রামেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, দুর্ভোগ চরমে - জনতার আওয়াজ
  • আজ রাত ২:১১, শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • jonotarawaz24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

রামেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, দুর্ভোগ চরমে

নিজস্ব প্রতিবেদক, জনতার আওয়াজ ডটকম
প্রকাশের তারিখ: বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ২০, ২০২২ ১:১৮ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ২০, ২০২২ ১:১৮ অপরাহ্ণ

 

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষার্থীদের হামলার ঘটনায় দোষীদের বিচারের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন রামেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এর ফলে চিকিৎসা সেবার ব্যাঘাত ঘটানোয় দুর্ভোগে পড়েছেন সেবা নিতে আসা রোগীরা।

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবি, চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে রাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগে রাবি শিক্ষার্থীরা হাসপাতালের ভেতর ভাঙচুর ও চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতাল স্টাফদের ওপর হামলা করেছে। এর প্রতিবাদের তারা কর্মবিরতি পালন করছেন। দোষীদের গ্রেফতার না করলে তারা চিকিৎসা সেবা দেবেন না বলে জানান।

বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সকাল থেকে হাসপাতালের কোনো ওয়ার্ডে চিকিৎসা সেবা দেননি ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডের রোগী। ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা।

গোদাগাড়ি থেকে চিকিৎসা নিতে সকালে রামেক হাসপাতালের সামনে এসেছেন শফিকুল ইসলাম নামে এক রোগী। কিন্তু এসে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে বিপাকে পড়েন তিনি।

শফিকুল জানান, সাতসকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার পর দেখি ডাক্তাররা রোগী দেখছেন না। সারা দিনই যদি এভাবে চলে তাহলে কীভাবে ডাক্তার দেখাবেন সেই চিন্তা করছেন তিনি।

হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর স্বজন নাস্তা কেনার জন্য বাইরে এসেছেন। রেজওয়ান নামে ওই ব্যক্তি বলেন, সকাল থেকে এখন পর্যন্ত কোন চিকিৎসক তার বাবাকে দেখতে আসেনি। আজকে কিছু ওষুধ নতুন করে শুরু করার কথা ছিল। চিকিৎসক যদি না আসে তাহলে কীভাবে নতুন ওষুধ খাওয়াবো সেই চিন্তায় আছি।

রোগীদের এমন দুর্ভোগের চিত্র দেখা গেছে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে। পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় বিভিন্ন বহির্বিভাগেও সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

বুধবার রাত ৮টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে পড়ে এমজিএম শাহরিয়ার নামের এক শিক্ষার্থী আহত হন। অন্য শিক্ষার্থীরা উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

শাহরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি দিনাজপুরের বিরল উপজেলায়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ৪০ মিনিট বিলম্বে এসে গুরুতর আহত রাবি শিক্ষার্থীকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রামেক হাসপাতালের ওয়ার্ড ও পরিচালকের কক্ষের সামনের অংশে ভাঙচুর করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসকরাও শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়।

রাবি শিক্ষার্থীদের হামলার প্রতিবাদে কর্মবিরতির ঘোষণার বিষয়টি জানিয়ে রামেক ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ইমরান হোসেন বলেন, ওই শিক্ষার্থী মারা গেলে রাবি শিক্ষার্থীরা আমাদের ওপর হামলা করে এবং হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনায় চিকিৎসকরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। এ অবস্থায় দায়িত্বপালন সম্ভব নয়। হামলার বিচার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত আমরা কাজে যোগ দেব না।

ইমরান হোসেন আরও বলেন, আমাদের চিকিৎসকরা সাধ্যমতো চিকিৎসা দিচ্ছিলেন। আইসিইউতে নেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু তার আগেই রোগীর মৃত্যু হয়। রোগীর অবস্থা খারাপ ছিল।

এদিকে মারা যাওয়া রাবি শিক্ষার্থীর প্রথম জানাজা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে এই জানাজা হয়। জানাজার পর পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। মরদেহ এখন গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হবে। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
 
 
জনতার আওয়াজ/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ