মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি শুরু, জনসমুদ্রে পরিণত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
শনিবার, এপ্রিল ১২, ২০২৫ ৪:০৭ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
শনিবার, এপ্রিল ১২, ২০২৫ ৪:০৭ অপরাহ্ণ

জনতার আওয়াজ ডেস্ক
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দীতে জনতার ঢল নেমেছে। জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে আশপাশের সব এলাকা।
শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে মূল কর্মসূচি শুরু হয়।
গাজায় চলমান ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনের নির্যাতিত জনগণের প্রতি বিশ্বব্যাপী সংহতি জোরদারের লক্ষ্যে এই ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বিকেল ৩টায় এই গণজমায়েত শুরুর কথা থাকলেও সকাল থেকেই আসতে শুরু করেছেন জনতা। কোনো মিছিল এসেছে বাংলা মোটরের দিক থেকে, কোনোটি এসেছে নীলক্ষেতের দিক থেকে, কোনোটি আবার এসেছে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট গেট থেকে।
এ সময় তারা ‘গাজাবাসীর রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘ইসরায়েলের পণ্য, বয়কট বয়কট’, ‘ফিলিস্তিনে আগ্রাসন, বন্ধ করো করতে হবে’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘তুমি কে আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’, ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’, ‘ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ’, ‘জিহাদ জিহাদ চাই, জিহাদ করে বাঁচতে চাই’সহ নানা স্লোগান দেন।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের আশপাশ এলাকায় কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসা জনতার ভিড় দেখা গেছে। কানায় কানায় পূর্ণ মসজিদ। রাজধানীর মুহাম্মাদপুর থেকে আসা মুফতি হাবীবুল্লাহ সিরাজ অবস্থান করছেন জাতীয় মসজিদে। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনের পক্ষে বাংলাদেশে এত বড় সমাবেশ এর আগে হয়নি। আশা করছি, বিশ্বেও এটি সবচেয়ে বড় জমায়েত হবে।’
রাজধানীর যাত্রাবাড়ি থেকে স্কুলবন্ধুদের সঙ্গে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে এসেছেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘গাজার মুসলিমদের ভাইদের জন্য কিছুই করতে পারছি না। তাদের জন্য মন কাঁদে। খবর দেখলে ভেতরটা কান্নায় ভরে ওঠে। তাদের প্রতি ভালোবাসার টানে এখানে এসেছি।’
নেত্রকোণা থেকে গতকাল রাতেই কর্মসূচিতে যোগ দিতে ঢাকায় এসেছেন মাওলানা আলাউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘গাজা আমার প্রাণের শহর। সেখানের মুসলিমরা অনেক বছর ধরে দখলদার ইসরায়েল বাহিনীর নির্যাতনের শিকার। গত দুই বছরে গাজার ৬০ হাজারের বেশি মানুষ শহিদ হয়েছে। আমার মুসলিমদের ভাইদের কথা মনে হলে কিছুই ভালো লাগে না। তাদের জন্য এখানে এসেছি। আল্লাহ তাদের হেফাজত করুন।’
সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ফরিদপুর জেলা থেকে দেড়শ জন এসেছি। আমাদের ফিলিস্তিনের ভাইরা গণহত্যার শিকার হচ্ছে, নিগৃহীত হচ্ছে। এ জেনোসাইড বন্ধ হোক। আমরা চাই, রাষ্ট্রীয়ভাবে যেন সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরায়েলের প্রতি ধিক্কার জানানো হয়।
নরসিংদী জেলা থেকে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে এসেছিলেন পেশায় শিক্ষক সাজ্জাদ মাহমুদ। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের মুসলিমদের প্রতি নৃশংস-অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে, গণহত্যা চালানো হচ্ছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে ফিলিস্তিনের ভাইদের প্রতি জানান দিতে চাই, আমরা তাদের পাশে আছি।
গাজায় চলমান বর্বরোচিত ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জনমত গঠন এবং মানবিক সহানুভূতি জাগ্রত করতেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ব্যতিক্রমধর্মী এই গণজমায়েত। বিকেল ৩টা থেকে মাগরিবের পূর্ব পর্যন্ত ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে এই মার্চ ফর গাজা কর্মসূচি। এই কর্মসূচির আয়োজন করেছে ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’।
গাজার নিরস্ত্র মানুষের প্রতি সংহতি জানাতে এ কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। এতে বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা একাত্মতা প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
জনতার আওয়াজ/আ আ
