বিএনপির নাম ব্যবহার করে লুটপাটে নেমেছে বরিশালের রিপন
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
সোমবার, মার্চ ১০, ২০২৫ ৪:৫২ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
সোমবার, মার্চ ১০, ২০২৫ ৪:৫২ অপরাহ্ণ

জনতার আওয়াজ ডেস্ক
দশ বছর আগে ছিলেন সাধারণ কর্মচারী। সময়ের পরিবর্তনে দখলে নিয়েছেন জমিজমাসহ প্রতিষ্ঠানের মালিকানা। লাগামহীন লুটপাটে জড়িয়েছেন বরিশালের মুলাদী উপজেলার রিপন হোসেন। বিএনপি নেতাদের সঙ্গে ছবি ও পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছেন নিয়মিত।
রিপন হোসেন জন্ম বরিশালে হলেও মুন্সীগঞ্জ জেলাতে কলেজ জীবন শুরু করেন। ২০২৩ সালে ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কলেজ শাখার সভাপতি। পরে নানা অনিয়মের কারণে শিবির থেকে বহিষ্কার করা হয় তাকে। ২০১০ সালের দিকে জামায়াতের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করলেও তার নামে নানা অভিযোগ থাকায় জায়গা হয়নি দলটিতে। ২০১৫ সালের দিকে যুক্ত হয় যুবলীগের সঙ্গে। তৎকালীন যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা নুরু মিয়ার সঙ্গে যোগ দেয় যুবলীগে। সেখানে বেশিদিন জায়গা পায়নি রিপন। পরে ২০১৯ সালের দিকে যোগ দেয় বিএনপির রাজনীতিতে। ২ বছর কোনো অপকর্মে না জড়ালেও ২০২১ সালের দিকে জড়িয়ে পরে প্রতারণায়।
প্রতারণার মাধ্যমে হোমস্টোন লিমিটেড নামে একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির এমডি হয়ে যান রিপন। আইন অনুযায়ী কোনো প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ খেলাপি থাকলে সে প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তনের সুযোগ নেই। কিন্তু দেখা যায় ৪৬ কোটি টাকার ঋণখেলাপি থাকা অবস্থায় প্রতারণা করে ২০২১ সালে হোমস্টোনের এমডি হয় রিপন।
২০২২ সালে আরডিপি ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট নামে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জমি অবৈধভাবে বিক্রি করে দেন রিপন। নিজেকে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি দেখিয়ে ভুয়া কাগজপত্র তৈরির মাধ্যমে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার কাছে অল্পমূল্যে বিক্রি করে দেন তিনি। যা নিয়ে পরে মামলা করেন আরডিপির বর্তমান সভাপতি মাহবুবুর রহমান।
চব্বিশের আন্দোলনে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পতন হয় শেখ হাসিনার। একই সঙ্গে নিজের রূপ পরিবর্তন করতে থাকে রিপন। একযুগ আগে কক্সবাজারে হোমস্টোন একটি জমি বায়না রেজিস্ট্রেশন করে আরডিপির নামে। তখন থেকেই জমির দখলে আছে আরডিপি। সম্প্রতি সেই জমি দখলের উদ্দেশে মাঠে নেমেছেন রিপন।
কক্সবাজারের সাবেক এক এমপির নাম ব্যবহার করে কক্সবাজারে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে রিপন হোসেনের নামে।
জমির ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও সম্প্রতি একটি জমি অবৈধভাবে বিক্রির উদ্দেশে কক্সবাজারে সেল পারমিশনের অনুমতি চেয়েছেন সেই রিপন হোসেন। ঢাকার লালবাগের বাসিন্দা মো. আমানুল্লাহ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তির কাছে জমি বিক্রির জন্য আবেদন করেছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক বরাবর। ওই জমির ওপরে আদালতে আরডিপির করা একটি মামলায় নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে আটকা পড়ে যায় সেই আবেদন।
জমি ক্রয়-বিক্রয়ের আবেদনটির বিষয়টি জানতে চাইলে বিষয়টি অস্বীকার করে রিপন হোসেন বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না।
তবে রিপন হোসেনের কাছ থেকে জমি ক্রয়ে আগ্রহী আমানুল্লাহ চৌধুরী বলেন, রিপন হোসেনের সঙ্গে গিয়েই দলিলে স্বাক্ষর করে ডিসি অফিসে জমি ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
জনতার আওয়াজ/আ আ
