বল প্রয়োগ করে থামাতে যেয়ে সরকার প্যান্ডোরার বাক্স খুলে দিয়েছে: ফারুকী - জনতার আওয়াজ
  • আজ দুপুর ২:০৪, সোমবার, ১২ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৪ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি
  • jonotarawaz24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

বল প্রয়োগ করে থামাতে যেয়ে সরকার প্যান্ডোরার বাক্স খুলে দিয়েছে: ফারুকী

নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ: বুধবার, জুলাই ৩১, ২০২৪ ৫:০২ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: বুধবার, জুলাই ৩১, ২০২৪ ৫:০২ অপরাহ্ণ

 

বিনোদন ডেস্ক

কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে দেশজুড়ে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের পক্ষে সরব ছিলেন দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন স্ট্যাটাসে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি।

তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) রাতে আন্দোলন নিয়ে আবারও কথা বলেছেন ফারুকী। যেখানে এই নির্মাতা বলতে চেয়েছেন, কোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার পরেও এখনও কিসের দাবিতে আন্দোলন চলছে।

ফারুকী তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, কোটা তো মেনে নিয়েছে। এখন কিসের আন্দোলন? এই প্রশ্ন যাদের মনে আসছে তাদের জন্য একটু বুঝায়ে বলি, আমি যদ্দুর বুঝতে পারছি আর কি!

শুরুতেই নির্মাতা উল্লেখ করেন, এই আন্দোলনটা তাচ্ছিল্য এবং বল প্রয়োগ করে থামাতে যেয়ে সরকার প্যান্ডোরার বাক্স খুলে দিয়েছে। যে বাক্সে জমা ছিল অনেক প্রশ্ন, অনেক আগে থেকেই। এই প্রজন্ম সেই প্রশ্নগুলোকে সামনে নিয়ে এসেছে। তার মধ্যে একটা বড় প্রশ্ন, নাগরিকের সাথে সরকারের সম্পর্ক কি হবে? প্রভু-দাসের নাকি সেবক-মালিকের? একদিনে এতজন দাস মেরে ফেললে তো দাস বিদ্রোহ হয়ে যেতো? স্বাধীন দেশে দেশের মালিক জনগনকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য যে পাবলিক সারভেন্টদের নিয়োগ দেওয়া হলো, তারা আমাদের এতগুলো মানুষকে মেরে ফেললো? যারা এতগুলো খুনের সাথে জড়িত, হুকুমের আসামি তাদের শাস্তি হবে কবে? একদিকে আলোচনা আর অন্যদিকে গ্রেফতার-গুলি এটা কোন খেলা? এটা কখন বন্ধ হবে?

এরপর ফারুকী লেখেন, প্রশ্ন আরো উঠেছে, সরকারে যারা ক্ষমতায় থাকে তারা জনগনের সাথে দম্ভ আর অহমিকা নিয়ে অপমান করে কথা বলবে? নাকি রেসপেক্ট নিয়ে কথা বলবে?

নির্মাতার কথায়, জনগণ সরকারকে ব্যঙ্গ করবে, অপমান করবে, তীব্র সমালোচনায় ছিলে ফেলবে। শিল্পী স্বাধীন ভাবে গান বানাবে, ফিল্ম বানাবে, কারো মেপে দেয়া স্বাধীনতা নিয়ে তাকে চলতে হবে না। এইসবই গণতন্ত্রের অংশ। সরকারে যেই থাকুক তাকে বিনয়ের সাথে এগুলো গ্রহণ করতে হবে, এটাই গণতান্ত্রিক সমাজের রীতি। সরকার কি আদৌ এই রীতি মানার জন্য মানসিকভাবে তৈরি? নাকি সরকার বুলেট-ধমক-গ্রেফতারের ভাষায় কথা বলবে?

শেষে আরেকটা উপলব্ধি বলি, এই আন্দোলনের চরিত্র যারা এখনো বুঝতে পারেন নাই, তাদের উদ্দেশ্যে বলি, এই আন্দোলনে কারা আছে তাদের পরিচয় দেখেন। হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান, ইংলিশ মিডিয়াম-বাংলা মিডিয়াম-আরবী বিভাগ সব এসে এক কাতারে হাজির। এদের দাবী ‘ন্যায়বিচার আর মর্যাদা’! কার রাজনৈতিক বিশ্বাস কি সেটা বিবেচনায় নিয়া এরা আন্দোলনে নামে নাই। ফলে ঐসব পুরোনো দিনের বাইনারি দিয়া এদের ভাগ করতে পারবেন না, এদের বুঝতে পারবেন না।

ফারুকীর কথায়, আপাতত এতটুকু বলতে পারি, এই আন্দোলন কোনো ছেলে ভোলানো ছড়া বা নাটক দিয়ে থামানো যাবে না। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর নিয়েই এই আন্দোলন থামবে। গণতান্ত্রিক সমাজ তৈরির ক্ষেত্র তৈরি না করে ব্যারাকে ফিরে গেলে আমাদেরকে আরেকটা ব্যর্থ বিপ্লবের মোয়া হাতে নিয়েই ঘুমাতে হবে। তবে আমার বিশ্বাস এই আন্দোলন আমাদেরকে একটা স্বাধীন এবং গণতান্ত্রিক সমাজে উত্তরণের রাস্তা দেখাবে। কেনো এই বিশ্বাস? কারণ মানুষের এতো স্বতঃস্ফুর্ত আবেগ এর আগে আমি দেখি নাই।

সবশেষ একটা উদাহরণ টেনে ফারুকী বলেন, একটা উদাহরন দেই- এক ছাত্রকে আটকের পর কোর্টে হাজির করা হইছে। পেছন পেছন তার মা দৌড়ে এসে ছেলের পাশে দাঁড়ায়ে ছেলের বুকে সজোরে থাম্প দিয়ে বলে, “টেনশন করিস না”!
এই অভয় পরাভব মানবে না।

Print Friendly, PDF & Email
 
 
জনতার আওয়াজ/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ