বৈষম্যবিরোধীদের সঙ্গে ধর্ষণ মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবীদের সংঘর্ষ, আহত ১১ - জনতার আওয়াজ
  • আজ ভোর ৫:৪৫, সোমবার, ২৪শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
  • jonotarawaz24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

বৈষম্যবিরোধীদের সঙ্গে ধর্ষণ মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবীদের সংঘর্ষ, আহত ১১

নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ: সোমবার, মার্চ ১০, ২০২৫ ১০:৫৬ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: সোমবার, মার্চ ১০, ২০২৫ ১০:৫৬ অপরাহ্ণ

 

জামালপুর প্রতিনিধি

জামালপুরে আইনজীবীদের উপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনায় ছাত্র ও আইনজীবীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের ১১ জন আহত হন।

সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে জামালপুর জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণে এই ঘটনা ঘটে।

এদিন দুপুরে জেলা জজ আদালতে একটি ধর্ষণ মামলায় আইনজীবীরা আসামি পক্ষে অংশ নিয়ে শুনানি করেন। মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে আসামিকে নির্দোষ প্রমাণ করতে ধর্ষণের ঘটনাটি মিথ্যা প্রমাণ করার চেষ্টা করেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা।

ধর্ষকের পক্ষে আইনজীবীরা শুনানিতে অংশ নেওয়ায় আদালত চত্বরে অবস্থান নেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জামালপুর জেলা শাখার নেতাকর্মীরা।

শুনানি শেষে ওই মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম তরফদারকে জেরা শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি ও জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আব্দুল আওয়াল ছাত্রদের সাথে কথা বলতে গেলে তারা আইনজীবীদের উপর চড়াও হয় এবং হামলা করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

এ সময় অ্যাডভোকেট খলিলুর রহমান (৮০), অ্যাডভোকেট আব্দুল আওয়াল (৫৫), অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক (৪৭), অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম তরফদার (৫৫), আইনজীবী সহকারী রুকনুজ্জামান (৪০), শিক্ষার্থী দয়াময়ী এলাকার জাহাঙ্গীরের ছেলে ইমন (২০) ও ঈশান (১৫), সদর উপজেলার ইটাইল এলাকার মোজাম্মেলের ছেলে মোয়াজ (১৯), হাসিল বটতলা এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে তারেক (২৩), পৌর শহরের মুসলিমাবাদ এলাকার শাহজাদার ছেলে শিশির (১৮), ইসলামপুর উপজেলার হৃদয় (২৩) আহত হয়।

আহতদের মধ্যে অ্যাডভোকেট খলিলুর রহমান জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে যান এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে মোয়াজ, হৃদয়, তারেককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তি মোয়াজ জুলাই বিপ্লবে পুলিশের গুলিতে পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছিল।

শিক্ষার্থী ও আইনজীবীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে শিক্ষার্থী ইমন ও ঈশান নামে সহোদর দুই ভাইকে আটক করে তালাবদ্ধ করে রাখেন আইনজীবীরা। পরে পুলিশ তাদের নিরাপদে আদালত থেকে বের করে নিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র মাহমুদুল হাসান বিবেক বলেন, এক প্রতিবন্ধীকে ধর্ষণের মামলায় আসামি পক্ষের আইনজীবীরা ধর্ষণের বিষয়টি মিথ্যা প্রমাণিত করতে জন্ম নিবন্ধন জালিয়াতি করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির নেতাকর্মীরা এর প্রতিবাদে আদালতে অবস্থান নেয়। আসামি পক্ষের আইনজীবীদের নির্দেশে কতিপয় আইনজীবী আমাদের উপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। আমাদের দাবি যে-সব আইনজীবী আমাদের উপর হামলা করেছে তাদের নিবন্ধন বাতিল করা হোক।

জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রিশাদ রেজওয়ান বাবু বলেন, আদালত চলাকালীন সময়ে কিছু দুষ্কৃতকারী লাঠিসোঁটা নিয়ে প্রবেশ করে আইনজীবীদের হুমকি দেয়। তারা এ সময় আইনজীবীদের উপর হামলা চালিয়ে চার জন আইনজীবীকে আহত করে। জেলা আইনজীবী সমিতির কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইয়াহিয়া আল মামুন বলেন, নিজের বিচার নিজেই করে ফেলার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আইনজীবীদের সাথে ছাত্রদের ঝামেলা হয়েছে, ঝামেলার বিস্তৃতি কতটুকু তা পর্যালোচনা করে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
 
 
জনতার আওয়াজ/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ