বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মুসলমানকে জানাই আন্তরিক শুভেচছা… “ঈদ মুবারাক“ - জনতার আওয়াজ
  • আজ দুপুর ১২:৫৯, সোমবার, ১৩ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি
  • jonotarawaz24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মুসলমানকে জানাই আন্তরিক শুভেচছা… “ঈদ মুবারাক“

নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ: মঙ্গলবার, এপ্রিল ৯, ২০২৪ ৭:৪৭ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: বুধবার, এপ্রিল ১০, ২০২৪ ৪:০৩ পূর্বাহ্ণ

 

স্টাফ করেসপন্ডন্ট

প্রিয় দেশবাসী,
ব্যক্তি, পরিবার এবং সমাজ জীবনকে সুন্দর, পরিশুদ্ধ, সংযমী করে গড়ার শিক্ষা গ্রহণের মধ্য দিয়ে মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর এলো পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মুসলমানকে জানাই আন্তরিক শুভেচছা… “ঈদ মুবারাক“।

এ বছর, এমন এক সময়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হতে যাচ্ছে, যখন দেশে চলছে, নীরব দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি। এরপরও দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি অস্বীকার করে, মড়ার উপর খাঁড়ার খাড়ার ঘা‘য়ের মত, ডামি সরকারের নেতাকর্মীদের মিথ্যাচার আর বাচালতা অব্যাহত রয়েছে। অথচ দেশের বিভিন্ন শ্রেণী পেশা তথা প্রতিটি কৃষক শ্রমিক মজুর, স্বল্প আয়ের কিংবা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার এমনকি অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারেও চলছে তীব্র অথনৈতিক টানাপোড়েন। এমনকি ডামি সরকার নিয়ন্ত্রিত কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলতে বাধ্য হচ্ছে দেশের দেশের কোটি কোটি পরিবারকে প্রতিমাসে ঋণ করে সংসার চালাতে হচ্ছে। দেশের কোটি কোটি কৃষি পরিবার তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায়। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরো আরো অনেক বেশি। এমন পরিস্থিতিতে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রাক্কালে এ মুহূর্তে আমার মনে পড়ছে বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার দুটি লাইন… ‘জীবনে যাদের হররোজ রোজা ক্ষুধায় আসেনি নিদ মুমূর্ষ সেই কৃষকের ঘরে এসেছে কি আজ ঈদ?

প্রিয় দেশবাসী,
দেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে বিশেষ করে গত ১৫ বছর ধরেধীরে ধীরে মানুষ হারাতে শুরু করেছে ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অধিকার ও মূল্যবোধ। হলে কিংবা হোস্টেলে তারাবীর নামাজ আদায়, ইফতার মাহফিল, গরুর গোশত ভক্ষণ কিংবা রামাদান মাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা বা বন্ধ রাখা নিয়ে এবারের রামাদান মাসে দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে যে ধরনের চতুর বিধিনিষেধ মোকাবেলা করতে হয়েছে অতীতে আর কখনোই এতটা বিপর্যয়কর পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হয়নি। আমি মনে করি আত্মিক পরিশুদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি এবারের রামাদান মাস দেশের স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী জনগণের সামনে কিছু বিশেষ বার্তা রেখে গেছে। সেটি হলো স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী জনগণ ভবিষৎ সম্পর্কে এক্ষুনি আরো সচেতন এবং সতর্ক না হলে সেদিন হয়তো আর বেশি দূরে নয় যেদিন বাংলাদেশের জনগনকে হয়তো নিজ ভূমিতেই ফিলিস্তিনিদের ভাগ্য বরণ করতে হতে পারে।

প্রিয় দেশবাসী,
সম্প্রতি সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি চিন দু-তিনদিনের হামলায় কয়েকটি ব্যাংকে, বাজারে হামলা চালিয়েছে। অপহরণ করেছে। পুলিশ স্টেশনে হামলা চালিয়েছে। পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়েছে। অথচ উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, হামলার পর দেখা যায়, ‘ডামি সরকারের’ কাছে এদের সম্পর্কে কোনো তথ্যই ছিলোনা। ডামি সরকারের ডামি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছে, এই হামলার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের সন্ত্রাসীরা জড়িত। একই সময়ে ডামি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সেতু মন্ত্রী বলছে, এই হামলায় কোনো বিদেশী রাষ্ট্রের মদদ নেই। জনগণের কাছে ‘ডামি সরকারে’র মন্ত্রীদের কথাবার্তার তেমন গুরুত্ব নেই। কারণ, ‘ডামি সরকারের নাটাই তাদের হাতে নয়। তবে বান্দরবানে হামলার পর ‘কুকি চিন’ প্রসঙ্গে সেনা প্রধানের মন্তব্য জনগণের জন্য উদ্বেগের কারণ। ‘কুকি চিন’ প্রসঙ্গে সেনা প্রধান মন্তব্য করে বলেছেন, ‘আমরা তাদেরকে বিশ্বাস করেছিলাম’। সেনা প্রধানের এই মন্তব্যে প্রমাণিত হয়েছে, যেই সশস্ত্র গোষ্ঠীর দাবি দাওয়া এবং কার্যক্রম দেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে, তাদের সম্পর্কে , তাদের শক্তিমত্তা এবিং পরিকল্পনা সম্পর্কে সেনাবাহিনীর কাছে কিংবা অন্য কোনো বাহিনীর কাছে কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেই।

প্রিয় দেশবাসী,
এখানেই দেশ এবং জনগণের ভয় কিংবা আশংকা। কুকি-চিনের হামলার পর দেখা যায়, বক্তব্যে মন্তব্যে ডামি সরকারের মন্ত্রীরা বেসামাল। বেখবর আইনশৃঙ্খলাবাহিনী এমনকি সেনাবাহিনী। কেন এমন সন্বয়হীনতা ? এর কারণ,একজন মাত্র ব্যক্তির অবৈধ ক্ষমতালিপ্সা মেটাতে অবৈধ সুযোগ সুবিধা কিংবা পদ পদবীর লোভ দেখিয়ে দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। দেশের আইনবিভাগ, শাসনবিভাগ, বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী এমনকি সেনাবাহিনী দেশের প্রতিটি বিভাগে বেনজির কিংবা আজিজের মতোকিছু লোভী-লুটেরা- দুর্নীতিবাজদের নিয়ে একটি মাফিয়া চক্র গড়ে তোলা হয়েছে। নিজ নিজ বিভাগের দায়িত্ব ভুলে গিয়ে এই মাফিয়া চক্র এখন মিলেমিশে একাকার। প্রতি প্রতিষ্ঠানেই চিহ্নিত সুবিধাবাদী দুর্নীতিবাজদের কারণে চাইলেও কেউ যথাযথভাবে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হচ্ছেন কিংবা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে দেয়া হচ্ছেনা।

প্রিয় দেশবাসী,
ইচ্ছে করলে দেশের সেনাবাহিনী কিংবা অন্যবাহিনীগুলো কুকি চিন সম্পর্কে, গোয়েন্দা তথ্য জোগাড় করতে পারবেন না। মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে সেনাবাহিনীর ভূমিকা কিংবা কার্যক্রম সেটি প্রমান করেনা। ট্রাফিক কন্ট্রোল কিংবা ভোট কেন্দ্র পাহারা দেয়া নয় বরং সেনাবাহিনীর প্রধান কাজ রাষ্ট্রের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় চূড়ান্ত ভূমিকা রাখা। দেশের জনগণ সেনাবাহিনীকে আপন মর্যাদায় দেখতে চায়। অবশ্যই বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সেই সক্ষমতা রয়েছে। বর্তমানে যেখানে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের উপর হামলা চলছে, এমন সংকটময় মুহূর্তে দেশের সীমান্ত জুড়ে সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিকল্প নেই। অরক্ষিত সীমান্তে সেনাবাহিনী নাকি যৌথবাহিনী? এভাবে তালগোল পাকানোর পেছনে সেনাবাহিনীকে মূল দায়িত্ব থেকে সরিয়ে রাখার অপকৌশল বলেই স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণ বিশ্বাস করে।

প্রিয় দেশবাসী,
পবিত্র ঈদুল ফিতরের এই মহামিলনের প্রাক্কালে আমি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে স্বাধীনতাপ্রিয় প্রতিটি বাংলাদেশী নাগরিককে সতর্ক করে দিয়ে বলতে চাই, পরাধীনতার কালো মেঘ ছেঁয়ে ফেলেছে বাংলাদেশের আকাশ। কেন বাংলাদেশের সীমান্ত অরক্ষিত? বিএসএফ কেন প্রায় নিয়মিত সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিকদেরকে পাখির মতো গুলি করছে হত্যা করছে? বাংলাদেশের ডামি সরকার কেন সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করছেনা? কেন প্রতিদিন বাংলাদেশ ভুখন্ডে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেড়েই চলছে? কেন একজন রোহিঙ্গা নাগরিককেও তাদের নিজেদের জন্মভূমি মিয়ানমারে ফেরত ব্যর্থ ‘ডামি সরকার’ । অথচ গৃহযুদ্ধ কবলিত মিয়ানমারে যুদ্ধরত জান্তা সেনারা কিভাবে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে যখন তখন ঢুকছে আবার যথারীতি মিয়ানমার ফেরত যাচ্ছে? তবে কি বাংলাদেশ কারো যুদ্ধ করিডোর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে? সম্মান এবং মর্যাদা নিয়ে স্বাধীন দেশে স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাইলে আবারো ৭১ সালের মতো ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ছিল দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য আর এবারের মুক্তিযুদ্ধ দেশ এবং জনগণের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য। কারণ, ক্ষমতালোভী ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের হাতে দেশ এবং জনগণ নিরাপদ নয়। নিরাপদ নয় দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব।

প্রিয় দেশবাসী,
গত ১৫ বছরে বিএনপি এবং গণতন্ত্রের পক্ষের ভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং মতের অসংখ্য -অগণিত নেতা কর্মী সমর্থক এবং তাদের পরিবার হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকারের নির্যাতন নিপীড়ণের শিকার হয়েছেন। দেশের কারাগারগুলোতে হাজার হাজার নেতাকর্মী বছরের পর বছর ধরে কারাবন্দি রয়েছেন। মাফিয়া চক্রের হামলা মামলার শিকার হয়ে আরো অনেকেই এই পবিত্র ঈদেও পরিবার পরিজন থেকে দূরে থাকতে বাধ্য হয়েছেন। আমি তাদের প্রত্যেকের প্রতি, তাদের পরিবারের সকল সদস্য ও স্বজনদের প্রতি জানাই পবিত্র ঈদুল ফিতরের বিশেষ শুভেছা। আমরা যাতে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে, আগামী ঈদ সবাই মিলে, নির্ভয়ে নিরাপদে উদযাপন করতে পারি, আসুন আল্লাহর কাছে সেই প্রার্থনা করি। আবারো সবাইকে জানাই ঈদ মুবারক।

Print Friendly, PDF & Email
 
 
জনতার আওয়াজ/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com