বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের জন্ম ইতিহাস
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৪ ৩:০৪ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৪ ৩:০৪ পূর্বাহ্ণ

নজরুল ইসলাম চৌধুরী ( নজরুল )
আসছে ১লা জানুয়ারী আমার প্রানপ্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৪৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
১৯৭৯ সালের ১লা জানুয়ারী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এদেশের ছাত্রসমাজকে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের আদর্শের ভিত্তিতে দেশের ছাত্র রাজনীতিতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল প্রতিষ্ঠা করে এদেশের ছাত্র সমাজে একটি আলোর দিশারীর সূচনা করেছিলেন। গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে। সাথে সাথে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করছি তাঁর বিদেহী আত্মার প্রতি। আমার জীবনের সর্বপ্রথম রাজনৈতিক পদযাত্রা শুরু হয়েছিল এই ছাত্রদলের সাংগঠনিক কার্যক্রম ও দায়িত্ব নিয়ে। ফেনী জেলার অধীনে আমার নিজস্ব ছাগলনাইয়া থানার প্রতিষ্ঠাতা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক-এর দায়িত্ব নিয়েই আমার প্রথম যাত্রা শুরু হয়েছিল। পরবর্তীতে ফেনী জেলা ছাত্রদলের নির্বাচিত সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছিলাম সেই স্বৈরাচারী এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের শুরু থেকে ’৮৫পর্যন্ত। ’৮৫ সালে ফেনী জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে মূল দল অর্থাৎ বি.এন.পি. তে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলাম। ’৯১পর্যন্ত এই দায়িত্বে ছিলাম। ’৯১-এর পরথেকে আজ পর্যন্ত নিজের অবস্থানটুকু না-ই বা তুলে ধরলাম।
ছাত্রদলের ৪৬ তম প্রতিষ্ঠালগ্নে আমি ছাত্রদলের জন্মের ইতিহাস ও গুরুত্ব নিয়ে বর্তমান প্রজন্মের জন্য অতি সংক্ষেপে কিছু স্মৃতিচারণ করার মনস্থ করছি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা-উত্তর দেশের সর্বস্তরে যেমন কলুষিত হয়ে গিয়েছিল, ঠিক তেমনি কলুষিত হয়ে গিয়েছিল সদ্য স্বাধীন দেশের ছাত্র সমাজটিও। ছাত্রলীগের তান্ডবে দেশের ছাত্র সমাজের ভবিষ্যত নিমজ্জিত হয়ে পড়েছিল এক গহীন অন্ধকারে। আওয়ামী ছাত্রলীগের মহা তান্ডব ও ভাগাভাগির অন্তর্কোন্দলের কারণেই দেশ স্বাধীনের মাত্র কয়েক বছর যেতে না যেতেই ছাত্রলীগ ২টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। যা ছিল দেশের ছাত্রসমাজের অবক্ষয়ের প্রতিফলন। তখনকার ছাত্রলীগের এক গ্রুপের নেতৃত্বে ছিল নূরে আলম সিদ্দিকী ও আবদুল কুদ্দুস মাখন। যারা ছিলেন ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক। অপরদিকে ডাকসুর ভিপি আ.স.ম. আবদুর রব ও শাহজাহান সিরাজ ছিলেন বিদ্রোহী গ্রুপে। পরবর্তীতে যাদের সম্পৃক্ততা হয়েছিল জাসদের সাথে। বিভক্ত হয়েও কি নিস্তার হয়েছিল? না; দুই গ্রুপের মধ্যে শুরু হয়েছিল মারামারি আর বন্দুকযুদ্ধ। অপরদিকে সরকার মদদপুষ্ট মুজিববাহিনী ছাত্রলীগ ছিল দেশের সর্বস্তরেই সন্ত্রাসের আরেক আতঙ্কের নাম। সবমিলিয়ে আওয়ামী ছাত্রলীগের অন্তর্কোন্দলের কারণেই প্রাণ দিতে হয়েছিল অগণিত ছাত্র-যুব সমাজকে। উল্লেখ্য যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কোহিনূর সহ ৭ জন ছাত্রকে মহসীন হলের নীচতলার ফটকে ব্রাশ ফায়ারে প্রাণ দিতে হয়েছিল। যা ছিল ঐ সময়ের সেভেন মার্ডার নামে লোমহর্ষক এক মর্মান্তিক ইতিহাস। যে গেটের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছিল, সে গেটটি আজো বন্ধ হয়ে সেই করুণ ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে আছে।
১৯৭৩ সালের ডাকসু নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপর্যয়কে ঠেকানোর জন্য শেখ মনি’র নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে অবিরাম বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ আর ব্যালট বাক্স ছিনতাই-এর নিকৃষ্ট ইতিহাস আমরা কি সেই সময় থেকে প্রজন্ম উত্তর প্রজন্মকে অবহিত করতে পেরেছি? তারা কি জানে ’৭৩ সালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে এক ছাত্রীর সম্ভ্রমহানীর ফলে নিজেকে কলঙ্কমুক্ত করতে সূর্যসেন হলের তৃতীয় তলা থেকে আত্মহত্যার কাহিনী? কালক্রমে সৃষ্টি হয়েছিল রক্ষীবাহিনী। যে রক্ষীবাহিনী হাজার হাজার জাসদ কর্মীকে অকাতরে হত্যা করেছে। যার ইতিহাস আসলেই আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা রাজনৈতিক প্রেম আর মমতাহীনতার কারণে সেকাল থেকে আজ পর্যন্ত কোন প্রজন্মকেই অবহিত করতে পারিনি।
১৯৭৮ সালের ২৬ অক্টোবর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দেশের ছাত্র সমাজকে দেশ ও জাতির প্রধান হাতিয়ার হিসেবে গঠন করার লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। সেই সুবাদে জিয়াউর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন ছাত্র-শিক্ষক সকলের সঙ্গে মতবিনিময় করতে। রাষ্ট্রপতির সাথে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (অব.) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আ.স.ম. মুস্তাফিজুর রহমান ছিলেন। সেদিন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে শহীদ জিয়া প্রবেশ করা মাত্রই কতিপয় ছাত্র ও বহিরাগত দুষ্কৃতকারী মানহানিকর শ্লোগান দিয়ে জিয়ার দিকে লক্ষ্য করে পায়ের জুতা প্রদর্শন ও ইট পাটকেল ছোড়া আরম্ভ করেছিল। আমার যতটুকু ধারণা বর্তমান প্রজন্ম তো দূরের কথা, এখনকার বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের অনেক নেতারাই জানেন কী না আমার সন্দেহ। যাক সে কথা, জিয়াউর রহমান এই পরিস্থিতি দেখে হঠাৎ করে গাড়ি থেকে নেমে উত্তেজিত এবং উচ্ছৃংখল ছাত্রদের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলেন। আর অমনি বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা শুরু করেছিল তারা। বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ না করে তিনি তাদের মাঝে পৌঁছে গিয়েছিলেন। এক পর্যায়ে শহীদ জিয়ার শরীর থেকে রক্ত ঝরা আরম্ভ হয়েছিল। ঐ মুহূর্তে নিরাপত্তা বাহিনী বন্দুক তাক করে বলছিলেন, স্যার, গিভ আস অর্ডার। কঠিন কন্ঠে জিয়াউর রহমান নিষেধ করেছিলেন, খবরদার! দলবদ্ধ উচ্ছৃংখল ছাত্রদের জিয়াউর রহমান বললেন, বাবারা তোমরা কী চাও? আমি জানতে এসেছি। আমাকে মেরে ফেললে যদি সব হয়, তবে আমি তোমাদের হাতে মরতে প্রস্তুত। তথাপিও তাদের মান হানিকর শ্লোগান আর উচ্ছৃংখলতা বন্ধ হয়নি। তিনি আবেগজড়িত কন্ঠভরে বলেছিলেন, বাবারা তোমরা ক্ষান্ত হও! আমি তোমাদের সকল দাবি-দাওয়া মেনে নেব। কারণ, তোমরাই আগামী দিনের একেক জন রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী, এমপি.। মুহূর্তের মধ্যে সবাই মাথা নিচু করে নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছিল। ঠিক সেই মুহূর্তেই ভার্সিটির চারপাশের হলের সামনে দাঁড়িয়ে অবলোকন করা ছাত্রছাত্রীরা সাইক্লোনের গতিতে ছুটে এসে জিয়াউর রহমানকে বেষ্টনীতে আবদ্ধ করেছিল। আর শ্লোগান দিচ্ছিল, জিয়া আমাদের বন্ধু, জিয়া আমাদের নেতা। নিকটতম রোকেয়া হলের শত শত ছাত্রীও সেই ক্ষণে সুনামীর গতিতে এসে বেষ্টনী দিয়ে ঘিরে ফেলেছিল জিয়াউর রহমানকে। মুহূর্তেই হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী জিয়াকে পিতৃতুল্যের মধ্যমণি করে শ্লোগানে মুখরিত করেছিল ঢাকা ভার্সিটির আকাশ-বাতাসকে। মিছিলটি ধীরে ধীরে টি.এস.সি’র দিকে এগিয়ে গিয়েছিল। জিয়ার গায়ে ছিল হাফ সাফারি। তখনও ইটপাটকেলের আঘাতে দু’হাতের ক্ষতস্থান থেকে রক্ষপাত হচ্ছিল। এক পর্যায়ে রক্ষঝরা অবস্থায় তিনি এক ঐতিহাসিক বক্তৃতা করেছিলেন। ছাত্র-শিক্ষক সকলকে আহ্বান জানিয়েছিলেন, আসুন, আমরা খোলা মনে বসবো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনবো। যা হবে সমগ্র দেশের ছাত্র সমাজের জন্য একটি মডেল। মুহূর্তের মাঝে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের তরুণ শিক্ষক ড. খন্দকার মোশাররফ এক আবেগঘন ভাষায় ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতির সামনে বক্তব্য রেখেছিলেন। ঐ বক্তব্যে তিনি রাষ্ট্রপতির কিছু সমালোচনাও করেছিলেন এবং ছাত্রদের মাঝ থেকে প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য রেখেছিলেন কাজী আসাদ, আ.ক.ম. গোলাম হোসেন, হাবীব উল্লাহ হাবীব, রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী ও এনায়েত উল্লাহ সহ আরো অনেকে।
জিয়াউর রহমান ড. মোশাররফ সাহেব সহ সকলের পুরো বক্তব্যই একজন ছাত্রের মতোই মনোযোগ সহকারে শুনেছিলেন। ঐ সময়ের ভিসি, প্রক্টর, শিক্ষক মিলিয়ে সবাই ছিলেন এক উৎকন্ঠায় কাতর। রাষ্ট্রপতি জিয়া বুঝতে পেরেছিলেন। আবার আরেক ভাষণ রাখলেন। সেই ভাষণে তিনি উপস্থিত হাজার হাজার ছাত্র শিক্ষককে অবাক ও নিথির করে দিয়েছিলেন। বিশেষ করে সাংবাদিকদের তিনি দু’হাত জোড় করে আবেদন করেছিলেন ঐ দিনের নিকৃষ্ট এ ঘটনা যেন কোন সংবাদ মাধ্যমে না আসে। কারণ, তিনি বলেছিলেন, এদের যদি প্রতিশোধ নেয়া হয়, তবে দেশের ছাত্র সমাজের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে। ছাত্র এবং শিক্ষকদের তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন সকল ভেদাভেদ ভুলে আপনাদের নির্ধারিত তারিখেই আমি আপনাদের সাথে মতবিনিময়ে বসবো। তবে আমার শুধুমাত্র একটি অনুরোধ থাকবে আপনাদের সকলের কাছে। তা হচ্ছে প্রাচ্যের গর্ব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরব ফিরিয়ে আনার জন্য ছাত্রদের নিয়মিত পড়াশোনা করতে হবে, আর সম্মানিত সকল শিক্ষকবৃন্দগণ! আপনারা আপনাদের স্ব স্ব ছাত্রকে আগামী দিনের দেশ-জাতির শিক্ষক হিসেবে গড়ে তুলবেন। কারণ, দেশ – জাতির ভরসা এবং ভবিষ্যৎ হচ্ছে একমাত্র দেশের ছাত্র সমাজ। পরবর্তীতে ছাত্র সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব দিয়েছিলেন তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আ.স.ম. মোস্তাফিজুর রহমান এবং এস. এ. বারী এ. টি-কে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৯ সালের ১লা জানুয়ারী কাজী আসাদকে আহ্বায়ক করে সর্বপ্রথম জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কমিটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং সূচনা হয়েছিল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের শুভ যাত্রা।
রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ছাত্ররাজনীতির জন্য নয় শুধু, বিএনপির সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীদের জন্য গঠন করেছিলেন এক রাজনৈতিক ওয়ার্কশপ ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। যার অধ্যক্ষ ছিলেন দেশের তৎকালীন বরেন্য সাংবাদিক ব্যক্তিত্ব মরহুম সানাউল্লাহ নূর। ওয়ার্কশপের অধ্যক্ষকে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানও স্যার বলে সম্বোধন করতেন। গহীন অন্ধকারে নিমজ্জিত ছাত্র সমাজকে সন্ত্রাস ও অস্ত্রমুক্ত করে জাতি গঠনের মডেল হিসেবে গড়ার লক্ষ্যে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল কলেজের ছাত্র সংসদের কাঠামো তৈরি করেছিলেন। গভীর মূল্যায়ন ও বিশ্বস্ততার সাথে জিয়াউর রহমান বলতেন, দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র সংসদই হচ্ছে দেশের আসল জাতীয় সংসদের উৎপাদনের ভিত্তি এবং ভিপি, জিএস, এজিএস সহ সকল ছাত্র নেতারাই হবেন ভবিষ্যতে দেশের একেক জন রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী- এমপি। যারা হবেন আগামী দিনের দেশের কান্ডারী। বড়ই পরিতাপের বিষয়, শহীদ জিয়ার দল বিএনপি তাঁর অবর্তমানে এই জাতি গঠনের অমূল্য কাঠামো থেকে আজ অনেক দূরে। যার ফলে আজ দেশের রাজনীতি জিম্মি হয়ে আছে অরাজনৈতিক সুবিধাবাদীদের কাছে।
একটি বিষয় তুলে ধরা অতি জরুরি, ১৯৭৩ সালে ডাকসুর নির্বাচনে মুজিববাদী ছাত্রলীগ কর্তৃক ব্যালট বক্স লুট করার পর ডাকসুর নির্বাচন স্থগিত হয়ে গিয়েছিল দীর্ঘদিনের জন্য। ১৯৮০ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান পর্যায়ক্রমে ডাকসু, বাকসু, ইউকসু, বামেকসু, চামেকসু সহ সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে সর্বমোট ৩০৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করেছিলেন। ঐ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ছিলেন বরেন্য শিক্ষাবিদ মরহুম ফজলুল হালীম চৌধুরী। ডাকসুর ঐ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনকে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছিলেন ডাকসুর নির্বাচন চলাকালীন কোন ছাত্রনেতাই তার কোন গাড়ি বা মোটর সাইকেলে আরোহী হয়ে নির্বাচনী এরিয়ার ভিতরে ঢোকার অনুমতি না দেয়ার জন্য। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বরেন্য এক ছাত্রনেতা জামাল শরীফ হিরূ দলীয় কাজে ঢাকার বাহিরে গিয়েছিলেন। ফেরত এসে বিকেল ৫টার পূর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে ভোট প্রদানের জন্য তার নিজ গাড়ি নিয়ে ঢুকতে চেয়েছিলেন। পুলিশ তাকে বাধা প্রদান করেছিলো। ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রনেতা হিসেবে জামাল শরীফ হিরূ কিছুটা ক্ষমতার অপব্যবহার করেছিলেন। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের আইজি রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেছিলেন। রাষ্ট্রপতির কঠোর নির্দেশে ঐ মুহূর্তেই জামাল শরীফ হিরূকে গ্রেফতার করে হাজতে প্রেরণ করা হয়েছিলো। খুব সম্ভবত জামাল শরীফ হিরূ সেই সময়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অথবা ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
আমি বিএনপিকে সবিনয়ে অনুরোধ করবো যে, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের দেশ গঠনের মূল কাঠামো ফিরিয়ে আনুন। তবেই দেশ বাঁচবে, ও তাঁর আদর্শ বাঁচবে এবং বিনয়ের সাথে অনুরোধ করবো গোটা দেশের আনাচে কানাচে শহীদ জিয়া ও বিএনপির সত্যিকারের আদর্শ লালনকারী বিচ্ছিন্নভাবে পড়ে আছে। যারা আসলেই অবহেলিত। তাদের মূল্যায়ন করুন, তাদেরকে কাজে লাগান।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল চির অমর হোক।
নজরুল ইসলাম চৌধুরী,
সাবেক সভাপতি, ফেনী জেলা ছাত্রদল
ও প্রচার সম্পাদক ফেনী জেলা বিএনপি।
জনতার আওয়াজ/আ আ
