সিলেটে সব মেডিক্যালে কমপ্লিট শাটডাউন : চিকিৎসা সেবা বন্ধ
নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
মঙ্গলবার, মার্চ ১১, ২০২৫ ১০:৩০ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
মঙ্গলবার, মার্চ ১১, ২০২৫ ১০:৩১ অপরাহ্ণ

জনতার আওয়াজ ডেস্ক
সিলেটের সব হাসপাতালে এ কর্মসূচি পালন করেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মেডিক্যাল কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এতে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। জরুরি সেবা ছাড়া হাসপাতালগুলোতে সবধরণের চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে।
এমবিবিএস ডিগ্রি ছাড়া চিকিৎসক পদবি ব্যবহার বন্ধসহ পাঁচ দফা দাবিতে সিলেট ওসমানী মেডিক্যালসহ সিলেটের সব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চলছে কমপ্লিট শাটডাউন।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকাল থেকে সিলেটের সব হাসপাতালে এ কর্মসূচি পালন করেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মেডিক্যাল কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এতে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। জরুরি সেবা ছাড়া হাসপাতালগুলোতে সবধরণের চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, নর্থ ইস্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ সব হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা কমপ্লিট শাটডাউন করে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন হচ্ছে একটা চলমান প্রক্রিয়া। আমরা চাই জনগণের সঠিক চিকিৎসা হোক। এটা তখনই সম্ভব হবে, যখন সঠিক ডাক্তাররা চিকিৎসা দেবেন। এখন যদি মেট্রিক পাস একজনকে ডাক্তার ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়, তাহলে রোগীরা কী চিকিৎসা পাবে আর আমরা কী করব এমবিবিএস ডিগ্রি নিয়ে। এ জন্য জরুরি সেবা ছাড়া সব সেবা বন্ধ আছে। আমরা বুধবারের রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করব। রায় যদি পক্ষে না আসে, তাহলে আমরা কঠোর কর্মসূচি পালন করব।’
এদিকে কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনেরা ভয়াবহ ভোগান্তিতে পড়েছেন। বিশেষ করে বহির্বিভাগে আসা রোগীরা বিপদে পড়েছেন।
ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সুনামগঞ্জে রবিউল বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছিল আজকে দেখানোর জন্য। কিন্তু সুনামগঞ্জ থেকে এসে দেখতে পাই সব বন্ধ। এখন কোথায় যাবো ভেবে পাচ্ছি না।’
রাগিব রাবেয়া মেডিক্যাল চিকিৎসা নিতে আসা হোসনে আরা বলেন, ‘সন্তানকে দেখানোর জন্য হাসপাতালে এসে দেখি কাউন্টারও বন্ধ। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম প্রাইভেট চেম্বারেও নাকি রোগী দেখা বন্ধ রয়েছে। এভাবে সব বন্ধ থাকলে আমরা সাধারণ জনগণ কোথায় যাবো।’
এর আগের দিন সোমবার সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সকাল ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করেন। এতে হাসপাতালে আসা সাধারণ রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার সিলেটের সব হাসপাতালে পুরো চিকিৎসা সেবা বন্ধ হওয়ায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ রোগীরা। বিশেষ করে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত রোগীরা পড়েছেন বিপাকে। সার্জারি বন্ধ থাকায় মঙ্গলবার পূর্ব নির্ধারিত কোনো অপারেশন করা হয়নি বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। জরুরি সেবা চালু থাকলেও চিকিৎসক ছিলেন তুলনামূলক কম।
ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বলেন, ‘ডাক্তার পদবি শুধুমাত্র এমবিবিএস এবং বিডিএস ডিগ্রিধারীদের জন্য সীমিত রাখতে হবে। দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী এমবিবিএস অথবা বিডিএস ছাড়া কেউ চিকিৎসক পরিচয় দিতে পারবে না। দ্রুত ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ এবং বিসিএসের চাকরিতে প্রবেশ বয়সসীমা ৩৪ বছর পর্যন্ত বাড়ানো। মানহীন বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলো বন্ধ করতে হবে। বিএমডিসি অ্যাক্ট-২০১০-কে চ্যালেঞ্জ করে যে রিট করা হয়েছে, যার রায় বুধবার হওয়ার কথা। রায় আমাদের দাবির বিরুদ্ধে গেলে কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
এ ব্যাপারে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা: সৌমিত্র চক্রবর্তী দৈনিক নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কমপ্লিট শাটডাউনকে ঘিরে হাসপাতালের আউটডোর সেবা বন্ধ রয়েছে। তবে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। জরুরি বিভাগে রোগী ভর্তি কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি থাকা আবাসিক রোগীদের চিকিৎসা সেবাও চলমান রয়েছে।’
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক ডা: আনিসুর রহমান দৈনিক নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘বিষয়টি শুধু সিলেট নয়, সারাদেশের ইস্যু। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবির ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবহিত আছেন বলে আমরা মনে করছি।’
জনতার আওয়াজ/আ আ
