গণমাধ্যমের খুনি সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য আমরা সাংবাদিকরা রাজপথ ছাড়তে পারছি না। আমরা দিনকাল বন্ধের প্রতিবাদে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। এরই মধ্যে একজন সিনিয়র সাংবাদিক আজিজ ফারুকীকে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ক্যামেরা ও মোবাইর কেড়ে নিয়ে অন্যায়ভাবে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় কয়েকজন পুলিশের জন্য গোটা পুলিশ বাহিনী প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আপনারা এসব হামলা-মামলা, গ্রেফতার বন্ধ করুন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিন, দিনকালসহ সব বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিন, আজিজ ফারুকীসহ সকলের নিঃশর্ত মুক্তি দিন। তা নাহলে আপনাদের পরিণতি হবে ভয়াবহ ও কঠিন।’
নুরুল আমিন রোকন বলেন, ‘এই সরকার যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই মিডিয়া বন্ধ করে বাকস্বাধীনতা কেড়ে নেয়। এখনো তার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। এরই অংশ হিসেবে দিনকাল বন্ধ করেছে। এবার সিনিয়র সাংবাদিক আজিজ ফারুকীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। হামলা-মামলা করে কোনো সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি। এই সরকারও টিকতে পারবে না। অবিলম্বে দিনকালসহ সব বন্ধ মিডিয়া খুলে দিন, আজিজ ফারুকীসহ সকল কারাবন্দী সাংবাদিককে মুক্তি দিন।’
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যম এক ভয়ঙ্কর সময় পার করছে। একের পর এক গণমাধ্যম বন্ধ করে হাজার হাজার সাংবাদিকদের বেকার করে দিয়েছে। সাংবাদিকদের উপর হামলা করে ও মামলা দিয়ে নির্যাতন করছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজিজ ফারুকীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য সংবিধান, আদালত ও প্রশাসনকে ব্যবহার করছে। অবিলম্বে দিনকালসহ সব বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিন, আজিজ ফারুকীসহ সব কারাবন্দী সাংবাদিককে মুক্তি দিন। তা নাহলে এই ফ্যাসিবাদী সরকারকে না বলতে হবে, লাল কার্ড দেখাতে হবে।’
ডিউজের সাধারণ সম্পাদক মো: শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট, গুম-খুনের কথা যাতে জনসমক্ষে উন্মোচিত হতে না পারে, সেজন্য একের পর এক পত্রিকা বন্ধ করে দিচ্ছে সরকার। সাংবাদিকদের গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সিনিয়র ফটোসাংবাদিক আজিজ ফারুকীকে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে অন্যায়ভাবে পুলিশ গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। এভাবে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করে এ সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। অবিলম্বে আজিজ ফারুকীকে মুক্তি দিন, দিনকালসহ সব বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিন।
জনতার আওয়াজ/আ আ
